রাবিতে নর্দমায় ছুড়ে কুরআন অবমাননা করলো ছাত্রলীগ নেতা

0
205
Print Friendly, PDF & Email

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নর্দমায় ছুড়ে ফেলে কুরআন শরীফের অবমাননা করেছে শ্রী সূর্য কুমার নামে ছাত্রলীগের এক নেতা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হলের দোতলার ২৩১ নম্বর কক্ষ থেকে নিচের নর্দমায় ফেলে দেয়া হয় ওই কুরআন শরীফ। অভিযুক্ত শ্রী সূর্য কুমার রাবি ছাত্রলীগের উপ-ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। ওই ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক রয়েছে। তাকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

 

এদিকে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন অবমাননার ঘটনায় অভিযুক্ত ওই হিন্দু ছাত্রলীগ নেতার শাস্তির দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে চাইলে তাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছে।

 

হলের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সৈয়দ আমীর হলে তল্লাশী শুরু করে পুলিশ। পুলিশের তল্লাশীর খবরে ছাত্রলীগ নেতা শ্রী সূর্য কুমার তার ২৩১ নম্বর কক্ষে থাকা একটি কুরআন শরীফ নিচের নর্দমায় ফেলে দেয়ার জন্য উদ্যাত হন। এসময় তার পাশের রুমমেটরা তাকে কুরআন ফেলে দিতে নিষেধ করে ও বাধা দেয়। কিন্তু ওই বাধা উপেক্ষা করেই শ্রী সূর্য দোতলার জানালা দিয়ে পবিত্র ওই কুরআন শরীফটি নিচের নর্দমায় ফেলে দেয়। তিন আসন বিশিষ্ট ২৩১ নম্বর কক্ষের তিনজনই হিন্দু ধর্মালম্বী। তার পাশের কক্ষের প্রতাপ কুমার ওই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।

 

ঘটনার পর বিষয়টি জানতে পেরে হলের গার্ড ও কয়েকজন শিক্ষার্থী নিচের আবর্জনা থেকে ওই কুরআন শরীফটি উদ্ধার করে। রাতের মধ্যে ওই ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে এতে চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে তারা।

 

গতকাল বুধবার দুপুরে কুরআন অবমাননার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে ও অভিযুক্ত হিন্দু ওই ছাত্রলীগ নেতার শাস্তির দাবিতে ওই হলসহ অন্যসব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা হল মসজিদের একত্রিত হয় এবং মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের একত্রিত হতে বলে। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, হল প্রাধ্যক্ষ, ছাত্রলীগের সভাপতিসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদকারীদের বাধা দেয় এবং আন্দোলন না করে লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। পরে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে প্রশাসনকে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। 

 

এদিকে কুরআন ছুড়ে ফেলার পর শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে মঙ্গলবার ওই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত শ্রী সূর্য় কুমার আত্মগোপন করেছে বলে জানা গেছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে পুলিশ তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান, মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সানাউল হক। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ  ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের সভাপতি আহম্মেদ আলী  বলেন, সে ছাত্রলীগের কেউ না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে কেউ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। সে যেই হোক প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ছাত্রলীগ তাতে সহায়তা করবে বলে তিনি জানান। সৈয়দ আমীর আলী হল প্রাধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমান খান দৈনিক আমার দেশ কে জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি। ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষার্থীর কক্ষ বন্ধ এবং তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

 

 আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর চৌধুরী মো. জাকারিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রলীগ আর যেই হোক ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

 

 

নিউজরুম

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন