নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতায় আসারও আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ আহ্বান জানান। রাজধানীর মিরপুরে ইউনূস সেন্টারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রধান কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে এই যৌথ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সহ-সভাপতি নাসরিন সিদ্দিকী এবং ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলামসহ কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইউনূস বলেন, রাজনৈতিক কারণে দেশে অশান্তির কালো মেঘ ঘনিয়ে আসছে। কারো ইচ্ছার কারণে এ অশান্তি ঘনিয়ে এলে দেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। দেশের মানুষ অশান্তি চায় না।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। এ কারণে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানান তিনি।
সংবিধান অনুযায়ী, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে, যা নিয়ে বিরোধীদলের আপত্তি। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমাঝোতায় আনার উদ্যোগ নেবেন কিনা_ এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সমাঝোতার কোন রাস্তা আমরা হাতে নেই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইউনূস বলেন, আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসুক তাদের ওয়াদা করতে হবে যে ক্ষমতায় আসার পর তারা লুটপাট, দুর্নীতি, গুম বা হত্যা করবে না। ভোটাররা তাদেরকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে যারা কথায় কথায় ধমক দেবে না।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, বৈঠকে আমরা একমত হয়েছি, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আগামী সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কর্তৃত্ব ছাড়া হতে পারে না এবং তা কেউ মানবে না। তিনি বলেন, যে রেফারিকে কেউ বিশ্বাস করে না, তিনি জোর করে রেফারি হবেন। নিজেই খেলায় অংশ নেবেন। এমন জবরদস্তি হিটলারও করেছিল কিনা, আমার সন্দেহ হয়।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, যার কাছে গ্রামীণ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান নিরাপদ নয়, তার কাছে দেশ নিরাপদ থাকতে পারে না। এ রকম অপরিণামদর্শীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত রাখা প্রয়োজন।
কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি জানান, তার দল কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূসের পাশে থাকবে এবং গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষতি হতে দেবে না। গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংসে সরকার যে পাঁয়তারা করছে, তা রুখে দিতে তারা বদ্ধপরিকর।