তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনীহার কারণে আবারও পিছিয়ে গেল। ১৮ জুন ঢাকায় যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তা আবারও পিছিয়ে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সেচমন্ত্রী রাজিব ব্যানার্জি পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকবেন- এ অজুহাতে বৈঠক স্থগিত হয়। কার্যত এর মাধ্যমে আবারও তিস্তার পানিচুক্তি একটা আশঙ্কাজনক অবস্থায় পড়ে গেল। এর আগে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে এ চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। এভাবে কয়েক দশক জিইয়ে রাখা এ চুক্তিটি আলোর মুখ দেখছে না। ১৯৭২ সালে যৌথ নদী কমিশন গঠন হওয়ার পর ১৯৮৩ সালের ২০ জুলাই অ্যাডহক ভিত্তিতে তিস্তার পানি বণ্টন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এই অ্যাডহক চুক্তি অনুযায়ী পরের পাঁচ বছর তিস্তার পানি বণ্টন হলেও সেটি স্থায়ী চুক্তির আওতায় আনা হয়নি। তিস্তা নদীর অবস্থা এখন মৃতপ্রায়। নিয়মিত স্রোত না থাকায় নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বর্ষায় নদীতে পানি থাকলেও শীত আসার সময় থেকে নদী শুকিয়ে যায়। ফলে কৃষিকাজের জন্য যে পানির প্রয়োজন তার জন্য সংকটে পড়তে হয় তিস্তাপারের মানুষকে। বৃহত্তর রংপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এ চুক্তিটি সম্পন্ন হলে তিস্তায় পানিপ্রবাহের সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়নকেও ত্বরান্বিত করবে।
লুৎফর রহমান
ইতিহাস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।