রুপসীবাংলা ডেস্ক; আমাদের প্রতিবেদকদের পাঠানো খবরে জানা গেছে, দেশজুড়ে সংঘর্ষ সংঘাতে রূপ নিয়েছে।
গুলি–টিয়ারসেল, ককটেল বিস্পোরণ আর ইটপাটকেল নিক্ষেপে সারাদেশ যেন এক রণক্ষেত্র। দেশের বিভিন্নস্থানে গণজাগরণ মঞ্চে আগুন দেয়া হয়েছে। জুমার নামাযের পরপরইসলামপন্থী দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে সারা দেশের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মিছিল বেরকরলে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে দেশের অনেক জায়গায় পুলিশ মিছিলকারীদের কোন বাধাদেয়নি।পুলিশ-ইসলামপন্থী দলের সংঘর্ষে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনজন নিহত হয়েছেন। সিলেট, গাইবান্ধা এবং ঝিনাইদহে পুলিশের গুলিতে তিন জন নিহতহয়েছেন।সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশসহ আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক। কয়েকশ’ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফেনীতেবিক্ষোকারীরা শহীদ মিনার ভাঙচুর করেছে। সিলেটে শহীদ মিনার ভাংচুরের চেষ্টাকরা হয়েছে। এছাড়াও ট্রাস্ট ব্যাঙ্কে আগুন দিয়েছে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকরা। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ও এটিএন বাংলায় হামলা চালিয়েছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।
এদিকে, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা, হামলা এবং হত্যার প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে ইসলামপন্থী দলগুলো। সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচিওঘোষণা করা হয়েছে।
আজ রাজধানীতে সংঘর্ষ হয়েছে পল্টন, মৎস্যভবন, কাটাবন, মিরপুর ও আনন্দবাজার এলাকায়। ইসলামপন্থী দলগুলোর কর্মীরা বায়তুলমোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে জুমার নামায শেষে মিছিল বের করে শাহবাগের দিকেযেতে চাইলে সংষর্ষের সূত্রপাত হয়।
এসময় পুলিশ গুলি বর্ষণ করে।বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল, ককটেল বিস্পোরণ করে জবাব দেয়। কাটাবন মসজিদেরসামনেও পুলিশ গুলি করে। কাওরান বাজার থেকেও ইসলামপন্থী দলের কর্মীরা একটিমিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগুনোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। ফাঁকাগুলিবর্ষণ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীছাড়াও দেশের বিভিন্নস্থান থেকে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। চট্টগ্রামেরআন্দরকিল্লা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে মুসল্লীদের সংঘর্ষ হয়েছে। পরে হাজারহাজার মুসল্লীর উপস্থিতিতে সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশ এবং বিক্ষোভে পুলিশ কোনবাধা দেয়নি। রাজশাহীতে ইসলামী দলগুলোর সমর্থকরা গণজাগরণ মঞ্চে ভাঙচুরচালিয়েছেন। সরকার সমর্থকরাও ইসলামী ব্যাংকে হামলা চালিয়েছেন।খুলনা, সিলেট, ফেনী এবং বগুড়ায় গণজাগরণ মঞ্চে হামলা হয়েছে।
সাভারেবিক্ষুদ্ধ মুসল্লিরা সড়ক অবরোধ করেছেন। আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলাম নিয়েকটূক্তিকারী ব্লগারদের শাস্তি এবং ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রেরপ্রতিবাদে বিভিন্ন ইসলামপন্থী দলের আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ঘিরে সকালথেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বায়তুল মোকাররম এলাকাসহ বিভিন্ন মসজিদকে ঘিরেমোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।ইসলামপন্থী দলগুলো যেন মিছিল বের করতে না পারে এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। একে শাহবাগেরগণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে দেয়া কর্মসূচি হিসেবে বিবেচনা করছে সরকার। তবেসর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা আহমদ শফি ও অন্যান্য ইসলামী দলের ডাকা আজকেরবিক্ষোভ কর্মসূচিকে ঘিরে সরকারের ভেতরে-বাইরে একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
শুক্রবারবাদ জুমা দেশের বিভিন্ন স্থানে সমমনা ইসলামি দলগুলোর নেতৃত্বাধীনআন্দোলনকারীরা পুলিশ ও সাংবাদিকদের সাথে সংঘর্ষের পাশাপাশি গণ জাগরণ মঞ্চেহামলা ও ভাঙচুর করেছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সারা দেশে সংঘর্ষ চলছে। আহত হয়েছে প্রায় সহস্রাধিক।
২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩