প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, মনোনয়ন নিয়ে ছোটখাটো দু-একটি প্রতিক্রিয়া, এটা কি নতুন কিছু? এটা নতুন নয়। বরং যাদের দেয়া হয়েছে, তারা অত্যন্ত জনপ্রিয়, তাদের এলাকায় আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে এলাকায় তাদের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত নিবিড়। যে ধানের শীষের প্রতীক পেয়েছেন, তার সাথে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন, থাকবেন। গতকাল শনিবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। : রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না। আসন্ন নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেয়ার জন্যই তাঁকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসাররা আইনবহির্ভূতভাবে, অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। এটা সরকারের ষড়যন্ত্রেরই অংশ। তিনটি আসনে তাঁর পক্ষে আপিল করা হয়েছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চললে দেশনেত্রী প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। নির্বাচন কমিশনকে বলব, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি ন্যায়বিচার করুন। ইসি সংবিধান ও আইন অনুসরণ করলে এবং বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে বিশ্বাসযোগ্য সিদ্ধান্ত নিলে খালেদা জিয়া অবশ্যই প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন হলে তা হবে একটি বিশাল প্রহসন। : তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম নিয়মিত নির্বাচন কমিশনে যান এবং সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এমনকি তিনি নির্বাচন কমিশনে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। কয়েকদিন আগে একজন সাংবাদিক এইচটি ইমামের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যে, ঢাকার আদাবরে আওয়ামী লীগের দুজন মারা গেল, হেলমেট পরে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করল, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হলো না, আর বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশি হামলার ঘটনায় মামলা হলো এবং গ্রেফতার করা হলো বিএনপি নেতাকর্মীদের? এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি ক্ষেপে যান এবং সাংবাদিককে বলেন, আপনি কী বিএনপি করেন? মওদুদ আহমদের ওপর ককটেল হামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, আপনি কি মওদুদ? ইসিতে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির সদস্যরা নিয়মিত যাতায়াত করেন। তারা যতবার নির্বাচন কমিশনে গিয়েছেন ততবার সেখানে কর্তব্যরত সাংবাদিকদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্ন পছন্দ না হলে তাদের রাজনৈতিক দলের কর্মী বলে ট্যাগ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সাংবাদিকদের লিস্ট করে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। রবিবার রাতে এইচটি ইমামের বাসায় ইসি বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের ডাকা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো- চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে রবিবার রাত ৮টায়, ১ নম্বর হেয়ার রোডস্থ বাসভবনে, এ জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এ বার্তা পাঠিয়েছেন। মতবিনিমরের নামে মূলত গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়েছেন এইচটি ইমাম। এমনিতে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে নির্বাচন কমিশন কঠোর বিধিমালা জারি করেছে। তাতেও আশ^স্ত না হতে পেরে এখন গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সারাদেশে গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলার হিড়িকে নেতাকর্মীদের জীবন বিপন্ন ও বিপর্যস্ত। কোনো মামলা ছাড়াই অনেককে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। তাদের এলাকাছাড়া করা হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। গুম-খুন-অপহরণ করা হচ্ছে। এর দায় নিতে হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে। কেননা জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে। দেশবাসী জানেন, সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ বা সমান্তরাল মাঠ তৈরি করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে উপেক্ষা করে সরকারের সহায়তাকারী আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিরোধী দলকে মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার হীন চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। সিইসি সরকারের নীল-নকশা বাস্তবায়নের অন্যতম প্রধান। গণতন্ত্রবিনাশী সরকার পরিকল্পিতভাবে ক্রসফায়ার, গুম, খুন এবং গ্রেফতার, মিথ্যা মামলার দ্বারা নির্যাতনের দমননীতি অবলম্বন করেছে, তাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে। দেশবাসী এখন গভীর শঙ্কা এবং উৎকন্ঠায়। প্রতিদিন দেশের নাগরিকদের ঘর থেকে বের হওয়ার সময় তারা জানে না যে, আদৌ ঘরে ফিরে আসতে পারবে কি না। তারা স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছে। গত ২৪ নভেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্বাচনি আচরণ বিধিমালা সংক্রান্ত ব্রিফিং শেষে কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে গ্রেফতার করছে না। আমাদের কথা পুলিশ মান্য করে। আমাদের কথার বাইরে গিয়ে বিনা কারণে কাউকে গ্রেফতার করে না। আইনমতো যেভাবে আমাদের যাওয়া দরকার, আমরা সেভাবেই যাচ্ছি। : তিনি আরো বলেন, সিইসি কে এম নুরুল হুদা সাহেবের কথাই প্রমাণ করে যে, তফসিল ঘোষণার পরে এখন যে গুম, খুন, গ্রেফতার, মামলা, রিমান্ড চলছে সবই কি তাহলে তার নির্দেশেই হচ্ছে? আমি ইসি’র প্রতি আহবান জানাবÑ সুষ্ঠু নির্বাচনি পরিবেশ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ পুলিশ ও জনপ্রশাসনের সকল অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করুন। ক্রসফায়ার, গুম, খুন, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা, দমন, নির্যাতন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন। ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে একতরফা নির্বাচনের জন্য পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশও দিনকে দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) অফিসকে গুমের নতুন ঘাঁটি বানানো হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবু বকরের লাশ বুড়িগঙ্গা থেকে উদ্ধারের পর তার সহকর্মী বিএনপি নেতা কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাইফুর রহমানকে ঢাকায় ডেকে এনে মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে ঢুকিয়ে গুম করা হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তাকে প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না। সাইফুর রহমানের পরিবার ও সহকর্মীদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন ফোন করলে তিনি ঢাকায় আসেন। গত ২৭ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে তিনি মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে ঢোকেন। এরপর তার আর খোঁজ মিলছে না। এর আগে দলের মনোনয়নপত্র তুলতে ঢাকায় এলে অপহরণ করা হয় একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবু বকরকে (৬৫)। ১৯ নভেম্বর বুড়িগঙ্গায় তার লাশ পাওয়া যায়। সে সময় সাইফুর মেম্বার আবু বকরের সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন। : রিজভী বলেন, সাইফুরের পরিবার ও সহকর্মীরা জানান, সাইফুরকে ডিবির কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন বারবার ফোন করে ঢাকায় আসতে চাপ দিলে তিনি তা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রহমানসহ অন্য মেম্বারদের জানান। চেয়ারম্যান আরেক মেম্বার আবদুল লতিফ গাজীকে সঙ্গে দিয়ে তাকে ঢাকায় পাঠান। আবদুল লতিফ গাজী জানিয়েছেন, ২৭ নভেম্বর ঢাকায় নেমে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা ডিবি কার্যালয়ে যান। সাইফুর এরই মধ্যে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথাও বলেন। তাদের ১২টার দিকে ডিবির ফটকে থাকতে বলা হয়। সেই অনুযায়ী, তারা ডিবি অফিসের মূল ফটক-সংলগ্ন চালাঘরে অপেক্ষা করেন। কিছুক্ষণ পরে ভেতর থেকে একজন লোক এসে সাইফুরকে ডেকে নিয়ে যান। লতিফ গাজী বলেন, তিনিসহ আরও দুই ব্যক্তি সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। পরে তাদের রাস্তার অপর পাড়ে গিয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়। তিনি বলেন, ‘এরপর জোহর গেল, আছর গেল; সাইফুর আর আসে না। আমি গেটে যাই খোঁজ নিতে। আমারে কয়, ভেতরের খবর তারা জানে না। সন্ধ্যার পরে আমি চলে আসি। এরপর আর কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি।’ : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে গত ২৬ নভেম্বর অনলাইন এক্টিভিস্ট রবিউল আউয়াল সোহাগকে কুমিল্লা থেকে তুলে নেয়ায় পর এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাচ্ছে না তার পরিবার। অবিলম্বে তাকে প্রকাশ্যে হাজির করার দাবি জানাচ্ছি। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলতে চাইÑ আপনারা এই দেশ এবং এই সমাজেরই মানুষ, কেন আপনারা সরকারের স্বার্থে মনুষ্যত্বহীন কাজে নিজেদের জড়ান? আপনারা সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল, মত, বিশ^াসের মানুষের ওপর সহিংস নিষ্ঠুরতা কিভাবে অবলীলায় চালাতে পারেন? এরাও এই দেশেরই মানুষ। আপনারা কী নিশ্চিত যে, আওয়ামী লীগ চিরদিনের জন্য ক্ষমতায় থাকবে? আপনারা কিসের লোভে গণতন্ত্র, নাগরিক স্বাধীনতা, মানুষের জীবন ও নিরাপত্তাকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিতে কুন্ঠিত হচ্ছেন না? আপনাদের আহবান জানাই, অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থে আপনারা মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেবেন না। নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সহায়তা করুন। নিজ দেশের নাগরিকদের গুম-খুনে নিজেদের হাতকে রঞ্জিত করবেন না। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা, আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। : সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা বলেন, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি ও পুলিশ কমিশনার ভোট জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেটিরই প্রতিফলন নগরবাসী লক্ষ করেছে। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে খুলনা মহানগরে ৩৫০ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে এসে ৯৬ কেন্দ্রে দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের দিয়ে অভিনব কায়দায় ভোট জালিয়াতির দৃশ্য নগরবাসীর কাছে পরিলক্ষিত হয়েছে। এই কর্মকর্তারা ভোটের দিন তাদের বুকের ব্যাজ খুলে বিভিন্ন কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢোকায়। ভোটের আগের দিন গভীর রাতে তারা ৩৫ শতাংশ সিল মেরে ব্যালট পেপার বাক্সে ঢুকিয়ে ফেলে। সিস্টেমেটিক সন্ত্রাসী কায়দায় ব্যালট বাক্স ভর্তি করার বাকি দৃশ্য সকাল থেকে ভোটাররা অবলোকন করতে থাকে, যা আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক একজন সেনা কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে খুলনায় আসেন। তিনি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আনঅফিসিয়াল এক বৈঠকে মিলিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তাটি পৌঁছে দেন। সে সময় খুলনায় মানুষের মুখে মুখে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে যে, কে এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। এরকম ঘটনা এবারও পুুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা সিটি নির্বাচনের সময় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করত বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা এবং র্যাব। গত চারদিন ধরে খুলনার ৬ থানার ওসি গভীর রাতে অফিসের মতো একটি বাসায় ঢুকে এবং ভোরের দিকে বেরিয়ে যায়Ñ ঘটনাটি জনমনে রহস্য ও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। : গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি করে রিজভী বলেন, হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস আর তালুকদার শাহিনুরকে হাইকোর্টের জামিনে থাকা সত্ত্বেও ডিবি পুলিশ গতকাল সন্ধ্যায় তাকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাহাব উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফেনী জেলা : দাগনভুঞা থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন টিংকুকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। থানায় খোঁজ নিতে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করে। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করা হলেও কোথাও তার হদিস মেলেনি। এ নিয়ে তার পরিবার ভীষণ উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তাকে গ্রেফতার করেছে। আমি অবিলম্বে জামাল উদ্দিন টিংকুকে জনসমক্ষে হাজির করে সুস্থাবস্থায় তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। গাইবান্ধা জেলা : গোবিন্দগঞ্জ পৌর ছাত্রদল আহ্বায়ক আব্দুল মতিন, ইউনিয়ন যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন এবং স্বেচ্ছাসেবক দল সম্পাদক মো. রাসেদ গায়েবি মামলায় দীর্ঘদিন জেলবন্দি থেকে গতকাল জামিনে মুক্ত হলে ডিবি পুলিশ পুনরায় জেলগেট থেকে তাদের আটক করেছে। যশোর জেলা : অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপি সহ-সভাপতি শাহ মো. জুবায়ের হোসেন, যশোর জেলা বিএনপির নেতা মশিউর রহমান মশি, সাবেক কাউন্সিলর শেখ আসাদুল্লাহ আসাদ, বিএনপি নেতা সেলিম রেজা, এফ এম গিয়াস উদ্দিন, যুবদল নেতা লিপু মোগল, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলম মোল্লা, মারুফ হোসেন, আনিসুর রহমান, আকরাম, হায়দার সরদার, আইউব আলী, হবিবরসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বগুড়া জেলা : বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান হারেছ, শেরপুর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবলু ও সাবেক পৌর মেয়র স্বাধীন কুমার কুন্ডুসহ প্রত্যেক বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির ও তদন্ত অফিসার বুলবুল দুজনের নেতৃত্বে রাতে তল্লাশির নামে হামলা দিচ্ছে ও বাড়ির আববাব ভাঙচুর করছে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। : সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়–য়া, নজমুল হক নান্নু, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।দিনকাল রিপোর্ট