দু’বছরেও চলনবিল অঞ্চলের কাংখিত সিংড়া-বারুহাস সড়কের নির্মান কাজ শেষ হয়নি

0
208
Print Friendly, PDF & Email

পিপলু রহমান ,নাটোর (৫জানুয়ারী) :  দু’বছরেও চলনবিলের মানুষদের কাংখিত ও মহাজোট সরকারের প্রতিশ্র“ত নাটোরের সিংড়া-বারুহাস সড়কের নির্মান কাজ শেষ হয়নি। ফলে বিশাল চলনবিল এলাকার মানুষদের দুর্ভোগ এখন নিত্যসঙ্গি। চলনবিল অঞ্চলের মানুষদের শংকা এই সরকারের মেয়াদে তাদের কাংখিত সিংড়া-বারুহাস সড়ক নির্মান কাজ শেষ হচ্ছেনা। সড়কটি নির্মানেও স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে । তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে সড়কটি জনগনের জন্য উন্মুক্ত করার দাবী করেছে।

গত নির্বাচনের সময় চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া থেকে চলনবিলের মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বারুসহাস পর্যন্ত সড়ক নিমার্নের প্রতিশ্র“তি দেয় মহাজোট । সরকার গঠনের পর সড়কটি নির্মানের জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করলে ২০১০ সালে নির্মান কাজ শুরু হয়। কিন্তু গত দু’বছরেও নির্মান কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ। স্থানীয়দের আশংকা এসরকারের মেয়াদে সড়কটির নির্মান কাজ শেষ হবেনা। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্নমানের উপকরন ব্যবহার সহ সড়কের ধার থেকে মাটি কাটার কারনে সড়কটি ঝুঁকিপুর্ন থেকে যাচ্ছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম, এই সড়কের কাজ শুরু হওয়ার  পর এলাকার মানুষের মধ্যে আশা সঞ্চার করে। কিন্তু কাজ শুরুর পর কাজে নিন্মমানের উপকরন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ব্রীজগুলির মধ্যে কয়েকটি ব্রীজ নিচু।

এতে বর্ষা মৌসুমে নৌ চলাচল ব্যাহত হবে। কাজের গতি এতই শ্লথ যে এই সরকারের মেয়াদে শেষ হবেনা বলে আশংকা করা হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানায়,এই সড়কের নির্মান কাজ শুরু হওয়ায় যাতায়াতে  তাদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কে ব্রীজ নির্মান কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে নৌপথ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। ফলে তাদের অনেক পথ হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তারা দুভোর্গের শিকার হলেও  তাদের প্রানের দাবী সিংড়া বারুহাস-তাড়াশ সড়ক নির্মান হতে দেখে আশায় বুধ বেধে ছিলেন।

স্থানীয় সাংবাদিক রাজু আহমেদ ও শহবাড়ি  গ্রামের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার শহিদুল ইসলাম জানান,স্বাধীনতার পর থেকে চলনবিলের মানুষের প্রানের দাবী সিংড়া বারুহাস-তাড়াশ সড়ক। চলনবিলের মানুষদের এই দাবীর বাস্তবায়ন হয়নি ৪০ বছরেও। সিংড়া আসনের আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলকের তদবির ও চেষ্টায় সড়কের কাজ শুরু হলেও কাজের শ্লথ গতিতে আশংকা করা হচ্ছে তাদের মেয়াদে কাজ শেষ হচ্ছেনা। সড়কটির নিমার্ন কাজ ধীর গতিতে হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষদের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা মান সম্পন্ন সহ সড়কটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবী জানান।

নাটোর এলজিইডি বিভাগ সুত্রে জানাযায়,২০১০ সালে চলনবিলের মধ্যে দিয়ে সিংড়া-বারুহাস-তাড়াশ সড়কের সিংড়া অঞ্চলের ১৪ কিলোমিটার কাজ শুরু হয়। এজন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। এই সড়কের মধ্যে ৮ কিলোমিটার সাবমারসিবল এবং অবশিষ্ট উঁচু সড়ক। এই সড়কে ৯ টি ব্রীজ ও ৪ টি কার্লভাট নির্মান করা হচ্ছে।

আওয়ামীলীগ দলীয় স্থানীয় সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, চলনবিল বাসীর অপুর্ন স্বপ্ন ছিল সিংড়া-বারুহাস-তাড়াশ সড়ক। ৩৭ বছর পর সিংড়ার মানুষ আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসেবে তাকে বিজয়ী করে।  তার রাজনৈতিক প্রতিশ্র“তি ছিল সিংড়া-বারুহাস সড়ক নির্মান করা। একারনে তার প্রথম ডিও লেটারও ছিল এই সড়ক নিমার্নে।২০১০ সালে নির্মান কাজ শুরু হয়।  বিলে অধিকাংশ সময় পানি থাকার কারনে বছরের ৪ থেকে ৫ মাস উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়। সেকারনে কাজে কিছুটা সমস্যা ছিল। তবে এলজিইডির তত্বাবধান , স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর তৎপরতা এবং তাগিদের কারনে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মুল কাজগুলি শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে সড়কটি জনগনের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সেই সাথে সিংড়াবাসীর ৪০ বছরের স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে।

নাটোর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ হোসেন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান,১৪ কিলোমিটার দৈঘ্য সিংড়া-বারুহাস সড়কের ৮ কিলোমিটার সব মারসিবল। বিলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ায় সড়কটির নিমার্ন কাজে নানা সমস্যা দেখা দিলেও আগামী বছরের ৩১ মের মধ্যে জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তিনি নির্মান কাজে নিম্নমানের উপকরন ব্যাবহার সহ অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। কঠিনতরভাবে মান নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে।

দপ্তরের নিজস্ব ল্যাবরে‌টরি থেকে উপকরনের মান নিয়ন্ত্রনের পর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এছাড়া প্রকল্প পরিচালক সহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী নিবিরভাবে কাজের তদারকি করছেন।

সম্পাদনা, আনোয়ার হোসেন আলীরাজ, হেড অব নিউজ

শেয়ার করুন