সারাদিন আনন্দ আর হৈ হুল্লোড়ে মেতে থাকা বিয়ে বাড়িতে এখন লাশের অপেক্ষায় প্রহর গুণছে মানোয়ার হোসেনের পরিবার।
শনিবার দুপুরে ভাতিজার বিয়ের বৌভাতের নিমন্ত্রণ খাওয়ার জন্যে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার অট্টিগ্রাম ইউনিয়নের নারকলি সরকারপাড়া আসার সময় ধামরাইয়ের বারবারিয়ায় বাসচাপায় নিহত হন মনোয়ার হোসেন মানু ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম (২৬), মেয়ে তোয়া আক্তার (৩) ও ছেলে মিসকাত হোসেন (২)।
এ দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রাইভেটকারের চালক ফারুক হোসেন (৪৫), মানোয়ারের বড় ভাইয়ের স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম(৪০) ও তার নাতনি সামিয়া (৫)।
এতে গুরুতর আহত হয়ে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে মানোয়ার হোসেনের বড় ভাই মনির হোসেন (৫০) ও এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনির হোসেনের মেয়ে অঙ্কিতা চিকিৎসাধীন।
মানোয়ার হোসেনের গ্রামের বাড়িতে লাশগুলো শেষ বারের মতো দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুণছে ওই গ্রামের শতশত নারী-পুরুষ।
ব্যবসা-বাণিজ্যেকে কেন্দ্র করে সাভারের হেমায়েতপুরে বাড়ি করে সেখানেই থাকতেন মানোয়ার হোসেন। বড় ভাইযের বিদেশ ফেরত ছেলে আস্তাক হোসেনের বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হেমায়েতপুর থেকে মানিকগঞ্জের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে প্রাইভেটকারে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভাতিজার বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগেই ধামরাইয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন সপরিবারে।
নারকলি গ্রামের মানোয়ারের প্রতিবেশি মহিদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ছয় জন ও প্রাইভেটকারের চালক নিহতের ঘটনায় পুরো গ্রাম শোকের মাতম চলছে। গ্রামের স্থানীয় গোরস্থানে মানোয়ার হোসেনের পরিবারের চারজনকে দাফন করা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি তিন জনের লাশ হেমায়েতপুরে পাঠানো হবে।
প্রাইভেটকারের চালক ফারুক হোসেনের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার শেরপুরে। তবে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হেমায়েতপুরে থাকেন। রাত ১০টার দিকে লাশগুলো গ্রামের বাড়িতে আসতে পারে বলেও জানান তিনি।
তবে, এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ৮টা) বাস চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান গোলড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক।