ফেসবুক প্রেমের অনন্য এক কীর্তিতে সব কিছু ভেঙে চুরমার । দেশের সীমানা, বয়স , দূরত্ব, সামাজিক অবস্থান সব কিছু মুছে ফেলে প্রেমের নতুন সংজ্ঞা লিখলেন ৪১ বছর বয়সী মার্কিন নারী আদ্রিয়ানা পেরাল। এতে হার মানল সিনেমার সব চিত্রনাট্য।
জানা যায়, ফেসবুকে পরিচয়, তারপর প্রেমে পরিণত হওয়া সম্পর্কের খাতিরে আমেরিকার শহুরে অভিজাত জীবন ছেড়ে এক সন্তানের মা পেরাল নতুন সংসার পাততে চলে আসেন ভারতের হরিয়ানার এক ছোট্ট গ্রামে। কয়েক মাস আগেও নাইটক্লাব, পার্টিতে ডুবে থাকা পেরাল এখন হরিয়ানার গ্রামে চাষাবাদ, গরু পালনে ব্যস্ত। ব্যাপারটা এ রকম, ৪১ বছরের আদ্রিয়ানা পেরালের জীবনটা কাটছিল আর বাকি পাঁচজন হাইপ্রোফাইল গৃহিণী মার্কিন মহিলার মতই। অফিসে রিসেপসনিস্টের কাজ, তারপর সন্ধ্যায় জিম, রাতে নাইটক্লাবে দেদারচে নাচ। খাও দাও ফূর্তি কর। এভাবেই দিন কাটত পেরালের।
অফিসে ফেসবুকের সামনে মাঝে মাঝে বসার সুযোগ পেতেন। তখনই পরিচয় হয় হরিয়ানার ২৫ বছরের মুকেশ কুমারের সঙ্গে। মুকেশের সঙ্গে চ্যাট করতে বেশ ভাল লাগত পেরালের। মুকেশের সঙ্গে মিশেই জীবনের মানে খুঁজে পেতে শুরু করেন পেরাল। মুকেশের কথা পেরাল জানান তার মেয়ে ও বন্ধু বান্ধবদের।
পেরালের আত্মীয়-বন্ধুরা বলেন, ‘ফেসবুকে অনেক ভুয়া অ্যাকাউন্ট থাকে। ওই নামের আসলে কেউ নেই, তোমায় কেউ ঠকাচ্ছে।’ জেদ চেপে বসে পেরালের। মুকেশের কাছ থেকে ঠিকানা চেয়ে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্লেনে দিল্লি। দিল্লি এয়ারপোর্টে তখন পেরালের জন্য অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে মুকেশ। যা দেখে চোখে জল চলে এল পেরালের।
ব্যাপারটা পুরো ফিল্মি স্টাইলের হলে ঘটনা একদম সত্যি। পেরালের মেয়েরও দারুণ পছন্দ হয়ে যায় মায়ের প্রেমিক মুকেশকে। এরপর আর কী সাত পাকে বাধা। নতুন সংসার শুরু। শুরু নতুন জীবন। ক্যালিফোর্নিয়ার সেই পাঁচতারা জীবন ছেড়ে হরিয়ানায় একতারা জীবনে পাড়ি।
এখন নিজে হাতে রুটি তৈরি করেন, ক্ষেতে লাঙল দেন, মুকেশকে চাষের কাজে সাহায্য করেন। শ্বাশুরির কাছে রামায়ণ-মহাভারতের গল্পও শোনেন।
দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নেন কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন সন্তান আনবেন পৃথিবীতে। তারপর পরিবার নিয়ে উড়ে যাবেন আমেরিকায়।