দুদক কমিশনারকে টিআইবির চ্যালেঞ্জ

0
176
Print Friendly, PDF & Email

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, টিআইবি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন কমিশনার যেভাবে বলেছেন তাতে আমরা বিব্রত, হতবাক হয়েছি। তিনি যে ভাষা ও অঙ্গভঙ্গি দেখিয়েছেন, তাতে তিনি নিজেকেই বিব্রত করেছেন। ড. ইফতেখার বলেন, আমাদের কোনো মুখোশ নেই। আমাদের একটিই চেহারা, একটিই পরিচয়-আমরা টিআইবি। তিনি দুদক কমিশনারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, সময় হলে কেন? আজই মুখোশ উন্মোচন করুন। তদন্ত ও মামলা করুন। আমরাও সাহায্য করব। তবে যদি সমালোচনার কারণে, হয়রানির উদ্দেশ্যে করা হয় তাহলে বলব আরেকবার ভেবে দেখুন।

বৃস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে টিআইবির ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল:বাস্তবায়নের অগ্রগতি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী পরিচালক এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার একটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বিদেশ থেকে টাকা এনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি অপপ্রচার চালাচ্ছে। সময় আসলে টিআইবির মুখোশ উন্মোচন করবে দুদক।’

কমিশনারের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, দুদকের মতো সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের একজন কমিশনারের মুখে এ ধরনের বক্তব্য মানায় না। এটা সচরাচর রাজনৈতিক অঙ্গনের বক্তব্যের মতো। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে এ ধরনের বক্তব্য দেয়া উচিত নয়। দুদক প্রতিষ্ঠার পেছনে টিআইবি’র বিরাট ভূমিকা আছে দাবি করে তিনি বলেন, দুদক প্রতিষ্ঠার দাবি আমরাই করেছিলাম। এর মূল খসড়া আইনও আমরা করে দিয়েছিলাম। আমরা চাই প্রতিষ্ঠানটি আরও কার্যকর ও স্বাধীনভাবে কাজ করুক।

তিনি আরো বলেন, বিদেশি অর্থে এসি কক্ষে আমরা গবেষণা করি এ কথা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু সরকারের সম্মতি ছাড়া টিআইবি একটি পয়সা গ্রহণ করে না, খরচও করে না। আয়-ব্যয় নিয়ে সরকারের কাছে আমরা জবাবদিহি করি। বিদেশি অর্থায়নে যদি কমিশনারের এতো অনীহা তাহলে তিনি কেন বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত সরকারি প্রকল্পগুলো বন্ধ করতে বলছেন না। তিনি বলেন, টিআইবির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মামলা করুন আমরা সহায়তা করবো। তবে এটা হয়রানির জন্য হলে টিআইবি’র মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সমালোচনা করার অধিকারের বরখেলাপ হবে। টিআইবির মৌলিক অধিকার হরণের ক্ষমতা দুদককে কেউ দেয়নি।

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নে ১০ দফা সুপারিশ

এদিকে ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল:বাস্তবায়নের অগ্রগতি’ শীর্ষক গবেষণায় সরকার প্রণীত কৌশলের ঘাটতিসমূহ দূর করে এর সফল বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে ১০ রাষ্ট্রীয় ও ছয়টি অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জাতীয় শুদ্ধাচার বাস্তবায়ন ইউনিটের উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি ও গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সরকারের শুদ্ধাচার কৌশলপত্রের সবল ও দুর্বল দিকগুলো তুলে ধরে চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এই কৌশলপত্র বাস্তবায়নে ১০ দফা সুপারিশ করেছে টিআইবি। এসময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও প্রতিরক্ষা বাহিনীকে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের আওতায় আনার আহবান জানান হয়।

সাংবাদিক সম্মেলনে প্রতিবেদনের সারাংশ উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সাধন কুমার দাস ও শাম্মী লায়লা ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান এবং উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের।

শেয়ার করুন