রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিএনপির বিরুদ্ধে সরকার সাইবার যুদ্ধ শুরু করেছে : রিজভী

0
205
Print Friendly, PDF & Email

বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন অবৈধ সরকার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় অর্থে বিএনপির বিরুদ্ধে কুৎসিত সাইবার যুদ্ধ শুরু করেছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে বাধাদান এবং বিএনপি ও দেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তাদের ভয়ংকর প্রোপাগান্ডায় সয়লাব। একই সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে রিজভী আহমেদ বলেছেন, আপনারা পালিয়ে যাবেন কীভাবে কাদের সাহেব? জনগণতো আপনাদের পালিয়ে যেতে দেবে না। আপনাদের দুঃশাসনের বিচার দেশের মাটিতে হবেই। গতকাল শনিবার সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। : রিজভী বলেন, বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন অবৈধ সরকার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় অর্থে বিএনপির বিরুদ্ধে কুৎসিত সাইবার যুদ্ধ শুরু করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে বাধাদান এবং বিএনপি ও দেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তাদের ভয়ংকর প্রোপাগান্ডায় সয়লাব। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদি ছড়িয়ে দিচ্ছে বিদ্বেষমূলক নানা সুপার ইমপোজ করা ছবি, টেম্পারড নকল অডিও-ভিডিও। মূলত এইসব নির্জলা মিথ্যাচার, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অশ্লীল রুচিহীন প্রোপাগান্ডা চালিয়ে তাদের দশ বছরের গুম-খুন- অত্যাচার-নিপীড়ন-জেল-জুলুম-সর্বগ্রাসী লুটপাট ও দুঃশাসন থেকে সরকার ভোটারদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ এই ধরনের গর্হিত অপকর্মে অর্ধ শতাধিক অনলাইন পোর্টাল, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক গ্রুপ ব্যবহার করছে। বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। নামে-বেনামে ভুয়া আইডির ফেসবুকে প্রতিদিন হাজার হাজার ডলার ব্যয় করে প্রমোশন দিয়ে বুস্ট করছে। আওয়ামী লীগের এইসব প্রোপাগান্ডা অনলাইন পোর্টাল, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক গ্রুপের মধ্যে রয়েছে- বাংলা ইনসাইডার, বাংলা নিউজ পোস্ট, আমাদের রাজনীতি, চিরায়ত বাংলাদেশ, নিউজ ফর অল, ছবির মত দেশ, বাংলাদেশি ভাইরাল ভিডিও, চেয়ারম্যান সাব, গেরিলা ৭১, শোন হে বাঙালী, সাইবার ফোর্স ৭১, রক্ত ঋণ একাত্তর, বঙ্গবন্ধু সাইবার ফোর্স, বঙ্গবন্ধু জিজিটাল ব্রিগেড, আওয়ামী সাইবার ব্রিগেড, আম জনতা, ভোরের পাতা, গুজবে কান দিবেন না, মোহাম্মদ এ আরাফাত প্রভৃতি। প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আপনজনদের নামেও সাইবার ওয়েবসাইট খুলে অবান্তর, কাল্পনিক, উদ্ভট অপপ্রচার চালাতে হিসেববিহীন অর্থ ব্যয় করছে আওয়ামী লীগ। : তিনি বলেন, বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রোপাগান্ডার কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান হলো আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডি অফিসে স্থাপিত-‘সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন-সিআরআই’। যার চেয়ারম্যান এবং হেড অব স্ট্রাটেজি অ্যান্ড প্রোগ্রামার ট্রাস্টি প্রধানমন্ত্রীর আপনজনরা। ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু সেনা পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা বিসিএস অফিসার্স কল্যাণ সমিতি’র এক যৌথ আলোচনা সভয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম তাদের নেতাকর্মীদেরকে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে সাইবার যুদ্ধে নামার পরামর্শ দেন। : তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংঘাতিক লড়াই হবে। আগামী লড়াইয়ে শুধু প্রতিহত করা নয়, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ধ্বংস করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ‘নামে-বেনামে’ ভুয়া আইডি খুলুন। আপনাদের নাতি-নাতনিদের নামে-বেনামে একটার জায়গায় ১০টা কেন, প্রয়োজনে একশটা ফেসবুক আইডি খুলতে বলুন। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেশুমার ফেক আইডি খুলে বিএনপি, দেশের জনগণের প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ মিথ্যাচার চালাচ্ছে। তারও কয়েক মাস আগে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমন্ডলীর সঙ্গে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর কমিটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বৈঠকে মাঠ দখল বিষয়ে অনলাইনে প্রচারণার নানা কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। ঐ বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনলাইনে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারণার সমন্বয়ের দায়িত্ব দেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুরকে। : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শুধু জনপ্রিয় দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও নোংরা-অশ্রাব্য কুৎসা অপপ্রচারের জন্য কথিত সাংবাদিক সৈয়দ বোরহান কবির চটি টাইপের অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলা ইনসাইডার’ ও ভিডিও চ্যানেল ‘বাংলা নিউজ পোস্ট’ চালাচ্ছে। তার সাথে রয়েছে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাত নামের জনৈক আওয়ামীপন্থী কথিত বুুদ্ধিজীবী। আছে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমানের কয়েকজন চিহ্নিত নেতা। তারা প্রতিদিন মনগড়া আজগুবি সব নিউজ-ভিডিও রচনা করছে। তথ্য সন্ত্রাস চালাচ্ছে, যেটা পুরোটাই ঈর্ষা-প্রতিহিংসায় ভরা। মিথ্যার বেসাতি। ধানমন্ডিতে আলিশান ভবনে বোরহান কবির ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের নামে প্রতিষ্ঠান খুলে সেখানে বসে এই প্রোপাগান্ডা তৈরি করে সামাজিক গণমাধ্যমগুলোকে দূষিত করছে। ‘বাংলা নিউজ পোস্টে’ টেকনোলজি ব্যবহার করে বানানো মিথ্যা কুরুচিপূর্ণ ভিডিওগুলো প্রতিদিন বিজ্ঞাপন আকারে ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়াচ্ছে। এই আওয়ামী গোষ্ঠীর প্রতিহিংসা ও অপপ্রচার আর তথ্য সন্ত্রাসের নির্মম টার্গেট করা হয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। জাতীয়তাবাদী শক্তির অবিসংবাদিত কান্ডারী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং এ মুহূর্তে জনগণের পক্ষে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর তারেক রহমানের প্রশ্নাতীত গ্রহণযোগ্যতা ওদের প্রসুপ্তি কেড়ে নিয়েছে। হিংসুকরা জানে রাজনৈতিক পরিমন্ডলে এ প্রজন্মের সবচেয়ে মননশীল, অসামান্য প্রজ্ঞা, কর্মনিষ্ঠ আর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন নেতার নাম তারেক রহমান। তারেক রহমানকে নিয়ে সংঘবদ্ধ এবং বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্রের জাল বিছানো হয়েছে সবখানে। তার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছে তথ্যসন্ত্রাসকে। ভূতুড়ে অশরীরি আত্মারা যেমন দিনের আলো সহ্য করতে পারে না, রাতের ঘুটঘুটে আঁধারেই তাদের বিচরণ, তেমনই তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বিচক্ষণতায় ঠিকরে পড়া ব্যক্তিত্বের মহিমা সহ্য করতে না পেরে অপপ্রচার-প্রপাগান্ডাকে বেছে নিয়েছে তারা। দেশপ্রেমিক মানুষের প্রিয় ঠিকানা বিএনপিকে দৃঢ় গণতান্ত্রিক ভিত্তিমূলে দাঁড় করানোর প্রত্যয়ে রাজনীতির মাঠে আবির্ভাবের পর থেকেই তাকে নিয়ে শুরু হয় কুচক্রিদের নীলনকশা। তবে ২০০১-এর নির্বাচনে বনানীতে চেয়ারপারসনের অফিস হাওয়া ভবনে বসে সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনা, সুদক্ষ নির্বাচনি প্রচারণায় তথ্য প্রযুক্তির প্রথম প্রয়োগে বিশাল সাফল্য ও বিজয়ের পর আওয়ামী কাশিমবাজার কুঠির চক্রান্তকারীদের গায়ে আগুন ধরে যায়। বনানী অফিস আর তার বিরুদ্ধে আষাঢ়ে গল্পের অপপ্রচারের তুফান শুরু হয়। ষড়যন্ত্রের ডালপালা পল্লবিত হতে থাকে। সেই নীলনকশার ষোলকলা পূর্ণতা পায় ১/১১’র ষড়যন্ত্রকারীদের মাধ্যমে। তথ্য সন্ত্রাস ও মামলা দিয়েই ক্ষান্ত না হয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা তার প্রাণনাশ করতে কোনো রকম অভিযোগ ছাড়াই ২০০৭ সালের ৭ মার্চ জরুরি বিধিমালায় গ্রেফতার করে। বর্বরতম নির্যাতনের সঙ্গে নজিরবিহীন এক মিডিয়া-বিদ্বেষের শিকারে পরিণত করা হয় তাকে। দলকানা-দলদাস উচ্ছিষ্টভোগী এক শ্রেণির সাংবাদিক ও তথাকথিত মুষ্টিমেয় সুশীল ব্যক্তিরা যারা আওয়ামী লীগারদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার বানানো প্রতিবেদন ও প্রদত্ত তথ্য কিছু গণমাধ্যমের দ্বারা সেগুলো প্রকাশ ও প্রচার করা হচ্ছে। দুর্নীতির কত না গল্প আর ভুয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির খবর ছেপেছে আওয়ামী সেইসব মিডিয়াগুলো। সেসব লাল শিরোনাম গণতন্ত্রকেই ভ্রƒকুটি করেছে। সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল ওই অপপ্রচার। সেইসব বানানো সংবাদকে ভিত্তি করে হিড়িক পড়ে যায় গয়রহ মিথ্যা মামলায় জড়ানোর। এখনও সেই নোংরা মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে নানা ডাইমেনশনে। এখন অনলাইনে আওয়ামী সমর্থক এবং পেইড অ্যাক্টিভিস্টরা কোনো প্রমাণ তথ্য ছাড়াই জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে ভয়ংকর হাইপার প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। তথ্য সন্ত্রাসীদের তত্ত্বগুরু হিটলারের মন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলস। সে তত্ত্ব প্রচার করেছিল- ‘ওভ ুড়ঁ ঃবষষ ধ ষরব নরম বহড়ঁময ধহফ শববঢ় ৎবঢ়বধঃরহম রঃ, ঢ়বড়ঢ়ষব রিষষ বাবহঃঁধষষু পড়সব ঃড় নবষরবাব রঃ..’ আওয়ামী লীগ এই প্রোপাগান্ডা তত্ত্বের সর্বাধিক প্রয়োগ করে চলেছে তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের ওপর। বেঘোরে থাকা এই অপরিণামদর্শী অর্বাচীনরা উপলব্ধি করে না যে, আজ থেকে আশি বছর আগে প্রচারিত গোয়েবলসের তত্ত্ব এই তথ্যপ্রযুক্তির ধাবমান কালে গ্লোবাল ভিলেজে অচল। মিথ্যার পুনরাবৃত্তিতে সত্যে পরিণত করার ধাপ্পাবাজির কৌশল এখন অকেজো-সেকেলে। সবাই এখন সচেতন। হাতে হাতে এখন মাল্টিমিডিয়া সেল ফোন। দুনিয়ার মুহূর্তের খবর ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে প্রতিটি মানুষের কাছে। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢাকা অসম্ভব। তা হিতে বিপরীত হয়। : সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দি করে রাখার কারণে ক্ষুব্ধ জনগণের রোষ প্রতিহত করতেই এই মিথ্যা প্রচারণা। গণতন্ত্রকে হত্যা করে গণতন্ত্রের বন্ধ দুয়ারের চাবি পুলিশের হাতে দেয়া হয়েছে, সুতরাং পুলিশি অনাচার ও অপকর্ম ঢাকতেই এ মিথ্যা প্রচারণা। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের ১০ বছরের দুঃশাসন, নিজেদের অপকর্ম, লাখ লাখ কোটি টাকা লুট, শেয়ার বাজার লুট, বাংলাদেশ ব্যাংক লুট, বেসিক ব্যাংক লুট, সোনালী, রুপালি, অগ্রণী, জনতা, কৃষি ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক লুট, সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করার খবর যাতে চাপা থাকে, সেজন্যই এ মিথ্যা প্রোপাগান্ডা। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, খুনের খবর ঢাকতেই এ মিথ্যা প্রচার, মানুষের সকল অধিকার হরণ করে উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটের খবর চাপা দিতেই এ মিথ্যা প্রচারণা, প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের জোরে পদত্যাগ করতে ও দেশ ছাড়তে বাধ্য করে বিচার বিভাগকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে সেটির যথেচ্ছ ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া, বিচার বিভাগ থেকে ন্যায় বিচারকে কবরস্ত করে দেয়ার এবং প্রশাসনকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করার খবর ঢাকতেই সংঘবদ্ধ চক্রকে দিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে। তাই সরকারকে বলবো- এই অপপ্রচার থেকে বিরত থাকুন এবং শালীন ও ইতিবাচক রাজনীতি করুন। সত্য দিয়ে সত্যকে মোকাবিলা করুন। আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে এই প্রোপাগান্ডার জবাব দেবে ভোটাররা। গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- আওয়াম লীগ পরাজিত হলেও তারা দেশে থাকবে পালিয়ে যাবে না। আপনারা পালিয়ে যাবেন কীভাবে কাদের সাহেব, জনগণতো আপনাদের পালিয়ে যেতে দেবে না। আপনাদের দুঃশাসনের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবেই। : সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী কারান্তরীণ থাকা সত্ত্বেও তার নামে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি মিথ্যা মামলা দায়েরের এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার তপন কুমার বিশ^াস এবং পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হলেও কমিশন রহস্যজনকভাবে নির্বিকার থাকছে। আমি রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে নিয়োজিত জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ^াস এবং পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়কে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি। বাগেরহাট জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সদস্য বদরুল আলম লিমন, সজীব, মিন্টু, মনির হোসেন, আব্দুস সাত্তার, যাত্রাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ এবং ২০ দলীয় জোটের কর্মী যথাক্রমে সদর উপজেলা গোটাপাড়া ইউনিয়নের বনি আমিন, যাত্রাপুর ইউনিয়নের ডাঃ আব্দুল লতিফ, ডেমা ইউনিয়নের অধ্যাপক রেজাউল করিম, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের আব্দুল আলীম, ফকিরহাট উপজেলা বেতাগা ইউনিয়নের ইব্রাহিম ও রামপাল উপজেলা গৌরম্বা ইউনিয়নের আবু মুসাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সারা জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ ও আওয়ামী যুবলীগ-ছাত্রলীগের গুন্ডারা যৌথভাবে হামলা চালাচ্ছে, পুলিশ নেতাকর্মীদেরকে লাগাতার গ্রেফতার ও জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। : বিএনপির এই নেতা জানান, সূত্রাপুর থানা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং ৪৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফয়েজ আহমেদকে গত পরশু আদালত চলাকালে পুলিশের একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ টেনে হিঁচড়ে সূত্রাপুর থানায় নিয়ে গিয়ে নির্দয়ভাবে মারধর করে। পরে গায়েবি মামলা দিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠায়। রমনা থানা ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল মোতালেব রুবেল মিথ্যা মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন, তিনি বারবার জামিনে মুক্তিলাভের পরও তাকে নতুন নতুন গায়েবি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। শ্যামপুর থানা ৫৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাজল মৃধা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্তমানে ঢাকা শহরের প্রতিটি মহল্লায় সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরতে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছে। রমনা থানা যুবদলের সভাপতি শামীমকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। মাগুরা জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। ঢাকা মহানগর উত্তরের শাহ আলী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির রওশন, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান কিংকন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম, শেরেবাংলা নগর থানা বিএনপি নেতা লিটনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া শিল্পাঞ্চল থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন বিপ্লব ও ২৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাসেল হোসেনের বাসায় পুলিশ তল্লাশির নামে ব্যাপক তান্ডব চালায় এবং পরিবারের লোকজনের সাথে দুর্ব্যবহার করে। মানিকগঞ্জ জেলায় নানা রঙ- বেরঙের মামলার পর এখন মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির বানোয়াট মামলা দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মানিকগঞ্জ জেলা যুবদল, ছাত্রদলের ১৬ জনের অধিক নেতাকর্মীকে ঐ ধরনের মামলায় আসামি করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা মামলা দেয়া হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে। বগুড়া জেলার সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আমিন সরকার সিফাতকে গ্রেফতার করে প্রচন্ড মারধর করেছে পুলিশ। মুন্সীগঞ্জ জেলায় গতকাল পঞ্চসার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের গুন্ডারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে বিএনপির ১৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হুমকি, তল্লাশির নামে তান্ডব অব্যাহত আছে। কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলাধীন গোবিন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা খুরশিদ আলম এবং নরপাটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মঈনকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বেদম প্রহার করে গুরুতর আহত করেছে। সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের বর্তমান এমপির উপস্থিতিতে আওয়ামী ক্যাডাররা গতকাল বিকেলে বিএনপি নেতা শাহীন কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানা ছাত্রদল নেতা রফিক এবং জাভেদকে গতকাল গ্রেফতার করে আড়াইহাজার থানা পুলিশ। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আড়াইহাজার ছাত্রদল নেতা অরবিন্দকে বেদম পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। সে এখন স্থানীয় থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। আমি ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের এই বর্বরোচিত ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। আহত অরবিন্দের আশু সুস্থতা কামনা করছি। : রিজভী বলেন, আমি বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাদের অসত্য ও হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। : সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, নাজমুল হক নান্নু, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন মেজবাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটু প্রমুখ।দিনকাল রিপোর্ট :

শেয়ার করুন