মনোনয়নবঞ্চিত ৫ নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দিলেন শেখ হাসিনা

0
187
Print Friendly, PDF & Email

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়নবঞ্চিত পাঁচ হেভিওয়েট নেতাকে নির্বাচন পরিচালনা কার্যক্রম মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতারা হলেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন ও বিএম মোজাম্মেল হক। একই সঙ্গে এই পাঁচ নেতাসহ মনোনয়ন বঞ্চিতদের ভবিষ্যতে মূল্যায়ন করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আগামী নির্বাচনে এবার ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ৪ হাজার ২৩ জন। গত ৯-১২ নভেম্বর মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র বিতরণ ও জমাদান কার্যক্রম চালানো হয়। গত ১৪ নভেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। পরে আরো তিন দফা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মতামত গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। গত রবিবার থেকে মনোনীতদের কাছে চিঠি প্রদান শুরু হয়। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অর্ধ শতাধিক আসনে মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিক্ষোভ করছেন। কোন কোন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইসিতে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন। এদিকে কোন প্রার্থী অযোগ্য হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে মাঠ যাতে ফাঁকা না হয়ে যায় সেজন্য ১৮টি আসনে দুই জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যায়নপত্র নিয়ে এই ১৮ আসনে ৩৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাই শেষে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগে ৩০০ আসনে মহাজোটের একক প্রার্থী ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ। সেই সময় একক প্রার্থী বাদে বাকিরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকে ঋণ খেলাপিসহ নানা কারণে নির্বাচনে অযোগ্য হতে পারেন। এ কারণে ১৭/১৮টি আসনে দুই জন করে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগেই একজনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হবে। হেভিওয়েটদের মনোনয়নবঞ্চিত হওয়া প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের শীর্ষনেতাদের নির্বাচনের বাইরে রাখার বিষয়টি ক্লিয়ার হওয়া উচিত।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের যারা মাঠে আছেন, প্রার্থিতা জমা দিয়েছেন, প্রত্যাহারের আগেই যাদের মনোনয়ন দেবো; তারা ছাড়া অন্যদের প্রত্যাহার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা তাদের বোঝাবো, কনভিন্স করার চেষ্টা করবো। তারা অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করবেন। এরপর প্রত্যাহার পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। কেউ বিদ্রোহ করলে বহিষ্কার হবে, এটা আমরা আগেও বলেছি।’

ঢাকা-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ড. আওলাদ হোসেন। তিনি ইত্তেফাককে বলেন, আমি বিদ্রোহী প্রার্থী নই। এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি কাউকে এ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। মহাজোটের প্রার্থীও ঘোষণা হয়নি। তবে এ আসনে দল-জোট থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এবং তিনি যদি ইসির যাচাই-বাছাইয়ে বৈধ হয়ে যান তাহলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিবেন আওলাদ হোসেন। মহাজোট মনোনিত প্রার্থী কোন কারণে অযোগ্য হলে মাঠ যাতে ফাঁকা না হয় সেজন্য তিনি আপাতত স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকছেন।

জানা গেছে, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুর রহমান পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন সংগ্রহ জমা দিয়েছেন। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এমদাদুল হক নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া অর্ধ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বিভিন্ন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন