প্রধান নির্বাচন কমিশনার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ

0
172
Print Friendly, PDF & Email

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা নিরপেভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ মন্তব্য করে তার রিপ্লেস বা বদলির দাবি জানিয়েছেন গণফোরামের সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন। তা না হলে আইনি পদপে নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। গতকাল রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসকাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর। এ সময় আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া, সাবেক জেনারেল (অব) আমছা আমিন, একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম। : ড. কামাল হোসেন বলেন, সম্প্রতি তিনি (সিইসি) বলেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার নির্দেশেই কাজ করছে। তাহলে নিশ্চয়ই তার নির্দেশেই নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমি জানতে চাই এমনটা তিনি কেন করছেন? তিনি বলেন, সিইসির ওপর প্রথম থেকেই আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম না। তার পরিবর্তে একজন বিশ্বাসযোগ্য লোককে আনতে হবে। উনি বয়স্ক লোক, সিনিয়র অফিসার ছিলেন। আমি উনাকে আবারো বলছি, এখনো সময় আছে, এতদিন যা করেছেন করেছেন, এখন থেকে পরিবর্তন হন। তা না হলে তার রিপ্লেস করা হোক। আমরা উনার রিমুভ (সরিয়ে দেয়া) চাই না। উনার রিপ্লেস (বদলি) চাই। আমরা বারবার স্মরণ করাতে থাকব, তা না হলে আদালতে যাওয়া হবে। ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের অপো করছি। জনগণ দেশের মালিক। ভোটে তাদের নেতা নির্বাচনের সুযোগ দেয়া উচিত। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় বর্তমান ধরপাকড়। এখনই পাইকারিহারে গ্রেফতার বন্ধ হওয়া দরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত ধরপাকড় না করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো সরকারের বাহিনী না, তারা রাষ্ট্রের বাহিনী, সকলের বাহিনী। : নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ ইভিএমের ব্যবহার বাতিল করেছে। এটা নির্ভরযোগ্য না। এটাতে বিশেষ কায়দা করলে এক জায়গায় ভোট অন্যজনের ওপর পড়তে পারে, চেকও করা যায় না। এটা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।’ : সরকারি দলের আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রচারণার বিষয়ে বক্তব্যে গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে পরিস্থিতি সৃষ্টির কথা ছিল, নির্বাচন কমিশন তা করতে পারেনি। গণভবন, মন্ত্রীদের বাসা ও সরকারি অফিস সরকারদলীয়রা রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে, যা নির্বাচনি আচরণবিধি ১৪/১, ১৪/২-এর লঙ্ঘন। নির্বাচন কমিশনের এতে কোনো ভূমিকা নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করছে, মামলা দিচ্ছে। গ্রেফতারকৃতরা যাতে জামিন না পায় বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে। সরকারদলীয়রা পুলিশের প্রোটোকল নিয়ে নির্বাচনি প্রচারণা করছে। অথচ বিরোধীরা এলাকায় গিয়ে প্রচারণা করলে, ঘরোয়া বৈঠক করলে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। : গণফোরামে যোগদান প্রসঙ্গে মেজর জেনারেল (অব) আমছা আমিন বলেন, দেশে একটি গুনগত পরিবর্তনের জন্য তিনি গণফোরামে যোগ দিয়েছেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ অসুবিধার কারণে তিনি ওই দলটি ত্যাগ করেছেন। তিনি জানান, ২০০১-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অসহযোগিতার কারণে তিনি পরাজিত হন। তিনি বলেন, দেশে এখন যে অবস্থা চলছে তার পরিবর্তন না হলে কারো মুক্তি নেই। : ড. কামালের দলে যোগ দেয়া প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ রেজা কিবরিয়া বলেন, ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন মওলানা ভাসানীও করেছিলেন। তাই ধানের শীষ নিয়ে কাজ করা কোনো সমস্যা না। এটি একটি সিম্বল। আমরা সব মানুষের সমান অধিকার চাই। তিনি বলেন, ‘কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আমি গর্বিত। আমাকে এই দেশে থাকতে হবে। আমার আর কোনো পাসপোর্ট নেই। দেশের জন্য কিছু করতে চাই।’ এই সময় প্রতিরোধ করতে হবে। কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আমি গর্বিত। রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমি আইএমএফ, জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংকে কাজ করেছি। ৪০টি দেশে অর্থনীতি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। এসব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারব। এই দেশে সে জ্ঞান ব্যবহার করার সুযোগ পাব। তাই আজ এখানে এসেছি।’ তিনি বলেন, সকল মানুষের সমান অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার ভিশন তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পেছনের কারণ তার জানা আছে। আর সেসব দেশ এসব অসুবিধা কিভাবে কাটিয়ে উঠেছে তাও তিনি দেখেছেন। আর সে শিা থেকে দেশকে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া যায় সে ব্যাপারে কাজ করতে তিনি গণফোরামে যোগ দিয়েছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, দেশের অবস্থা খুবই খারাপ। এর থেকে জনগণকে একমাত্র ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বই মুক্তি দিতে পারে। : অপরদিকে যোগদানের পরে একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, আজকে ড. কামাল হোসেন যে যুদ্ধ করছেন, এই একই যুদ্ধের জন্য ২০১৫ সালে আজকের এই দিনে একুশে টেলিভিশন দখল করা হয়। আজ তিন বছর হয়ে গেল। আবদুস সালাম বলেন, ‘আজ আমি আনুষ্ঠানিকভাবে গণফোরামের সদস্য হিসাবে যোগ দিলাম। আজ থেকে আমার নেতা ড. কামাল হোসেন। আশা করি আপনারাও আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’দিনকাল রিপোর্ট :

শেয়ার করুন