৩০ ডিসেম্বরের পর স্বাধীন মানুষের পতাকা উড়বে

0
135
Print Friendly, PDF & Email

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা খুব কঠিন সময়ে আছি।

আমরা ১০ বছর প্রতিবন্ধকতা ও অত্যাচার ব্যবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। আর মুখ বুজে না থেকে শেষ চেষ্টা হিসেবে ৩০ ডিসেম্বরের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। নির্বাচনের দিন শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আমরা লড়াই করব। বুকে বুক বেঁধে লড়াই করব। ৩০ ডিসেম্বরের পর দেশে স্বাধীন মানুষের পতাকা উড়বে।

মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্ট অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।

মির্জা ফখরুল বলেন, সুযোগ একটা এসেছে। হাত-পা বেঁধে রাখার মধ্যেও আমাদের এগোতে হবে। নির্বাচনে আমাদের সব অস্ত্র নিয়ে নামতে হবে। আর সেই অস্ত্র হল ভোটের অস্ত্র। প্রতিরোধের দেয়াল তৈরির বিকল্প নেই, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভোট কেন্দ্রে আসতে হবে। জনগণের শক্তি দিয়ে অবাধ নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে। প্রতিরোধ তৈরি করতে হবে। এটা বাঁচা-মরার সংগ্রাম।

দলের নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আর পালিয়ে থাকার সময় নেই। আপনারা বেরিয়ে এবার গ্রামে গ্রামে যান। মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সরকারের দুঃশাসনের কথা মানুষকে জানান। মনে রাখবেন, এই নির্বাচনে যাওয়া আমাদের আন্দোলনেরই অংশ।

‘সরকার প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা ইন্টারনেট, স্কাইপে বন্ধ করেছে। কতটুকু দেউলিয়াত্ব দেখা ?দিলে সরকার আমাদের প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে রিট করে সেটি জনগণ বুঝে গেছে।

তারেক রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান নেতাকর্মীদের বলেছেন, নির্বাচনের দিনকে বিপ্লবের দিনে পরিণত করতে হবে। দেশের বিচারহীনতা থেকে মুক্তি পেতে হলে ব্যালটের মাধ্যমে সরকারকে সরিয়ে দিতে হবে। নেতাকর্মীরাও ওয়াদা দিয়েছেন সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করার। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট সেলিনা হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম।

আলোচনা সভার শুরুতে তারেক রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর ‘তুমি আছো নয়নে হৃদয়ের গহীনে’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে কণ্ঠশিল্পীরা তারেকের জন্মদিন উপলক্ষে একটি গান গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানে বিএনপির অন্যতম শরিক ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি কবিতা পাঠ করেন।

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, এই নির্বাচনকে আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি। তারেক রহমান আজ দেশের বাইরে এবং খালেদা জিয়া কারাগারে। এই অমানবিক অবস্থায় আর থাকতে হবে না। সবাই মিলে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে ভেতরে ভেতরে সাগরের মতো ফুঁসছে সারাদেশের মানুষ। পরিবর্তনের জন্য তারা কেবল একটি সুযোগের অপেক্ষায়। নির্বাচনের মাধ্যমে সেই সুযোগ এসেছে। যেহেতু নির্বাচনের হুইসেল (তফসিল) বেজেছে তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের রায় ঘোষণা করব। এ নির্বাচনে এই জালিম সরকারের পতন ঘটানো হবে। নির্বাচনের আগে ২১ দিন প্রচারণার সুযোগ পাব, তখন সারাদেশ চষে বেড়াব। তিনি বলেন, লন্ডন থেকে একটা মানুষ (তারেক রহমান) স্কাইপে কথা বলে আর এখানে ঢাকায় বসে ক্ষমতাসীনরা কাঁপে।
মান্না বলেন, একদিকে শত শত নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার, অন্যদিকে ভিক্ষুককে ভিক্ষা দিয়ে থ্যাঙ্কিউ পিএম বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এজন্য ধিক্কার জানাতে হবে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তারেককে ভালোবাসলে তার প্রমাণ দিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। এক লাখ লোক গ্রেফতার করলেও মাঠ ছাড়া যাবে না। সুপ্রিমকোর্টে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মদিন পালন করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীরা। মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন তারা। অ্যাডভোকেট মামুদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে শতাধিক আইনজীবী অংশ নেন। এতে বক্তব্য রাখেন মনির হোসেন, এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো. আলী, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, আনিছুর রহমান খান, কাজী তৌহীদ, শরীফ ইউ আহমেদ ও ফারুক হোসেন, মো. গাউস, নাছির উদ্দিন সম্রাট, আবদুস সাত্তার, ফাতেমা ইয়াসমিন, নাহিদ সুলতানা, ওয়াসেল উদ্দিন বাবু, মো. শিমুল, জিয়াউর রহমান, মনির হোসেন, মো. আলম, মো. জসীম, আবু হানিফা, নাজমুল হাসান, মুক্তার কবীর খান, শামসুল ইসলাম ও হেনা প্রমুখ।

শেয়ার করুন