একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন উৎসবমুখর পরিবেশে বিক্রি করছিল বিএনপি। গত সোমবার, মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করলেও গতকাল বুধবার সকাল থেকেই পুলিশি তৎপরতায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। গতকাল সকাল থেকেই কার্যালয়ের আশে পাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বিক্রি শেষে শোডাউন বন্ধে নির্বাচন কমিশনের চিঠির একদিন পরই পাল্টে গেল উৎসবমুখর নয়া পল্টনের দৃশ্য। দুপুর তখন ১টা। নেতা-কর্মীতে ঠাসা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও আশ পাশের সড়ক। একের পর এক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মিছিল আসছে। হঠাৎ কিছু পুলিশ সদস্য রাস্তা থেকে নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দিতে উদ্যোগী হলে গন্ডগোলের সূত্রপাত ঘটে। এক পর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মনোনয়ন ফরম ক্রয় করতে এলে মিছিলের পিছন থেকে ২ কর্মীকে আটক করে পুলিশ। নেতা-কর্মীদের সাথে কয়েক মিনিটের বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে পুলিশ যথারীতি লাঠিচার্জ শুরু করে। বেধে যায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ফকিরাপুল থেকে নাইটেঙ্গেল মোড় পুরো সড়কে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট আর ছররা গুলি চালায় পুলিশ। ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় হেলমেট পরা একটি দলকে পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করতে দেখা যায়। পরিস্থিতি আঁচ করে পুলিশ কিছুটা দূরে সরে গেলে প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রশমন ঘটে। তবে এ ঘটনার পর সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো নয়া পল্টন সড়কের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা মুহুর্মুহু সেøাগানে প্রকম্পিত করে রাখে। সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদলসহ বেশকিছু নেতা-কর্মীকে ছররা গুলির আঘাতে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে তখন রক্ত ঝরছিল। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে আশপাশের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিএনপি অভিযোগ করেছে- পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জে অর্ধশত কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা হলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা আব্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদল নেতা মেহেদী হাসান নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক তানভীর আহমেদ খান ইকরাম, ঢাকা মহানগর মতিঝিল থানা যুবদল নেতা মকবুল, খিলগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোস্তাক, মুগদা থানা স্বেচ্ছাসেবক দল ৭১ নং ওয়ার্ড সভাপতি সবুজ, কলাবাগান থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন, মুগদা থানা যুবদল ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি অরিন, শাহজাহানপুর ছাত্রদল নেতা মহিরুদ্দিন, হোসেন, ভাসান, টুটুল, শাহবাগ থানা বিএনপি নেতা কামাল, পল্টন থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাদির, সবুজবাগ থানা যুবলের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মনির, ৪ নং ওয়ার্ড সহ-প্রচার সম্পাদক সাইফুল, মুগদা থানা ৭২ নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মেহেদী হাসান মিরাজ, রমনা থানা ছাত্রদল নেতা প্রিন্স, ঢাকা পূর্ব মতিঝিল থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মানিক, যুবদল নেতা হৃদয় শেখ, বিমান বন্দর থানা বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন রতন, গাইবান্ধা জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী, ছাত্রদল সদস্য শামীম রেজা, নিক্সন, জাকারিয়া জিম, চাঁদপুর জেলা যুবদল নেতা দেওয়ান মোহাম্মদ জুয়েল, শিবচর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, পিরোজপুর জেলা নাজিরপুর উপজেলা বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান, লাকসাম থানা ছাত্রদল নেতা নুরুন নবী মহসিন, নেছারাবাদ উপজেলা : যুবদল নেতা শামসুল হক, পল্টন থানা শ্রমিক দল সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, খিলগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মনিরুজ্জামান, মহিলা দল নেত্রী হালিমা আক্তার বেবি, সালেহা ইসলামসহ ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মী। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশংকাজনক। আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ দাবি করেছে তাদেরও ৭/৮ জন সদস্য আক্রমণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় ২ ঘন্টা বন্ধ ছিল বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমাদান কার্যক্রম। পরে সকল বাধা উপেক্ষা করে মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমা নেয়া হয়। : এদিকে এ ঘটনার পর বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল দলীয় কার্যালয়ের নিচ থেকে গ্রেফতার করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, গাবীতলী যুবদলীয় আহবায়ক আখতারুজ্জামান, ছাত্রদলের সভাপতি মুহাব্বত আলী, তারিকুল ইসলাম আরিফ, আদমদিঘী যুবদলের আহবায়ক মাহফুজুল হক টিকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট কাজী রহমান মানিককে। : জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর গত সোমবার থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করে বিএনপি। মনোনয়নপত্র বিক্রিকে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দৃশ্য পাল্টে যায়। নেতা-কর্মীদের উৎসবমুখরতা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। গতকাল ছিল মনোনয়ন ফরম বিক্রির তৃতীয় দিন। সকাল থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সাথে নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসতে থাকে। তবে আগের দুইদিনের চাইতে গতকাল সকাল থেকেই পুলিশের তৎপরতা ছিল ভিন্নরকম। নেতা-কর্মীদের জড়ো হতে দিতে তারা বিভিন্নভাবে বাধা দেয়ারও চেষ্টা করে। : যেভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত : দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে একটি মিছিল কার্যালয়ের সামনে আসে। এ সময় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আরও কয়েকটি মিছিল দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিএনপি নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং তাদের ফুটপাতের দিকে জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। নেতা-কর্মীরা এতে বাধ সাধলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশের প থেকে একই সময় দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ছররা গুলি ছোড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যে নয়া পল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রথমদিকে নেতা-কর্মীরা আশপাশের অলিগলির ভেতরে ঢুকে গেলেও পরে তারা একসঙ্গে বেরিয়ে এসে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল, জুতা এবং বিভিন্ন বস্তু নিপে করে তারা। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দৌড়ে পালাতে দেখা যায়। এরপর পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একদল পুলিশ ভাসানী গলিতে, আরেক দল বিজয়নগরের দিকে সরে যায়। এ সময় পুরো সড়ক চলে যায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে। কোনো কোনো নেতা-কর্মীকে খালি গায়ে রাস্তায় বসে ‘পারলে গুলি করো’ বলতে শোনা যায়। এ সময় হেলমেট পরা একটি দল মিডিয়ার গাড়ি আর অ্যাম্বুলেন্স বের করে দিয়ে কয়েকটি মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে। পুলিশের একটি পিক আপ এবং একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হেলমেট পরিহিতরা বিএনপির নেতা-কর্মী কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে স্কাউট ভবন পর্যন্ত মুহুর্মুহু মিছিল করে। দুপুর আড়াইটার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে থাকে। তবে যুবদল-ছাত্রদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা ‘বিএনপি অফিসে গুলি কেন, শেখ হাসিনা জবাব দে’, ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশে’- এ ধরনের নানা সেøাগান ও খন্ড খন্ড মিছিল অব্যাহত রাখে সন্ধ্যা পর্যন্ত। : পুলিশের সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির এক পর্যায়ে কার্যালয়ের ভিতরে থাকা দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নিচে নেমে এসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে ফুটপাতে অবস্থান গ্রহণ করার অনুরোধ করেন। পুলিশ বিনা উস্কানিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকাল থেকে নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছিলেন। দুপুরে পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমি পুলিশকে অনুরোধ করবো, শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয় এবং গণতন্ত্র ধ্বংস হয়, এমন কাজ করবেন না। কারও নির্দেশে কাজ করবেন না। আপনারা দেশের সন্তান। কারও স্বার্থ রার্থে অন্যায় নির্দেশ পালন করবেন না। : সংঘর্ষের পর কার্যালয়ের সামনে বিএনপির একটি চিকিৎসক দলকে আহতদের চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে। কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালেও পাঠানো হয়। গুলিতে আহত মহানগর উত্তর ছাত্রদলের নেতা তানভীর আহমেদ খান ইকরাম জানান, পুলিশের ছররা গুলিতে বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। কারো চোখে, কারো পেটে, কারো মাথায় গুলি লেগেছে। পুলিশের প থেকে দাবি করা হয়েছে, বিনা উস্কানিতে পুলিশের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল। হঠাৎ বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। প্রাথমিকভাবে আমাদের ৮-১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন- দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা পরিকল্পিত। এই সরকার আবারো ভোটারশূন্য একটি নির্বাচন করতে চায়। আর সরকারের সব দুষ্কর্মের দায়িত্ব নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। : রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিক্রির সময়তো ৪/৫ দিন ধানমন্ডি ও আশেপাশের রাস্তা বন্ধ ছিল তখন তো ইসি কোনো নির্দেশনা জারি করেনি। আওয়ামী লীগের নিজেদের সংঘর্ষে দুইজন মারাও গেছেন। তিনি বলেন, নয়া পল্টনে হেলমেট পরে কারা হামলা চালিয়েছে? গাড়িতে কারা আগুন দিয়েছে? এরা সরকারের এজেন্ট। : প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে আসা মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের সমর্থক নেতা-কর্মীদের ভিড় ছিল। পুলিশ রাস্তায় তাদের দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। এ কারণে নেতাকর্মীরা পুলিশের আচরণে আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলো। মির্জা আব্বাসের সমর্থক কয়েক হাজার নেতাকর্মী মনোনয়ন ফরম কিনতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসে। ওই সময় কার্যালয়ের সামনে থেকে তার মিছিল সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে কর্মী-সমর্থকেরা সরে না যাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে বাগবিতন্ডা মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থককে লাঠিপেটা করে। পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিরোধে পুলিশ সেখান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পুরো সড়ক তখন বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এ সময় নয়াপল্টনের কার্যালয় থেকে মিছিল করতে করতে নাইটেঙ্গেল মোড়ের দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় তাদের কারো কারো হতে হাতে লাঠি, ব্যানার ও পতাকা দেখা যায়। বিএনপি নেতাকর্মীরা যতো এগোতে থাকে পুলিশ কাকরাইলের দিকে ততো পেছাতে থাকে। এক পর্যায়ে সেøাগান দিতে থাকা কর্মীরা নাইটেঙ্গেল মোড়ে এসে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। : সোহেল আহমেদ নামে আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পুলিশ লাঠিচার্জ করার পর বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সড়কের পাশে থাকা এপিসি কারে হামলা করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় এপিসি কার থেকে রাবার বুলেট ছুড়তে ছুড়তে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। রাবার বুলেট ও গাড়ির ধাক্কায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ওই সময় আহত হয়েছে। : গতকাল বুধবার মনোনায়ন ক্রয় করেছেন কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রনেতা শামসুজ্জামান দিদার, মনোনয়নপত্র কেনার পার শামসুদ্দিন দিদার গণমাধ্যমকে বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে। : তিনি বলেন, আমি দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। আশা করি দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের হাইকমান্ড আমার কর্মকান্ড বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেবেন। কুমিল্লা-৮ আসনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ঢাকা-৪ আসনে বিএনপির প্রান্তিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালেক, পাবনা-১ আসনে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন, ঢাকা-১৪ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি শামীম পারভেজ, যশোর-৬ থেকে অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান তপন, ভোলা-২ আসনে আলহাজ রফিকুল ইসলাম মমিন খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, রাজশাহী-৪ আসনে ড. জাহিদ দেওয়ান শামীম, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ শিবগঞ্জ আসনে বিএনপির ৭ জন মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তলোনকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি অধ্যাপক শাহজাহান মিঞা, শিবগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক হায়দারী শহীদ মিঞা, নয়ালাভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশরাফুল হক, বিএনপি নেতা শাহীন শওকত, বেলাল ই-বাকী-ইদ্রিশী, আরিফুল ইসলাম ও সাদেকুল ইসলাম। শিবগঞ্জ আসনে সাবেক এমপি অধ্যাপক শাহজাহান মিঞা, শিবগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক হায়দারী শহীদ মিঞা, শাহীন শওকত ও ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক, শরীয়তপুর-৩ (ডামুড্যা, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট) আসনে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিল্পপতি আলহাজ্ব সাঈদ আহমেদ আসলাম, ময়মনসিংহ-৩ গৌরীপুর আসন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হাফেজ মো: আজিজুল হক, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা: আবদুস সেলিম, উপজেলা চেয়ারম্যান আহম্মেদ তায়েবুর রহমান হিরন, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি শামছুল হক শামছু, ময়মনসিংহ-১ আসনে হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সালমান ওমর রুবেল, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মাসুদ তানভীর তান্না মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে, ময়মনসিংহ-২ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, ফুলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. আবুল বাসার আকন্দ, সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ার, ময়মনসিংহ-৮ আসনে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ময়মনসিংহ-৭ ত্রিশাল আসনে মনোনয়ন নিয়েছেন সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী ছাত্রনেতা শাহ মো: শাহাবুল আলম, নওগাঁ-১ (সাপাহার-পোরশা-নিয়ামতপুর) আসনে নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. ছালেক চৌধুরী, জেলা শাখার সহ-সভাপতি ত্যাগী নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, পোরশা উপজেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা লায়ন মাসুদ রানা, সাপাহার উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্য আব্দুন নূর এবং নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম, নওগাঁ-২ (পতœীতলা-ধামইরহাট) আসনে থেকে বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শামসুজ্জোহা খান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী, নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে সাবেক ডেপুটি স্পিকারের স্ত্রী নাসরিন আরা সিদ্দিকী ও ছেলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল, নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা রবিউল আলম বুলেট ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম শফিকুল ইসলাম শফিক, নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে মান্দা থানা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সামসুল আলম প্রামাণিক, নওগাঁ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহাবুব আলম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী টিপু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল মতিন এবং জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আক্কাস আলী মোল্লা, নওগাঁ-৫ (নওগাঁ সদর) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) আব্দুল লতিফ খান, জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র নাজমুল হক সনি, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু ও সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মামুনুর রহমান রিপন, জেলা যুবদলের সভাপতি বায়েজিদ হোসেন পলাশ ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল আহমেদ বকুল, নওগাঁ-৬ আসনে (আত্রাই-রানীনগর) সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর, তার ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন বুলু, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুল হক বেলাল ও জেলা তাঁতী দলের সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এচাহাক আলী, পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়া) আসনে কৃষিবিদ নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ টিটু, জামালপুর-১ আসনে (বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ) বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহিদা আক্তার রিতা ও সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম, মাদারীপুর-৩ আসনে বিএনপির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, চট্টগ্রাম-১ আসনে ইঞ্জিনিয়ার মো. ফখরুল আলম, চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসন বিএনপি নেতা রাকিবুল আলম চৌধুরী, বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে বিএনপির উপদেষ্টা জানে আলম খোকা, চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দণি) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও মতলব দণি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ শুক্কুর পাটোয়ারী।রফিক মৃধা, দিনকাল :