তানিশার সঙ্গে কোনোভাবেই বনিবনা হচ্ছিল না। সিদ্ধান্ত— নিলাম, অনেক হয়েছে, আর না। জল অনেক গড়িয়েছে। সেই জল সমুদ্রে পৌঁছে মেঘ হয়ে আবার আকাশে ভেসেছে। কিন্তু তানিশার মনের মেঘ গলেনি। বলা যায়, গলাতে পারিনি। ব্যর্থ হয়েছি। আমি একজন ব্যর্থ প্রেমিক। মানুষ ব্যর্থতা লুকাতে চায়। দেখাতে চায় সাফল্য। আমার সাফল্যের পাল্লা শূন্য।
ব্যর্থতা ঢাকতে খিঁলগাঁও ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত— নিলাম। এই সিদ্ধান্ত— বহুবার নিয়েছি। কোনোবারই কার্যকর করতে পারিনি। যখন নতুন বাসা খুঁজতে গেছি, পথে কপোত-কপোতীদের হাসিমুখ, নানারকম খুনসুটি দেখে ফিরে এসেছি। তানিশা আমার প্রেমে রাজি হলে একদিন আমরাও এভাবে বসে গল্প করব, ঘুসুর মুসুর করব। কী মধুময় হবে সময়টা। ভাবতে ভাবতেই বাসা বদলের সিদ্ধান্ত— বাতিল করে দিয়েছি। না, বাসা বদলানো যাবে না। কোনোভাবেই না। যেকোনোভাবেই হোক তানিশাকে পেতে হবে।
কিন্তু তানিশা কোনোভাবেই হেলছে না। বরং নানাভাবে আমাকে ডিমোটিভেট করে। ‘‘আপনি আমার চেয়ে আরো ভালো মেয়ে পাবেন। আমি আপনার উপযুক্ত না। আমার আংটি বদল হয়ে গেছে। ক্যান খালি খালি জ্বালাতন করেন। একটু শান্তি—তে থাকতে দিন পিজ’ ইত্যাদি বলে আমার থেকে মুক্তি চায়। একদিন বললাম, আমি তো তোমাকে বেঁধে রাখিনি। মুক্তি চাও কেন?
-বেঁধে রাখেন নাই। কিন্তু যা করছেন তা বেঁধে রাখার চেয়েও বেশি কিছু।
-কী রকম?
-রাত তিনটায় আমাকে নিয়ে কবিতা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেন। সকাল-সন্ধ্যা বাসার সামনে ঘোরাঘুরি করেন। আমার ভার্সিটির অনুষ্ঠানে নিজ পরিচয় দিয়ে ঢুকে পড়ে বেহায়ার মতো সামনের সিটে বসে যান। এসব একটা মেয়েকে বেঁধে রাখার চেয়েও বেশি কিছু। আপনি বোঝেন নাহ্? দাঁত কটমট করে কথাগুলো বলল সে।
-আমি তোমাকে জয় করার চেষ্টা করব না?
-না, করবেন না। কক্ষনো না, কোনোদিন না।
-আশ্চর্য, আমি তোমাকে চাই।
-কিন্তু আমি আপনাকে চাই না।
আমি কাতর গলায় বললাম, আমি তোমাকে ভালোবাসি তানিশা। আই লাভ ইউ।
আমার মুখে আই লাভ ইউ শুনে একটা ইংরেজি শব্দ উচ্চারণ করল তানিশা। এফইউসিকে অক্ষরের ওই শব্দ শোনার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। আমার মাথা ঝিমঝিম করতে শুরু করল। কিছু না বলে মন খারাপ করে বাসায় ফিরলাম।
আমার শত চেষ্টাও যা করতে পারেনি, তানিশার মতো আগুন সুন্দরীর মুখের একটা ইংরেজি শব্দই সেটা করে দিল। বাসায় ফেরার পথে বাড়িওয়ালাকে ১ তারিখে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ওপরে উঠে এলাম।
খিঁলগাঁও ছেড়ে বসুন্ধরা চলে এসেছি দুই মাস। তানিশাকে জানাইনি। দুই সপ্তাহ ওর কোনো খোঁজ নিচ্ছি না দেখে একদিন ইমোতে টেক্সট করল। অবশ্য সেদিন বাসায় ফিরে ঘণ্টাখানেক পরই ফোন দিয়েছিল। সরি বলল, দেখা করতে চাইল। রাত বাজে ১১টা। এত রাতে দেখা করতে চাওয়ার কারণ বুঝতে পারছিলাম। আমার মন খারাপ ওকে ছুঁয়ে গেছে। কিন্তু তানিশাকে আমি প্রথম থেকে যেরকম মেয়ে ভেবে এসেছি তাতে কোনোভাবেই এরকম কথা ওর মুখে আশা করিনি। কে জানে শহুরে মেয়েরা এরকম কথা হয়তো হরহামেশাই বলে। ওসব বন্ধুর সঙ্গে করতে পারে। আমি তো ওর ক্লাসমেট না।
তানিশার মেসেজ সিন করে রেখে দিয়েছি। রিপ্লাই দিইনি। ওর ওইদিনের আচরণের কারণ ব্যাখ্যা করে সে বিতং করে মেসেজ লিখেছে। সময় চেক করে দেখলাম রাত একটায় শুরু করেছে। শেষ করেছে ৪টা ২৩ মিনিটে। ইমোতে রবীন্দ্রনাথের বড় গল্প টাইপ সেই মেসেজ সকালবেলা পড়ে শেষ করতে আমার প্রায় দুই ঘণ্টা লেগে গেল। বাংরেজিতে লেখা বলে ধীরে ধীরে পড়তে হলো। পড়া শেষ করে ওকে ব্লক করে দিলাম। যাকে ভুলতে খিঁলগাঁও ছেড়েছি তার নম্বর ইমোতে রাখার কোনো মানে হয় না।
বসুন্ধরায় দিনকাল ভালোই যাচ্ছে। অফিস থেকে বাসা, বাসা থেকে অফিস। হাতে প্রচুর সময়। এই সময় কাটে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে আর বই পড়ে। তিন রুমের একটি ছোট্ট ফ্লাটে ৬ জন থাকি। প্রতি রুমে দুইজন। আমার রুমমেটের নাম আহমেদুল। বাড়ি চাঁদপুর। রেডিসন ব্লুতে চাকরি করে। আমার বয়সী, অবিবাহিত। অমায়িক ভদ্র ছেলে। হোটেলে চাকরি করে বলে হোটেলের হাসিটা বাসাতেও মুখে ঝুলে থাকে। দেখতে সুন্দর, স্মার্ট ছেলে। মজার ব্যাপার তানিশাদের বাড়িও চাঁদপুরে। একদিন গল্পে গল্পে আহমেদুল্লাহকে তানিশার কথা বললাম। শুনে তার মন নরম হয়ে গেল। আমাকে প্রথম দুদিনেই ভালো ছেলের তকমা দিয়েছে। এমন ভালো ছেলেকে নিজের এলাকার মেয়ের দুঃখ দেওয়ার ঘটনা সে কিছুতেই মানতে পারল না। তার বাবা এলাকার মাতব্বর। আমি চাইলে এখনি তার বাবাকে তানিশাদের গ্রামের বাড়ি পাঠাবে। আমার প্রেমের সফল সমাপ্তি ঘটাতে বদ্ধপরিকর সে। তানিশাদের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা চাইল। আমি দিলাম না। কে হায় হৃদয় খুড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে?
বসুন্ধরা ভিআইপি এলাকা। এখানে বুয়া পাওয়া আর ছাইয়ের মধ্যে সোনা পাওয়া সমান কথা। আমাদের আগের বুয়া চলে গেছে। অনেক খুঁজে নতুন বুয়া পাওয়া গেল। বুয়ার নাম রিমা আক্তার। বয়স ১৭। বাড়ি নেত্রকোনা। রিমা বিবাহিত। তার দেড় বছর বয়সী একটা মেয়ে আছে। মেয়ের নাম মাহিয়া মাহি। আমরা যখন রিমার বিয়ের কথাই বিশ্বাস করছি না তখন মেয়েকে নিয়ে হাজির হলো সে। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি জেনে কষ্ট পাবেন। তারপরও বলি, মাহিয়া মাহি প্রথম দিনই আমার টেবিল থেকে মোবাইল টেনে নিয়ে মেঝেতে আছড়ে ফেলল। পাপোসে পড়ায় তবে রক্ষা। আলমারি খোলা ছিল। সেখান থেকে আহমেদুল্লাহর মধুর বোতল ফেলে দিল। সেই মধু পুরো মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ল। মাহির মা মেয়েকে ঠাস করে চড় বসাল। মাহি চড় খেয়ে মধুর মধ্যেই গড়াগড়ি করে কান্না জুড়ে দিল। একটু পরই দেখা গেল নিজের মধুমাখা হাত পা চেটে খাচ্ছে সে!
রিমা সকালে আর দুপুরে এসে রান্না করে দিয়ে যায়। হাতের রান্না জঘন্য। তার বেতন ৪২০০ টাকা। সকালে যখন রান্না করে দিয়ে যাই তখন আমরা ঘুমে। সন্ধ্যায় কোনোদিন বাসায় ফিরলে রিমার সঙ্গে দেখা হয়। প্রথম প্রথম খুব কম কথা বলতো। যা লাগবে তার বাইরে কিছু বলত না। এখন টুকটাক কথা বলে। রান্না কেমন অইচে বললেন নাহ্?
ভালো হইছে বলতে হয়। মন্দ বললে রাগ করে চলে যেতে পারে। বসুন্ধরায় বুয়া পাওয়া কঠিন। মেয়েরা আর সব সহ্য করতে পারলেও হাতের রান্না খারাপ সহ্য করতে পারে না।
-আম্নেরা বস্তায় চাল কিনবেন। কেজি করে চাল কেনা ক্ষতি।
-তাই নাকি?
-হয়। আমরা এক বস্তায় চাল কিনি। কৌটা দিয়ে মাপার পরও পরিমাপে বেশি হয়।
একদিন রিমা জিজ্ঞেস করল, আম্নে কী খিস্টান?
আমি বইয়ের পাতা থেকে মুখ তুলে জিজ্ঞেস করলাম, খ্রিস্টান বলছো কেন?
-আম্নেরে আমার কাছে খিস্টান মনে হয়।
-কেন মনে হয়?
-আমি যেই ইস্কুলে পড়ছি হেই ইস্কুলের সব স্যারেরা ছিল খিস্টান। আম্নেরে হেগো মতোই লাগে।
আমি মজা করার জন্যই বললাম, হ্যাঁ, আমি খ্রিস্টান।
রিমার রান্নার মাসখানেক হয়ে গেছে। বেতন পেয়েছে সে। চলতি মাসের ম্যানেজার আমি। বাজার খরচ, কারেন্ট বিল, গ্যাস-পানি বিল সব কিছু আমাকে সামলাতে হয়। এজন্য রিমার সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি কথাবার্তা হয়। একদিন মুরগি কাটতে কাটতে বলল, আম্নের কি লেহাপড়া শেষ অয় নাই?
-কেন? লেখাপড়ার কথা জিজ্ঞেস করছো কেন?
-আম্নে দেহি অফিস থেকে এসেই বই নিয়া পড়তে বসেন। সকালবেলাও ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসেন। অন্য বেটারা তো দেহি খালি মোবাইল নিয়া বইসা থাকে।
আমি পড়তে পড়তেই জবাব দিই, হুম, লেখাপড়া শেষ।
-মারটাস না কি কয় ওইটাও শেষ?
-হুম।
-এহন তাইলে এত লেহাপড়া করেন যে?
-চাকরির জন্য পড়ি। ভালো চাকরি না পেলে তো বিয়ে করতে পারব না।
-আম্নে এহনো বিয়া করেন নাই?
-না।
ভাতের ফ্যান উছলে ওঠে। মুরগি কাটা রেখে উঠে যায় রিমা।
রিমা বোধহয় কথা না বলে থাকতে পারে না। এখন এসেই টুকটাক সংসারের কথা শুরু করে। শাশুড়ি ভালো না। বকাঝকা করে। স্বামীও আর আগের মতো ভালোবাসে না। অথচ তার জন্য কী পাগলই না ছিল! দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিমা। একদিন ওর বিয়ের গল্প জানতে চাইলাম। বলতে শুরু করল সহজ সরল মেয়েটা।
-ক্লাস এইটে পড়ার সময় আমার বিয়ে হয়। আমার তহন বয়স আছিল ১৫ বছর। ভালোবেসে বিয়া করছিলাম।
-প্রেম করছিলা?
-আমি প্রথমে প্রেমে পড়ি নাই। আমাগো বাসার গলিতে হেয় মেকানিকের কাজ করতো। গায়ের রং কালো হলেও সুন্দর আছিল। পরিস্কার জামা কাপড় পরতো। আমাকে খুব জ্বালাইতো। তিনমাস জ্বালাতন করার পর আমাকে মোবাইল কিনে দেয়। মজার করার লাইগাই গোপনে হের লগে কথা কইতাম। ভালোবাসতাম স্কুলের একটা ছেলেকে। একদিন আব্বার হাতে ধরা পইড়া যাই। আব্বা খুব মাইর দেয়। তারপর রাগে জিদ্দে সিদ্ধান্ত— নেই, এই পোলাকেই বিয়া করমু।
-কেন?
-আমাকে খুব ভালোবাসতো। টের পাইতাম। আমার জন্য ছাদ থেইকা পইড়া মরতেও গেছিল। ব্লেড দিয়া হাতও কাটছে মেলাবার। লেক পার্কে নিয়া আমার পা ধইরা কান্নাকাটি করছে। কইছে বিয়ার পরও আমারে লেহাপড়া করাইবো। হের লাইগা হের হাত ধইরা বাসা থেকে পলাইছিলাম। এখন বুঝি জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল আছিল ওটা।
আমি বইয়ের পাতা উল্টাতে উল্টাতে জিজ্ঞেস করি, কেন?
-বিয়ার পরই ওর আচরণ বদলাতে শুরু করে। কথায় কথায় মারধর করে। বাবার বাড়িও চলে গেছিলাম। মেয়ে জন্ম হওয়ার পর আবার ফিরা আনছে। জানেন, বাবার বাসায় আমারে কোনোদিন রান্না ঘরে যাইতে দেয় নাই মা। দেখতে অন্য বোনদের চেয়ে সুন্দর আছিলাম তো। হের লাইগা মা আমারে বেশি ভালোবাসতো। ভালোমত রান্নাটাও শিখায় নাই। আমার বান্দবিরা এখন কলেজে পড়ে। ওদের লগে দেখা অইলে আমি মাথা নিচু করে হাটি।
-তুমি বুয়ার কাজ করো কেন? স্বামী কাজ করে না?
-হের শরীল ভালা না। অল্প বয়সে বিয়া করায় আমার মতো হেরও শরীল ভাইঙ্গা পড়ছে। একদিন কাজ করলে দুইদিন বাসায় বইসা থাকন লাগে। মেয়ে জন্ম নেওয়ার পর আমি ভারী কাজ করতে পারি না। জিদ কইরা বিয়া করছি বইল্যা আব্বা-মা, শ্বশুর-শাশুড়িও আমাগো ভালো চোখে দেখে না।
আমি জিজ্ঞেস করি, রিমা সুযোগ পেলে কী আগের জীবনে ফিরে যাইবা?
-শুধু আমার মেয়েটা না থাকলে কবেই ওর কপালে লাথি মাইরা চইলা যাইতাম। উত্তর দেয় রিমা।
একদিন রিমাকে তানিশার গল্প শোনালাম। শুনে বলল, এই মাইয়া মনে অয় অন্য কাউকে পছন্দ করে।
-না, তা নয়।
-তাইলে আম্নেরে আরো ভালো করে যাচাই করে দেখতে চায়। আম্নের হের প্রতি ভালোবাসা আসল কিনা।
-মেয়েরা আসল ভালোবাসা, নকল ভালোবাসা বুঝতে পারে না?
-পারে। তয় অনেক সময় মুখ ফুটে কিছু কয় না।
-আচ্ছা, তুমি তো ভালোবেসে বিয়ে করছো। ভালোবেসে বিয়ে করা কী ভালো?
-ভালোবেসে বিয়া করলে শুধু মানুষটাই থাকে। ভালোবাসা আর থাকে না।
রিমার মুখের কথা শুনে খানিকক্ষণ থ হয়ে রইলাম। তানিশাকে না পাওয়া কী ভালোই হচ্ছে আমার জন্য। আমি কনাকে ফোন দিলাম। কনা আমার বন্ধু। আমরা একটা এক্সপেরিমন্ট করছিলাম ভালোবেসে বিয়ে করা ভালো নাকি মন্দ। ও ইডেন কলেজে পরিচিতদের মধ্যে জরিপ করেছিল। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর সিটি কলেজে। ওর রেজাল্ট আমারটার সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে। বেশিরভাগই উত্তর দিয়েছে ভালোবেসে বিয়ে করা ভালো না। আমার অফিসের এক সিনিয়র আপু শুনে তো এক ঝটকায় বলে দিলেন, ব্যর্থ একটা প্রেম ছাড়া জীবন জগন্য!
তানিশাকে না পেতে পেতে আমি যখন হতাশার শেষ সীমায় তখন রিমার এই কথা আমার মধ্যে প্রাণ ফিরে দিল। তানিশাকে বক লিস্ট থেকে মুক্তি দিয়ে ইমোতে টেকস্ট করলাম।
প্রিয় তানিশা,
আমার কাছে ভালোবাসাটাই মুখ্য, তুমি না। যে জীবনে তুমি থাকবে, অথচ তোমার ভালোবাসা থাকবে না সে জীবন আমি চাই না।
ইতি
জহির
তানিশার দেওয়া দুইটা লাভ বার্ড আর লাভ সাইনের একটা কাচের শোপিচ ছিল আমার টেবিলে। বছর কয়েক আগে উপহার দিয়েছিল। ওটা পেয়েই ওকে ভালোবাসতে উদ্ভুদ্ধ হয়েছিলাম। কেন জানি মনে হয়েছিল আমি ওকে উজাড় করে ভালোবাসি সেটা ও চায়। নইলে দুইটা পাখি আর একটা লাভ সাইনের শোপিচ উপহার দেওয়ার মানে কী। পরে প্রমাণ হয়েছে ধারণাটা ভুল ছিল। কদিন ধরেই ওটা নিয়ে খেলছিল মাহিয়া মাহি। একদিন দেখলাম ড্রয়িং রুমের কোনায় পড়ে আছে। একটা পাখি ডাল থেকে আলাদা হয়ে গেছে। আমি সুপার গ্লু দিয়ে পাখিটা জোড়া লাগিয়ে আলমারিতে তুলে রাখলাম। তানিশা না থাক, তার ভালোবাসাটুকু অন্তত থাকুক।