দু-একদিনের মধ্যেই নির্বাচন যাওয়া-না যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোট। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ২৩ দলীয় জোটের বৈঠকের পর জোটের নেতা এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব) অলি আহমদ এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এক ঘন্টা এই বৈঠক হয়। নির্বাচনে যাওয়া- না যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আব্দুল মঈন খান। এরপর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও। : অলি আহমদ বলেন, ২০ দলের অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। যদিও সরকার বলছে যে, সকলের জন্য নির্বাচনের সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মনে করি, এটা কাগজেকলমে সীমাবদ্ধ, পত্রিকার মধ্যে : সীমাবদ্ধ। এখনো সকল দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হয় নাই। : অলি বলেন, বৈঠকে দেশের নির্বাচন ও দেশে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে যাবো কি যাবো না এ ব্যাপারে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আগামী দুই দিনের মধ্যেই ২০ দলীয় ঐক্যজোট আমাদের মূল দল বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করব। তিনি বলেন, জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হলো আমাদের প্রাধান্য, তাঁকে মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে আসবে। : দুই দিন পর আপনারা সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলছেন অথচ নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধ্যকতা অনুযায়ী জোটগতভাবে নির্বাচনের বিষয়টি কালকের মধ্যে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনাদের অবস্থান বলুনÑ এমন প্রশ্নের জবাব এলডিপির প্রধান বলেন, আমরা যারা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এই জোটে আছি তারা কমিশনের কাছে চিঠি লিখব। চিঠির ভাষা এমন হবে যে, যদি আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি সেক্ষেত্রে আমাদের দলীয় প্রতীকে অনেকে নির্বাচন করবে। আবার অনেকে ২০ দলের মূল দল বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবে। যদি আমরা নির্বাচন করি। এক প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, যদি নির্বাচন গেলে আমি আমার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করব। : অলি আহমদের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের আবদুল হালিম, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির ড. রেদোয়ান আহমেদ, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাসমিয়া প্রধান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নূর হোসেইন কাসেমী, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ জাতীয় দল সৈয়দ এহসানুল হুদা, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ, রিটা রহমান, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সদ্য ২০ দলে যুক্ত হওয়া পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের আহ্বায়ক রিটা রহমান, জাতীয় জনদলের চেয়ারম্যান ইহসানুল হুদা ও মাইনেরটি পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুপ্রীতি কুমারও ছিলেন। : উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। তফসিল অনযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিন ১৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে ২২ নভেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন ২৯ নভেম্বর। আর ভোট হবে ২৩ ডিসেম্বর। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ যে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছিল তা ফলপ্রসূ হয়নি বলে দাবি ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের।দিনকাল রিপোর্র্ট :