কোনো শক্তি নেই ভোটে হারাতে পারে : জয়

0
225
Print Friendly, PDF & Email

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘আমি জরিপ করে দেখেছি, বাংলাদেশের মানুষ এখন আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেই। বিএনপি-সুশীল-জামায়াত এক হয়েও এখন বাংলাদেশের কোনো শক্তি নেই আওয়ামী লীগকে ভোটে হারাতে পারে। তাই আমাদের আর কোনো ভয় নেই। আওয়ামী লীগের কোনো ভয় নেই। দেশ এগিয়ে এসেছে। দেশের মানুষ সুখে ও শান্তিতে আছে। আওয়ামী লীগ এখন কাউকেই ভয় পায় না। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আওয়ামী লীগ এ অবস্থানে এসেছে। আওয়ামী লীগকে সরানো এত সহজ নয়।’

গতকাল বিকালে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিষয়বস্তু তুলে ধরেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত। ‘২১ আগস্ট : বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের পরিচালক কানতারা খান। এতে বক্তব্য দেন গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমানের মেয়ে তানিয়া রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে দেশ থেকে বিদেশে পালিয়ে যেতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এক-এগারোর সময় মইনুল হোসেন ছিলেন ওই সরকারের আইনবিষয়ক উপদেষ্টা। ২১ আগস্টের মূল হোতা তারেক রহমানকে সে সময় সামরিক বাহিনী গ্রেফতার করলেও তাকে তখন পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন আজকের ঐক্যফ্রন্ট নেতা মইনুল হোসেন। আজকে তারা বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। এতে এটাই প্রমাণিত হয় যে তখন থেকেই তারা তারেক রহমানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বসে আছে। তারাই সব ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত।’ তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের বিচার করেছি। ২১ আগস্টের বিচারের রায়ও বাস্তবায়ন হবে। তারেক রহমানকেও দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা দেব— এটা আমাদের ওয়াদা। যারা মানুষ পুুড়িয়েছে, জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়েছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের কোনো ছাড় হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নিতে থাকব।’ তিনি বলেন, ‘আজকে যে সুশীলরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে। আওয়ামী লীগ যদি বিএনপির মতো হতো, তাহলে কি আমরা আদালতে যেতাম? আজকে যদি আমার চরিত্র তারেক রহমানের মতো হতো, তাহলে কি খালেদা জিয়া শুধু জেলে থাকতেন? এ কথা তাদের মনে রাখা উচিত। আমাদের চরিত্র বিএনপির মতো না। আমরা খুনি না। আমরা সন্ত্রাসী দল না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে স্বাধীনতার দল।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার চার-পাঁচ বছর আগে থেকেই বাংলাদেশে আসিনি। যখন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা ও ৩০০ নেতা-কর্মীকে আহত করা হলো, এর পরই আমি রাজনীতিতে পা দিয়েছি এবং সেদিনই ওয়াদা করেছি যে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে বের করবই করব।’

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, ‘সুশীলরা নিরপেক্ষতার কথা বলে সন্ত্রাসী ও মানুষ হত্যাকারীদের নিয়ে জোট করেছে। সুশীলরা বলছেন, বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। আমি প্রশ্ন রাখি, কীসের থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করবেন? দেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে, ২১ আগস্টের মতো হত্যাকাণ্ড আর হচ্ছে না— এটা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে? উন্নয়নশীল থেকে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে— সেই মধ্যম আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে?’ আইভি রহমান ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মেয়ে তানিয়া রহমান ২১ আগস্ট ও মায়ের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘দীর্ঘ ১৪ বছর পার হয়ে গেছে কিন্তু আমার মায়ের চলে যাওয়াটাকে আমরা এখনো মেনে নিতে পারিনি। একটি সন্ত্রাসবিরোধী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে আমার মাসহ ২৪ জন কেন চলে যাবেন? আম্মার কথা মনে হলেই তার রক্তাক্ত চেহারা আমাদের সামনে ভেসে ওঠে। আইভি রহমানকে সিএমএইচে রাখা হলে সেখানে পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি।’ তানিয়া বলেন, ‘সেদিন তারা যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল তা চাপা দিতে তারা অনেক প্রহসনের ঘটনা ঘটিয়েছে। আম্মার মাথার কাছে বসে দোয়া করতে দেওয়া হয়নি। একটা সরকার কতটা অমানবিক হলে এ ধরনের কার্যক্রম করতে পারে!

শেয়ার করুন