বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে

0
177
Print Friendly, PDF & Email

চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ২টা ১৫ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়াকে রেডিওলজি বিভাগে নেয়া হয় সিটি স্ক্যান করার জন্য। গত ৬ অক্টোবর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা কর্তৃপরে তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। : সিটি স্ক্যান করার কারণ জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। ভর্তির পর এখন পর্যন্ত তার অবস্থার অবনতি হয়নি। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা প্রতিদিন তাকে দেখছেন। নতুন করে কোনো সমস্যা হয়নি। : আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, চিকিৎসকদের সুপারিশ অনুযায়ী সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। কাল (আজ বৃহস্পতিবার) এর রেজাল্ট পাওয়া যাবে। বুকের ব্যথায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিধায় তার সিটিস্ক্যান করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল আল হারুন জানান, বুকে কোনো ব্যথা হয়নি। তার ফুসফুসের সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। তার সিটি স্ক্যানটি করা হয়েছে কেবিন ব্লকের নিচতলায়। পরে তাকে আবার ৬১২ নাম্ব^ার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। : জানা গেছে, সিটিস্ক্যান করা নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্টির ঘটনা ঘটে। গতকাল রেডিওলজি বিভাগে সিটিস্ক্যানের ডিউটি ছিল রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলামের। কিন্তু পরিচালক তাকে সরিয়ে দিয়ে একই বিভাগের অনেক জুনিয়র একজন ডাক্তারকে দিয়ে সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। : এ ব্যাপারে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, কোনো ব্যক্তি বিশেষকে নয় পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দিতে হবে। অধ্যাপক নজরুল ইসলামের ডিউটি থাকা সত্ত্বে¡ও তাকে সরিয়ে দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারকে দিয়ে একজন হাই প্রোফাইলের ব্যক্তির সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। এটা মোটেও উচিত হয়নি, এর মাধ্যমে একটি খারাপ নজির স্থাপিত হয়েছে। অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, এটা যদি এমন হতো যে, ডা. নজরুল ইসলামের পরিবর্তে রেডিওলজি বিভাগের প্রধানকে দিয়ে সিটিস্ক্যান হয়েছে তা মেনে নেয়া যেত। : হাই কোর্টের নির্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন হয়েছে। নতুন করে তিনজন সদস্য এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বাদ পড়েছেন আগের বোর্ডের তিন জন। অর্থাৎ তিনজন চিকিৎসককে বাদ দিয়ে তাদের স্থানে নতুন তিনজনকে নিয়ে মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠিত হয়েছে। : বোর্ডের প্রধান হিসেবে আগের মতোই রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী। শনিবার দুপুরে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তির পর হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠনের কথা সাংবাদিকদের জানান। : তবে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর ফিজিওথেরাপি দেয়ার কারণে খালেদা জিয়ার কাঁধ ও হাতের ব্যথা কিছুটা কমেছিল। কিন্তু গত দুদিনে তা আবারও বেড়েছে । তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের খালেদা জিয়ার আশেপাশেও যেতে দেয়া হয় না। অন্য চিকিৎসকদের কাছ থেকে তার শারীরিক অবস্থা জেনে নিতে হয়। তবে খালেদা জিয়ার যা শারীরিক অবস্থা তাতে হাসপাতালে তাকে দীর্ঘসময় থাকতে হবে বলেই মনে হচ্ছে। তিনি কয়েক দফায় সর্দি জ্বরে ভুগেছেন। বয়সও বেড়েছে। তাই তার বুকে কোনো ইনফেকশন হয়েছে কিনা জানতেই আজ সিটি স্ক্যান করানো হয়। : হাই কোর্টের আদেশে খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিএসএমএমইউতে ভর্তি এবং তার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। শনিবারই তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে, একই দিন পুনর্গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। : কুমিল্লায় মামলা : বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কাভার্ডভ্যান পোড়ানোর অভিযোগে বিশেষ মতা আইনে করা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন না দিয়ে আপিল গ্রহণ করেছেন হাইকোর্টে। গতকাল বুধবার ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন। : এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ কে এম সামছুল আলম। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবীরা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সকালে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার হায়দারপুল এলাকায় পণ্যবাহী একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয় হরতালের সমর্থকরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই দিন দুপুরে ওমর ফারুক মিয়াজী নামের এক শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়াসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। তিনি ওই মামলার ৩২ নম্বর আসামি। : :

শেয়ার করুন