ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিজয় অনিবার্য

0
141
Print Friendly, PDF & Email

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ‘ঐক্যবদ্ধ’ আন্দোলনের জন্য সকলকে প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, স্বৈরাচার থেকে মুক্ত হতে হলে, স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হতে হলে, জনগণের ক্ষমতার মালিকানা ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকলকে মাঠে নামতে হবে। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, ঐক্যফ্রন্টে ঐক্যবদ্ধ হোন। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। বাংলাদেশের জনগণের জয় হবেই। আসুন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা আবার দেশে মালিক হবো, এই রাষ্ট্র আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনবো। জনসভা থেকে আবারো কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তির দাবিও জানান ড. কামাল হোসেন। : তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিকে মুক্ত করতে হবে। সরকারকে বলতে চাই তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দিন, সেনাবাহিনী মোতায়েন করুন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, ইভিএম বাতিল করুন, নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন দিন। ইভিএম চলবে না, ইভিএম দিয়ে ডিজিটাল চুরি করবেন? সেটি জনগণ হতে দেবে না। : গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেট জেলা রেজিস্ট্রারি মাঠে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি এবং সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জনসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সিলেট শাখার উদ্যোগে এ জনসভা হয়। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। জনসভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহমদ আলী। : এর আগে ২১ অক্টোবর সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় মহানগর পুলিশ। সমাবেশের অনুমতির সাথে ১৪টি শর্ত জুড়ে দেয় পুলিশ। তবে অনুমতির পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহরিয়ার হোসেনসহ ৩০ নেতাকর্মীকে আটক করে। সর্বশেষ ১০ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই মাঠে সমাবেশ হয়েছিল। গতকাল সকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সিলেটে শাহজালাল ও শাহ পরান মাজার জিয়ারত ও জনসভা শুরু করে। এটি ছিল ফ্রন্টের প্রথম রাজপথের কর্মসূচি। : গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণের ঐক্য অবধারিত। আমরা ক্ষমতায় নয় জনগণের অধিকার আদায়ে ঐক্য করেছি। আমরা ৭ দফা দাবি দিয়েছি। সেগুলোর জন্য জনগণকে সুসংগঠিত করুন। তাদের কাছে আমাদের দাবিগুলো পৌঁছে দিন। এটিকে আপনারা হালকাভাবে নেবেন না। আপনারাও বুঝতে পেরেছেন সরকার আপনাদের বঞ্চিত করেছে। : সংবিধান প্রণেতা বলেন, আমাদের ৭ দফায় আছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তার মুক্তিতে জনগণের সমর্থন রয়েছে। জনগণ এক হলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, আমরা ঐক্য করেছি দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে। আমরা এদেশের মালিক হতে হলে আমাদের দাবি আদায় করতে হবে। জনগণ দেশের মালিক না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না, স্বৈরাচার চেপে বসে। : ড. কামাল বলেন, সরকার শুধু বলে উন্নয়ন উন্নয়ন উন্নয়ন! কাদের উন্নয়ন? যারা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে তাদের উন্নয়ন? তাই আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। জনগণের বিজয় অনিবার্য। এটি কেউ ঠেকাতে পারবে না। : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ যে লড়াই শুরু হয়েছে সেই লড়াইয়ের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, ভোটোর অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। সকল রাজবন্দিকে মুক্ত করতে হবে। : তিনি বলেন, সরকারকে বলতে চাই তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দিন, সেনাবাহিনী মোতায়েন করুন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, ইভিএম বাতিল করুন, নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন দিন। ইভিএম চলবে না, ইভিএম দিয়ে ডিজিটাল চুরি করবেন? সেটি জনগণ হতে দেবে না। : বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ঐক্য জনগণের অধিকার আদায় করতে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে, কথা বলার অধিকার আদায় করতে। আজ আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, জনগণকে মুক্ত করতে হবে, কথা বলার অধিকার আদায় করতে হবে। : জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আজ দেশ ডাকাতের হাতে পড়েছে তাই দেশকে বাঁচাতে হবে। এর থেকে বাঁচতে হলে শুধু নিজেরা মাঠে নামলে হবে না। জনগণকে মাঠে নামাতে হাবে। : তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলতে চাই- শতবাধা সত্ত্বে¡ও জনতা রাস্তায় নেমে আসছে। এ লড়াই বাঁচার লড়াই, ভোটের লড়াই, গণতন্ত্রের লড়াই। এ লড়াইয়ে জিততে হবে আমাদের। আজকের এই মাঠে ৬০-এর দশকে অনেক জনসভা করেছি। আজকে বক্তব্য দেবো না দেশ ডাকাতের হাতে পড়েছে। এদেরকে পরাজিত করে বিজয়ের জনসভা করবো এখানে। : তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কাল থেকে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছেন। আর একজনকে গ্রেফতার করলে জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামবো। : বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমাদের ৭ দফা এ দেশের জনগণের দাবি। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। কারণ এ সরকার গায়ের জোরে সরকার, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। আবারও ভোটার ছাড়া নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। : তিনি বলেন, এ সরকার জনগণকে ভয় পায়। কারণ তারা এদেশের যত মানুষ গুম, খুন, দেশের সম্পদ লুট করেছে তার জবাব দিতে হবে। সেই ভয়ে ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। আপনারা যত ভয় পান না কেন জনগণের দাবি মেনে নিতে হবে। : বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোটের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতেই হবে। এছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। : বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে লাখো লাখো মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছে। কেন? আমাদেরকে বাদ দিয়ে তারা আগের মতো নির্বাচনের খেলা খেলতে চায়। সরকারকে বলছি, কেন আপনারা জনগণকে ভয় পান। ভয় পান এই জন্য যে, সিলেটের কৃতি সন্তান ইলিয়াস আলীসহ শত শত নেতা-কর্মীকে গুম করেছেন তার জবাব দিতে হবে। এই সরকার ভয় পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ লুট করেছে, স্বর্ণ লুট করেছে, কয়লা লুট করেছে, শেয়ারবাজার লুট করেছে তার জবাব দিতে হবে। : বিএনপি স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আজ জাতীয় ঐক্যের যাত্রা শুরু হলো। আমরা ঐক্য তৈরি করেছি কারণ যারা ক্ষমতায় আছে তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাই তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তাই সরকারের বিরুদ্ধে সব গণতন্ত্রকামী দল ও মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাদের পতন অনিবার্য। তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলবো আপনারা সংলাপে আসুন, আলোচনায় না আসলে কিভাবে সংলাপে বাধ্য করতে হয় তা জনগণ জানে। আপনারা বড় বড় মেগা প্রজেক্টের নামে বড় বড় দুর্নীতি করেছেন। তাই সব দুর্নীতির বিচার করতে হবে। আমরা ক্ষমতায় আসলে সরকারের সব দুর্নীতির বিচার করবো ও দুর্নীতি লুটপাটের শ্বেতপত্র প্রকাশ করবো। : বিএনপির আরেক সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ৭ দফা দাবিতে আমাদের আজকের জনসভা। আমরা এ সব দাবি আদায়ে জাতীয় ঐক্য গঠন করেছি। আর আামদের দাবিগুলো শুধু আমাদের নয় গোটা দেশের। কারণ দেশের মানুষ ভোট দিতে চায় তবে তা নৌকায় নয়। : তিনি বলেন, নৌকা ডুবে গেছে আওয়ামী লীগের সে বিষয়ে খবর নাই। থাকলে তারা আবারও ১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন করতে চাইতো না। মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু ভোট হয় না, তার অধীনে ভৌট চুরি হয়। তাই শেখ হাসিনার অধীনে কোনো ভোট হবে না এ দেশে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আন্দোলন ছাড়া দাবি আদায় হয় না। তাই আপনাদের আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে। আপনারা আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গেলে আক্রমণ আসবে। সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় হবে। কারণ বাংলাদেশোর মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামকে ভয় পায় না। মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যায় না। : বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা একটি ইতিহাস রচনা করতে সিলেটে এসেছেন। আজ দেশে গণতন্ত্র মৃত। দেশে আইনের শাসন, বিচার ব্যবস্থা, মানবাধিকার নেই। সব ধ্বংস করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। : তিনি বলেন, আমরা বৃহত্তর ঐক্য গঠে তুলে আওয়ামী লীগকে একঘরে করে দেব। আমরা রাজপথে আছি, দাবি আদায় না করে রাজপথ থেকে ঘরে ফিরে যাবো না। আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে বিদায় করবো। : : নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমাদের আজকের জনসভায় আসতে গিয়ে জনগণকে পথে পথে আটকে দিয়েছে। এর আগে ২৩ তারিখ আমাদের জনসভা করতে অনুমতি দেয়নি। মনে করেছিলো গায়ের জোরে আমাদের জনসভা আটকে দেবে। কিন্তু পারেনি। আজ (গতকাল) আমরা জনসভা করছি। : তিনি বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তাকে একটা সাজানো মামলায় কারাগরে আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের আগামী দিনের জন্য শপথ নিতে হবে কিভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যায়। বেগম খলেদা জিয়াকে মেরে ফেলার ব্যবস্থা করেছে হাসিনা সরকার। তিনি এখন হাঁটতে চলতেও পারেন না। : মান্না বলেন, বর্তমান সরকার চোর-ডাকাতের মত ভোট চুরি করে নিয়ে গেছে। কিন্তু সিলেটে পারেনি। সিলেটের জনগণ তাদের ভোট দিয়ে জনগণের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে। : তিনি বলেন, আজ আমাদের শপথ নেয়ার সময়। তাই বলতে চাই- এবার কেউ ওয়াক ওভার নিয়ে ক্ষমতায় থাকবে সেটি কখনও পূরণ হবে না। ওয়াক ওভার নিয়ে কাউকে ক্ষমতায় থাকতে দেবো না। তাই আমাদের সবাইকে লড়াই করতে হবে। সরকারকে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে। আমাদের সাথে কথা বলেন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। না হলে কিভাবে ক্ষমতা থেকে নামাতে হয় তা আমরা জানি। আমরা একদিনের ভোটের অধিকার বা গণতন্ত্র চাই না। প্রতিদিন গণতন্ত্র চাই। এ মঞ্চে সব দলের লোক আসবে এক স্বাধীনতা বিরোধীরা ছাড়া। : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমি ’৭৫, ২১ আগস্ট চাই না। আমি জিয়াউর রহমান হত্যার মতো কিছু চাই না। আমি চাই সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবে। আমি প্রস্তাব রাখবো, আসেন আমরা সবাই বনানীতে তাজউদ্দীন সাহেবের কবর জিয়ারত করি, এরপর কোকোর কবর জিয়ারত করে চন্দ্রিমা উদ্যানে গিয়ে জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করি। এরপর বত্রিশ নম্বরে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য আইনের সংস্কার করতে হবে। কামাল হোসেন, মইনুল হোসেন এটা ভালো করতে পারবেন। : জাতীয় ঐক্যের অন্যতম নেতা সুলতান মো. মনসুর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে যুক্তফ্রন্ট নেতা আবদুল মালেক রতন বলেন, সারা পৃথিবীর সব সরকার, সব দল শান্তি চায় বলে মনে করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এই জোটটির নেতাদের মতে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চান সহিংসতা। সরকার উসকানি দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চায়। আপনার পাতা ফাঁদে পা দেবো না। হজরত শাহজালাল, শাহ পরান ও ওসমানীর কবর জিয়ারত করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শপথ নিয়েছেন। এই যাত্রা সফল হবে। আমরা পরাজিত হবো না। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি বলেন, আজকে থেকে সরকারের ভাটার দিন শুরু হলো। : এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ সমর্থন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আজকে এই সমাবেশ থেকে অলি আহমেদের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে পূর্ণাঙ্গ সমর্থন জানাই। যে দাবি নিয়ে ঐক্য হয়েছে, তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।’ : জনসভায় জনতার ঢল : সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের সময় বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনসহ ৭ দফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিলেটে জনসভায় জনতার ঢল নামে। গতকাল বুধবার পুলিশি বাধা, হামলা-গ্রেফতার উপেক্ষা করে জনসভায় যোগ দেয় বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছাড়াও সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন পেশা-শ্রেণির মানুষ জনসভায় যোগ দেয়। সিলেট মহানগর ও জেলা, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট দক্ষিণ উপজেলা, গোলাপগঞ্জ, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, ওসমানী নগর, সদর উপজেলা, জৈন্তাপুর, গোয়াইন ঘাট, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানী বাজার, ছাতক, দোয়ারা, জগন্নাথপুর, জামালগঞ্জ, সারলা, দিরাই, কমলগঞ্জ, ঝুড়ি, বড় লেখা থেকে জনগণ দুপুরের আগেই মাঠ প্রাঙ্গণে আসতে থাকে। অনেকে আবার আগের দিন বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেও সিলেট শহরে অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার আগেই নেতাকর্মীরা মাঠে প্রবেশ করতে থাকে। এক সময় রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাপিয়ে পুরো এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। সমাবেশস্থলে উপস্থিত হওয়া সকলেই দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচারী সরকারের বিদায় চাই, নিতে হবে, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’, ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘আমার নেত্রী আমার মা বন্দি থাকতে দিবো না’ ইত্যাদি সেøাগান দিতে থাকে। : সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলার সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ ও মহানগরের নেতা আজমল বখত সাদেকের পরিচালনায় জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুর রহমান, খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, ফজলুল হক আসপিয়া, এনামুল হক চৌধুরী, এম এ হক, তাহমিনা রুশদির লুনা, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, আওম শফিকউল্লাহ, একে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী, বেলায়েত হোসেন, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জিল্লুর রশীদ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আবম মোস্তফা আমিন প্রমুখ। : ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এম এ রকীব, খেলাফত মজলিশের অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের শাহীনুর পাশা চৌধুরী, কলাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, বৃহত্তর সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আখতার, কলিমউদ্দিন আহমেদ মিলন, দিলদার হোসেন সেলিম, জিকে গউস, বিএনপির জেলা সভাপতি আবদুল কাহের চৌধুরী শামীম, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি, জেলা সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ প্রমুখ নেতা বক্তব্য রাখেন। : জনসভায় বিকল্পধারার মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, রফিক শিকদার, গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি ইব্রহিম, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, সহ-সভাপতি শায়রুল কবির খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদারসহ লক্ষ্যাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। : জনসভা উপলক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সড়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। : : রফিক মৃধা ও মহসিন সিলেট থেকে

শেয়ার করুন