পবিত্র রমজান মাসে ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অভিযান চললেও, ঈদ শেষে তা থেমে যায়। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেজাল খাদ্য বন্ধ করা না গেলে আগামী প্রজন্মের জন্য ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে।
আর ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ বলছে, এর বিরুদ্ধে তাদের নিয়মিত অভিযান চলবে। পবিত্র রমজান এলেই, ফুটপাথ থেকে শুরু করে, নামি-দামি হোটেল-রেঁস্তোরায় অভিযান চালায়, বিভিন্ন সংস্থা। ভেজাল খাবার রাখায় জরিমানা থেকে শুরু করে জেলও হয় অনেকের। এতে অসাধু ব্যবসায়ীরা চাপে থাকায়, সাধারণ মানুষও কিছুটা স্বস্তিতে থাকেন। কিন্তু রমজান শেষে অভিযান থেমে গেলে যেই সেই অবস্থা!
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম তিনি বলেন, প্রতিটি দোকানে গিয়ে মনিটরিং করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আমাদের এতো লোকবল নেই। প্রত্যেক ব্যবসায়ীর নাগরিক হিসেবে কিছু নৈতিকতা রয়েছে। সেই জায়গা থেকে তাদের সৎ থাকা উচিৎ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেজাল বন্ধ করতে হলে, আইন কঠোর করার পাশাপাশি, নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে।
ঢাবির পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. নাজিমুল হক ভূঁইয়া বলেন, সরকার যদি ভেজাল খাদ্যের জন্য কঠোর আইন প্রনয়ন করে, তা হলে অনেকটা ভেজাল বন্ধ হবে। উন্নত দেশগুলোতে ভেজাল খাদ্যের জন্য মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। আইনের কঠোর প্রয়োগ থাকলে খাদ্যের ভেজাল দেয়া কমে যাবে। তা না হলে সাধারণ মানুষ ভয়ংকর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্ব এক তেল একবার ব্যবহার করা হলে তা ফেলে দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে তেলে খাবার ভাজতে ভাজতে তেল পুড়ে যায়। সেই তেলই আবার ব্যবহার করা হচ্ছে। এইজন্য পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব লোকেরা হার্টের সমস্যায় পড়ছেন বেশি।
‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ বলছে, এখন থেকে প্রতিদিন ভেজালের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চলবে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মাহাবুব কবির বলেন, আমাদের লোকবল কম। আমরা আমাদের চাহিদামতো লোকবলের কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। লোকবল হলেই চাহিদা মতো আমরা সব কিছু করতে পারবো। তাহলে আমরা অন দ্যা স্পটে যেকোনো অভিযোগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবো।
পরিসংখ্যান বলছে, ভেজাল খাবারের কারণে বর্তমানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০-২২ শতাংশ লোক হৃদরোগে এবং ১০-১২ লাখ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। তাই, ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন, সে আশা সবার।
জুবায়ের সানি
|