চ্যারিটেবল মামলার রায় আগেই লেখা হয়েছে : বিএনপি

0
154
Print Friendly, PDF & Email

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো মিথ্যা ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না করেই সরকারের হুকুমে নিম্ন আদালত আরেকটি ফরমায়েশি রায়ের দিন ধার্য করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ২০ দল অটুট আছে। এ জোট ভাঙছে না। ব্যক্তিস্বার্থে দুই-একজন জোট থেকে চলে গেলে তার কোনো প্রভাব জোটে পড়বে না। বিএনপির কি হবে, না হবে, অন্য কোথাও গেলেও কি লাভ হবে। এসব ভেবে কিছু মানুষ নৈতিকতার দিক থেকে আপস করেই চলে গেছে। এ আপস স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়ও তো হয়েছে? যারা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। : রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো মিথ্যা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না করেই সরকারের হুকুমে আরেকটি ফরমায়েশি রায়ের দিন ধার্য করেছেন নিম্ন আদালত। যেটি সম্পূর্ণরূপে বেআইনি ও নিম্ন আদালতে সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ। অসুস্থ ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য চলার বিধান পৃথিবীর দেশগুলোতে নেই। বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার বেআইনি খারাপ নজির সৃষ্টিকারী সরকার। তারা জিঘাংসার নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে, এটিও তার একটি। যেমন বন্দুকের জোরে দেশের প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছাড়তে ও পদত্যাগ করতে বাধ্য করা এবং বিচারক মোতাহার হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার নজির সারা দুনিয়াতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তেমনি অসুস্থতাজনিত কারণে বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে রায় দেয়া হলে তাও হবে পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এই রায় হতে যাচ্ছে তুষের আগুনের মতো জ¦লতে থাকা প্রতিহিংসা পূরণের চাঞ্চল্যে। : চ্যারিটেবল মামলার রায় আগেই লেখা হয়েছে : নজরুল : আগামী ২৯ অক্টোবর ঘোষণা হতে যাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় আগে থেকেই লিখে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসকাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ হাদীর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলে এ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। : নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামী ২৯ তারিখ রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯ তারিখ কেন? তারা চাইলে কালকেও রায় দিতে পারেন। কারণ রায় তো আগেই লেখা হয়ে গেছে। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা যারা লুট করেছে, তাদের কী বিচার হয়েছেÑ এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তাদের বিচার দ্রুত করার সরকারের কোনো আগ্রহ নেই। আর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবিল ট্রাস্টের ৩ কোটি টাকার অভিযোগ। এই রায় আগামী ২৯ অক্টোবর দেয়া হবে। কিন্তু তিনি অসুস্থ। এ কারণে জেলাখানা, হাসাপাতাল এবং সরকারি ডাক্তারদের সুপারিশে হাসপাতালে ভর্তি আছেন বেগম খালেদা জিয়া। আত্মপ সমর্থনের জন্য কোর্টে যাওয়ার সামর্থ্য নেই তাঁর। তবে সরকারের দাবি প্রেেিত আদালত বলে দিয়েছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে। তবে আমাদের আইনজীবীরা বলেছিলেন যে, তাঁকে তো আত্মপ সমর্থনের সুযোগ দেবেন। কিন্তু কোনো কথা শোনা হয়নি। : নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান অবস্থা চলতে পারে না। এমন একটা বাংলাদেশের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করি নাই। ৫ কোটির টাকার মালিক এখন ৫ হাজার কোটি টাকার মালিক। আর ৫০০ টাকার মালিক এখন গরিব। এই চরম বৈষম্যের দেশ আমরা চাইনি। এর পরিবর্তনের পথ হচ্ছে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণরায়। এ জন্য আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। ইভিএম-এর বিষয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ভারতে একটা ইভিএম কিনতে বাংলাদেশের টাকায় ২১ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়। আমাদের দেশে বুয়েট ইভিএম মেশিন তৈরি করেছে। এর দাম ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকা। আর এই ইভিএম মেশিন আমাদের সরকার বিদেশ থেকে কিনছে ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকায়! অর্থাৎ ১১ গুণ বেশি দামে। এখন তো লুটপাট ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। সরকারের এর সন্তোষজনক জবাব দেয়া উচিত। বাংলাদেশে বিনিয়োগ না হলেও হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে আজকাল রাস্তাঘাট নির্মাণে যে ব্যয় ইউরোপীয় দেশগুলো থেকেও বেশি। যা এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৭ সালে ৬ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে, এ বিষয়ে তদন্ত করা হলেও তা প্রকাশ করা হয় না। : আরেকবার জোর করে মতায় আসতেই সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না সরকার দাবি করে তিনি বলেন, বর্তমান মতাসীন সরকার ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর একটা দাবি, নির্দলীয় নিরপে সরকারের অধীনে নির্বাচন। কারণ এই সরকারের অধীনে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন পর্যন্ত সুষ্ঠু হয় না। আমাদের অধিকার এমনই কেউ দিয়ে দেবে না। জোর করে আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে। নির্বাচনের বাইরে রাখতেই বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করতে হবে। বিএনপির এ নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণরায় সৃষ্টি করা। আর সে জন্য জনগণের কাছে যেতে হবে। : ড্যাবের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ড্যাবের উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. আবদুর মান্নান মিয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ড্যাব নেতা অধ্যাপক আশরাফ হোসেন, অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. বজলুল গনি ভূঁইয়া, ডা. সাইফুল ইসলাম সেলিম, ডা. তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ। : : দিনকাল রিপোর্ট :

শেয়ার করুন