জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আগামী ২৯ অক্টোবর রায় ঘোষণা করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করেন। আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও দুদকের পে অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল উপস্থিত ছিলেন। : এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, হাইকোর্ট বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম চালাতে পারবে বলে যে আদেশ বহাল রেখেছেন আমরা তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাব। বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আছেন তাই আদালতে আসতে পারছেন না। তাই মামলার কার্যক্রম মুলতবি রাখার আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তা নাকচ করে রায়ের দিন দিয়েছেন। : অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মামলার কার্যক্রম চালাতে কোনো বাধা নেই। উনারা যেহেতু বক্তব্য দিবেন না তাই বলা যায় তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তাই আদালত রায়ের দিন ধার্য করুক। এই আবেদনের পরিপ্রেেিত আদালত রায়ের জন্য আগামী ২৯ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। : খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণা বেআইনি : আইনজীবী : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণার যে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে তাকে ‘বেআইনি’ বলে মন্তব্য করেছেন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান রায়ের এ দিন ধার্য করার পর সাংবাদিকদের কাছে আইনজীবী এ মন্তব্য করেন। ন্যায়বিচার পাননি জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। সেই সুযোগ না দেয়ার কারণে বেগম খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার আজকের যে তারিখ দেয়া হয়েছে, আমরা মনে করি, এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনিভাবে দেয়া হয়েছে। আইনজীবী আরো বলেন, আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে উচ্চ আদালতে গিয়েছিলাম। ওখানেও ন্যায়বিচার পাইনি। আবারও আমরা আপিল বিভাগে যাব, সেখান থেকে কী রায় আসে দেখি। : অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, আবারও বলছি, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে আমরা আপিল বিভাগে যাব। এখন উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য আজকের একটি অর্ডার এবং আগের একটি অর্ডার নিতে হবে যে আমাদের কোনো সুযোগই দেয়া হচ্ছে না। আর্গুমেন্ট এবং যুক্তিতর্ক করার কোনো সুযোগ না দেয়ার কারণে আমরা আজকের আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। : ২০১১ সালের ৮ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। মামলাটিতে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি। মামলাটিতে বেগম খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় চার্জ গঠন করেন। : এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাঁকে ওইদিন বিকেলে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়া জামিন পেলেও নতুন নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাঁকে জামিন দেননি। সম্প্রতি তাঁকে চিকিৎসার জন্য রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। : : :
দিনকাল রিপোর্ট