ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে অব্যাহত বৃষ্টি ও উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপে নতুন করে ভয়াবহ ভাঙন ধরেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন এবং চলাচলের রাস্তা বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে টেকনাফের উপজেলা প্রশাসন শাহপরীর দ্বীপের ভাঙনকবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। নতুন করে শাহপরীর দ্বীপ ভাঙনে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, দ্বীপের বেড়িবাঁধটি সম্পূর্ণ না হওয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে শাহপরীর দ্বীপ এলাকা পানিবন্দী হয়ে থাকে। যার কারণে মাটিগুলো নরম ছিল।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শাহপরীর দ্বীপ আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ সোনা আলী জানান, প্রধানমন্ত্রী শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ১০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন গত বছর।
এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই বাঁধের কাজ চলছে এখন। বেড়িবাঁধের কাজ প্রায় এক কিলোমিটার শেষ হয়েছে। আরও দুই কিলোমিটার বাঁধ এখনও অরক্ষিত রয়ে গেছে। অরক্ষিত অংশ দিয়ে গেল দুইদিন ধরে ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়া, জাইল্যাগোদা ও দক্ষিণপাড়ার শতাধিক ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
ঘরছাড়া মানুষগুলো কোনও জায়গা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজে দিন পার করছে। বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমাকে অবহিত করেছি।তিনি দ্রুত সাহায্য পাঠানো হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি আরও জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের ঠিকাদার আন্তরিক হলে দ্বীপের দক্ষিণ অংশের ক্ষয়-ক্ষতি অনেক রোধ করা সম্ভব হতো। বর্তমানে বিপদকালীন সময়ে সেখানে ভালোভাবে জিও ব্যাগ দিলে এলাকাগুলো সাগরের জোয়ারের থাবা থেকে রক্ষা পাবে।
এদিকে উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপে নতুন করে ভয়াবহ ভাঙনের খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল হাসান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা গতকাল বৃহষ্পতিবার বিকেলে শাহপরীর দ্বীপ পরিদর্শনে যান।
এসময় তিনি বলেন যাদের ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে তাদের বসতভিটার জমি যদি খতিয়ানভুক্ত হয়ে থাকে তাদের সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে বসতি করার সুযোগ দেয়া হবে। যাদের কাগজপত্র নেই তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে বিলীন হওয়া শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়া এলাকার একটি মসজিদসহ প্রায় ১০টি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান এ প্রতিবেদককে জানান, আগে থেকে পানিবন্দি থাকায় মাটিগুলো ভেজা ছিল।এরই প্রেক্ষিতে সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে। সেইসঙ্গে চার পরিবার, একটি মসজিদ ও মাদরাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এ মসজিদ-মাদরাসাটি আগে থেকেই ক্ষতিগস্ত ছিল।
টেকনাফ প্রতিনিধি
|