জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আপিলের শুনানি আগামী রবিবারের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পে অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ। গত ১২ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেেিত জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু অন্যান্য মামলায় জামিন না পাওয়ায় এখনো কারাগারে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। : মানহানির দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ ১ নভেম্বর : : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার দুই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা-সংক্রান্ত আদেশের জন্য ১ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর এ দিন ধার্য করেন। গতকাল আদালতে মানহানির দুই মামলায় গেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক নথি পর্যালোচনা করে আদেশ পরে দেবেন বলে নতুন তারিখ ঠিক করেছেন। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর : হাকিমের আদালতে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী মামলাটি করেছিলেন। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা চান নাই। তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব। জেনারেল জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ায় এ দেশের জনগণ যুদ্ধে নেমেছিল।’ বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উন্নয়নের নামে চলছে দুর্নীতি ও লুটপাট। দলীয় লোকদের জঙ্গি বানিয়ে নিরীহ লোকজনকে হত্যা করছে, ধর্মলঘুদের বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট ও হত্যা করছে। পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিরোধী দলসহ ভালো ভালো লোককে গ্রেফতার করে গুম ও হত্যা করছে।’ বেগম খালেদা জিয়ার এসব বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের মানহানি হয়েছে দাবি করে মামলাটি করেন এ বি সিদ্দিকী। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ঢাকা মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে নালিশি মামলাটি করেন। পরে বিচারক মামলাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে অনুমতি নিয়ে শাহবাগ থানার একজন পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। : মামলার আরজি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের শুভ বিজয়ার অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সংপ্তি বক্তব্য দেন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেতার মুখোশ পরে আছে। আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী।’ বিএনপি চেয়ারপারসন আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব ধরনের মানুষের ওপর আঘাত করে। আর লোক দেখানো ধর্মনিরপেতার কথা বলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দখল করে নেয়। ধর্মনিরপেতার মুখোশ পরা এই জবরদখলকারী সরকারের হাতে কোনো ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয়।’ এর আগে গত ৩০ জুন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস। : : : দিনকাল রিপোর্ট :