সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের— ফাইল ছবি
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যত নালিশ ও যত নাশকতার পরিকল্পনা করেন, যত সন্ত্রাস চালান না কেন, কোনো কাজ হবে না। ক্ষমতার মঞ্চে পরিবর্তন চাইলে নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’
আওয়ামী লীগ ঘোষিত সপ্তাহব্যাপী নির্বাচনী গণসংযোগ কর্মসূচির শেষ দিনে রোববার রাজধানীর উত্তরা আজমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আমির কমপ্লেক্স এলাকায় আয়োজিত গণসংযোগ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন আগামী ২৭ জানুয়ারির আগে যে কোনো দিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার।
তিনি বলেন, অক্টোবর মাসে কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে না। সরকার যা আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই সরকারই থাকবে। তবে সরকার রুটিনওয়ার্ক করবে, দায়িত্বের ধরনও বদলে যাবে। সাধারণ দায়িত্ব, রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। হয়তো সরকারের আকার একটু ছোট হবে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনকালীন সরকার হতে পারে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হোন, অক্টোবর মাসে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন পর্ব শুরু করে দিয়েছে।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপির খবর কী? আছে? অক্টোবর কবে হবে? আগস্ট মাসে বলে এক মাসের কথা। সেপ্টেম্বর মাসে বলে এক মাসের কথা। সেপ্টেম্বর গেল, এখন বলে এক মাসের মধ্যে আন্দোলন হবে। দেশের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যাবে, বিশ্বাস করে মানুষ? বহুরূপী ব্যারিস্টারের কথা মানুষ কী বিশ্বাস করে?
জাতিসংঘের কর্মকর্তার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব যান ঘানা, তার নামে চিঠি এলো। আমি বলি এই চিঠি কী আকাশের ঠিকানায় এলো? জাতিসংঘ মহাসচিব কি আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখলেন? পরে দেখা গেল মহাসচিব নেই। একজন অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি জানালেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের নামে এই চিঠি ভুয়া। যারা জাতিসংঘ মহাসচিবের নামে এ দেশের মানুষের কাছে মিথ্যাচার করে, তারা ক্ষমতায় গেলে গণতন্ত্র নিরাপদ?’
দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা দল মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করবেন, এবার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কাউকে ক্ষমা করবেন না। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, শোডাউন করে যারা মনোনয়নের দাবি আদায় করবেন, নিজের পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান দিয়ে দাবি আদায় করবেন— সেই ধারণা যারা করছেন, তারা ভুল ভাবছেন। শোডাউনে কারও নমিনেশন হবে না। শোডাউনের নামে যারা বিশৃঙ্খলা করবেন, তাদের নম্বর কাটা যাবে। কয়েকটা সংস্থা এখানে মনিটরে আছে, কারা কী করছে, সব দেখছি। প্রার্থীদের বলব, সমর্থকদের থামান। নাহলে নম্বর কাটা যাবে।
নির্বাচন সামনে রেখে ১ অক্টোবর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে গণসংযোগ কর্মসূচি হাতে নেয় আওয়ামী লীগ। রোববার ছিল এই কর্মসূচির শেষ দিন। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত সাতদিনে ঢাকায় ২৫টি সমাবেশ হয়েছে, মানুষের ঢল নেমেছে; কিন্তু কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত কর্মীদের প্রমাণ করতে হবে আওয়ামী লীগ একটা সুশৃঙ্খল দল।
তিনি বলেন, এই ব্যানার, এই পোস্টার, এই সব বিলবোর্ড দেখে মনোনয়ন হবে না। মনোনয়ন হবে জনমতের ভিত্তিতে। শেখ হাসিনার কাছে সব প্রার্থীর আমলনামা জমা আছে। সামনে আরও ২০-২৫ দিন সময় আছে। ক্যাডারের জন্য নম্বর কিন্তু কমবে। ক্যাডারের কথায় চলে এমন নেতা আমাদের দরকার নেই। মশারির মধ্যে মশারি চলবে না। ঘরের মধ্যে ঘর করলে চলবে না। ঠিকঠাক মতো চলেন, চাঁদাবাজদের, দখলদারদের প্রশ্রয় দেবেন না। চাঁদাবাজের জায়গা আওয়ামী লীগে নেই।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, একেএম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।সমকাল প্রতিবেদক