নির্বাচনকালীন সরকার মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা এ মাসেই

0
138
Print Friendly, PDF & Email

এ মাসেই মন্ত্রীদের পদত্যাগের জন্য বলা হতে পারে। সাধারণত মন্ত্রীদের পদত্যাগের এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হয়। তবে এও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে জাতীয় সংসদের তফসিল ঘোষণার পর গঠন করা হবে নির্বাচনকালীন সরকার। ৩০ অক্টোবর থেকে তিন মাস সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতার কথা বিবেচনায় নিলে নির্বাচন কমিশন আগামী মাসের শুরুতে তফসিল ঘোষণা করতে পারে। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।

গণভবন সংশ্লিষ্ট সূত্র গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে অক্টোবরের শেষ নাগাদ নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু দলের নীতিনির্ধারকরা তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষার জন্য বলেছেন। জানা গেছে, ইসি নভেম্বরের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে। তাই যদি হয়, তাহলে নভেম্বরের শুরুতে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। আর তার এক সপ্তাহ আগে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর সবাইকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যেতে বলা হবে। যাঁরা নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবেন তাঁদের শুধু ঢাকায় রাখা হবে।

গত সরকারে ২০১৩ সালের ২০ অক্টোবর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন মহাজোট সরকারের মন্ত্রীরা। এরপর ৫ জানুয়ারির আলোচিত নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়। তার আগে ১৮ অক্টোবর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই ভাষণে তিনি সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন এবং বিরোধী দলকে (বিএনপি) ওই অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। ওই ভাষণে তিনি সংবিধানের ৭২(১) অনুচ্ছেদের পড়ে শোনান এবং ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ এর উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী সে সময় বলেছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী ২৫ অক্টোবর থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে শেষ পর্যন্ত তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সাড়া দেয়নি। এরপর ১৮ নভেম্বর নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভার নতুন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ছয়জন এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দুজন। জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিনিধিদের শপথের মধ্য দিয়েই পূর্ণতা পায় নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি জানান, অক্টোবরে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে এবং সেই সরকারের মন্ত্রিসভা সংক্ষিপ্ত হবে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ এ সরকার গঠনের সম্ভাবনার বিষয়ে বলেন তিনি। তবে গণভবন সংশ্লিষ্ট সূত্রটি দাবি করছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত নভেম্বরে গিয়ে ঠেকতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়টি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র কালের কণ্ঠকে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পূর্ব মুহূর্তের মতো এবারও জাতির উদ্দেশে রেডিও টেলিভিশনে ভাষণ দিতে পারেন। যেকোনো সময় এ ধরনের ভাষণের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ আসতে পারে। সে ব্যাপারে তারা সজাগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন নীতিনির্ধারক জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে সব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র জমা নেবেন। এরপর যাঁদের নির্বাচনকালীন সরকারে রাখা হবে তাঁদের বাদ দিয়ে বাকিদের পদত্যাগপত্র কার্যকর করা হবে।

গত নির্বাচনকালীন সরকারের সময় থাকা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া কালের কণ্ঠকে জানান, তিনিসহ মহাজোট সরকারের মন্ত্রীদের সবার পদত্যাগপত্র নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের এক সপ্তাহ আগে জমা নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ২০১৩ সালের ২০ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা নিযুক্ত হন।

শেয়ার করুন