অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আদালতে বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের মামলার রায় দেওয়ার দিন ফের পিছিয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর শিলং আদালতের ফার্স্ট ক্লাস জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এজলাসে সালাহউদ্দিনের রায় ঘোষণা হবে বলে জানা গেছে।
একটি সূত্রের বরাত দিতে ভারতের গণমাধ্যম ‘নর্থইষ্ট নাও’ জানিয়েছে শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) শিলং’এর আদালতে বিএনপি নেতার রায় ঘোষণার দিন থাকলেও বিচারক ছুটিতে থাকায় তা পেছানো হয়েছে।
এর আগেও এক দফা তারিখ পেছানো হয়েছিল। গত ২৫ জুন উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ১৩ আগষ্ট রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন। কিন্তু পরে তা পিছিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় দুই মাস পরে ১১ মে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের গল্ফ লিঙ্ক এলাকায় তাঁর খোঁজ মেলে। কিন্তু ভারতে প্রবেশের কোন বৈধ নথি না থাকায় পরদিন ১২ মে তাকে গ্রেফতার করে মেঘালয় পুলিশ। এরপর থেকে গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে সেখানেই আছেন সালাহউদ্দিন। অবৈধভাবে ভারতের অনুপ্রবেশের জন্য তার বিরুদ্ধে ১৯৪৬ সালের ভারতীয় দন্ডবিধির ১৪ ফরেনারস্ অ্যাক্টে মামলা করা হয়।
শিলং থেকে সালাহউদ্দিনকে বিপর্যস্ত অবস্থায় উদ্ধারের পরই মেঘালয় পুলিশ তাকে প্রথমে মেঘালয় ইন্সটিউট অব মেন্টাল হেলথ এন্ড নিউরোসায়েন্সস (মিমহান্স) নিয়ে গিয়ে ভর্তি করায়। কিন্তু কিডনিজনিত সমস্যা থাকায় পরে মেঘালয়ের নর্থ-ইষ্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইন্সিটিউট অব হেলথ এন্ড মেডিকেল সায়েন্সেস (নেইগ্রিমস)-এ স্থানান্তরিত করা হয় তাকে। পরে আদালতের বিশেষ অনুমতি নিয়ে গুরগাঁওয়ের মেদান্ত হাসপাতালেও তাকে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
তবে প্রথমে প্রায় এক মাস বিচারবিভাগীয় হেফাজত আর হাসপাতালে কাটাতে হলেও পরে অবশ্য শিলং থেকে তিনি বাইরে যেতে পারবেন না, সময়মতো পুলিশ সুপার বা আদালতে হাজিরা দিতে হবে-এইসব শর্তে ২০১৫ সালের ৫ জুন জামিনে মুক্তি পান। গত ২০১৫ সালের ২২ জুলাই আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় শিলং পুলিশ। তাতে বলা হয় ভারতের শিলং’এ বিএনপি নেতা ও বাংলাদেশের সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রীর উপস্থিতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি মামলা অভিযোগের বিচার এড়াতেই তিনি ভারতে এসেছেন। ২০১৬ সালের ২৯ আগষ্ট আদালতে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩১৩ নম্বর ধারার অধীনে সালাউদ্দিনের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে শুনানি চলাকালীন সিভিল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ ১০ জন সাক্ষীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়।
যদিও শুনানি প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সামনে দেশে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন সালাহউদ্দিন। ২০১৫ সালের ১০ জুন শিলং’এ গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন ‘আমি দেশে ফিরে যেতে চাই। আমার পরিবার ও সন্তানরা রয়েছে। বাংলাদেশ আমার দেশ কিন্তু ওখানে একাধিক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। ’
বিডি প্রতিদিন/দীপক দেবনাথ, কলকাতা: