তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। সন্ত্রাসী ও সহিংস উগ্রবাদীরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের বিষাক্ত বক্তব্য প্রচার করছে।’
মঙ্গলবার দুপুরে নিউ ইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের আয়োজনে ‘সাইবার নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে তথ্য নিরাপত্তার জন্য নীতিমালা তৈরিতে জাতিসংঘের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইবার জগতে সেই অর্থে কোনো সীমারেখা নেই। তথ্য-প্রযুক্তি নিরাপদ করার সামর্থ্য সব দেশের সমান নয়। তাই ডিজিটাল বিশ্ব নিরাপদ রাখতে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে জাতিসংঘকে। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো নিয়মিতভাবে সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সত্যিকার উৎস শনাক্ত করা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাইবার বিশ্বে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর দায়িত্বশীল আচরণের নীতিমালা ও মূলনীতি শর্তহীন সমর্থন পাওয়া উচিত বলেও মত দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইবার নিরাপত্তার সামর্থ্য বিনির্মাণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। উন্নয়ন সহযোগীদের এটিকে তাদের আন্তর্জাতিকভাবে নেওয়া অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সাইবার নিরাপত্তা ইকো সিস্টেম তৈরিতে কাজ করছে উল্লেখ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
একই সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘের একটি উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোকে সাইবার অপরাধের হাত থেকে বাঁচাতে জাতিসংঘকে এগিয়ে আসতে হবে। প্লেনারি সেশনে তিনি বলেন, ‘আমরা সমস্যা চিহ্নিত করতে পারলেও, পুরোপুরি সমাধান করতে পারি না। আমরা অনেক সময় হ্যাকিং আটকাতে পেরেছি, কিন্তু হ্যাকারকে ধরতে পারিনি। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিংয়ের কথা তুলে ধরে, এমন সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান, এস্তোনিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পল তিসালু, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও নিরস্ত্রীকরণবিষয়ক প্রতিনিধি ইজুমি নাকামিতসু, জাপানের সাইবার নীতিবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওতাকাও, ইউএনওআইসিটির পরিচালক সালেম আভান এবং মাইক্রোসফটের সাইবার নিরাপত্তা কৌশল ও নীতি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক অ্যাঙ্গেলা ম্যাকে।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সমাপনী বক্তব্য দেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেসের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্ব নেতারা অংশ নেন।