দিনকাল রিপোর্ট : রাজধানী ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী থেকে মঙ্গলবার বিকেলে উদ্ধারকৃত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মেধাবী ছাত্র আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফের (২১) গ্রামের বাড়ি জীবননগর উপজেলার মারুফদাহ গ্রামে চলছে শোকের মাতম। তার পরিবারের ধারণা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার পর লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলা দেয়া হয়। : জানা গেছে, আরিফুল ইসলাম মাদরাসায় পড়ার সময় ছাত্রশিবির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এবং আলোচিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের জবি শাখার যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। এতে তার পরিবারের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না বলে গ্রামবাসীর ধারণা। : মঙ্গলবার মধ্যরাতে আরিফের লাশ বহনকারী অ্যাম্ব^ুলেন্স মারুফদহ গ্রামে পৌঁছালে বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নৌপুলিশ আরিফুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে। গতকাল বুধবার সকালে গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। গ্রামবাসী জানায়, উপজেলার মারুফদহ গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন মঈনুদ্দিনের দুই ছেলে। বড় ছেলে রাশেদুল ইসলাম সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ছোট ছেলে নিহত আরিফ ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এর আগে আরিফুল ইসলাম উপজেলার নিধিকুন্ড-বাড়ান্দি মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও হাসাদাহ মডেল ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। আরিফ কোটা সংস্কার আন্দোলনের জবি শাখার যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তিনি কেরানীগঞ্জের একটি মেসে থাকতেন। বুড়িগঙ্গার তীরের একটি বাসায় টিউশনি করাতেন। সোমবার টিউশনি করার উদ্দেশ্যে তিনি মেস থেকে বের হন। এরপর রাতে তিনি আর মেসে ফেরেননি। এক পর্যায়ে আরিফের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তার মেসের অন্য বন্ধুরা জানার পর তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে বুড়িগঙ্গার এক নৌকার মাঝি আরিফের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন পায়। থানায় জিডি করা হয়। খবর পেয়ে নৌপুলিশ বুড়িগঙ্গা হতে তার লাশ উদ্ধার করে। পরিবারের ধারণা, নারী সংক্রান্ত অথবা কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন করার কারণে আরিফকে হত্যা করে তার লাশ বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয় ঘাতক দল। তবে পুলিশ তদন্ত করলে আসল তথ্য বের হয়ে আসবে বলে তার মা শাহিদা খাতুন জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই গ্রামের কয়েকজন জানান, আরিফুল ইসলাম মাদরাসায় পড়ার সময় ছাত্রশিবির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এবং আলোচিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের জবি শাখার যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তার বাবা মঈনদ্দিন পেশায় একজন কৃষক এবং কৃষি কাজের পাশাপাশি তিনি মারুফদাহ মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক। তবে গত ডিসেম্ব^র মাসে ওই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকার পে ভোট চেয়েছেন। ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রওশন আলম বলেন, জবির মেধাবী ছাত্র আরিফুল ইসলাম ছোটবেলা থেকে খুব শান্ত প্রকৃতির। তাকে কোনো ঝামেলায় জড়াতে দেখিনি। : :