চীনকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিলো রাশিয়া

0
203
Print Friendly, PDF & Email

চীনকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিলো রাশিয়া – ছবি : সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা এস-৪০০ মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পেয়েছে চীন। এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সব সরঞ্জাম বেইজিংকে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই প্রতিরক্ষাসামগ্রী দ্রুত পরীক্ষা করে দেখতে চায় বেইজিং। এই বছরের জুলাইয়ের শেষ বা আগস্টের প্রথম দিকে এই পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা চলছে।

রাশিয়ার তৈরি ট্রায়াম্ফ নামে পরিচিত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থাটি সহজে বহনযোগ্য। এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থাটি ২৫০ কিলোমিটার উঁচুতে থাকা উড়োজাহাজ, ক্রুজ অথবা ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম। ২০১৫ সালের এপ্রিলে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে এই ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থার প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রেতা হয়েছিল চীন। ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি অনুযায়ী গত সপ্তাহে চীন প্রথম চালানের সরবরাহ পায়। চলতি বছরের শেষ নাগাদ দ্বিতীয় চালান চীনে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নেয়া চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) দলটি চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ বা আগস্টের প্রথম দিকে নিজেদের মাটিতে ওই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখার পরিকল্পনা করছে। পিপলস লিবারেশন আর্মির বহরে কবে নাগাদ এস-৪০০ যুক্ত হবে তা পরিষ্কার নয়। তবে দ্রুত আমদানি ও পরীক্ষার ঘোষণায় প্রমাণ হয় শিগগিরই তা চীনের অস্ত্রাগারে যুক্ত করার আশা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন :

উন্নত দেশগুলোর বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জিতবে না
বিবিসি

সংরণবাদ প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জিতবে না। উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন। দণি আফ্রিকার রাজধানী জোহানেসবার্গে ব্রিকসের সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দণি আফ্রিকার প্রতি সংরণবাদ প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছেন। উন্নয়নশীল দেশের ওপর শুল্ক অবরোধের যে হুমকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিয়েছেন তা নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দণি আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। এই দুই শীর্ষ নেতা ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দণি আফ্রিকার সমন্বয়ে তৈরি জোট ব্রিকসের বৈঠকে এ কথা বলেন। দণি আফ্রিকার জোহানেসবার্গে তিন দিনব্যাপী এ বৈঠক হচ্ছে।
ব্রিকস দেশগুলোতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি বাস করে, কিন্তু এই দেশগুলো কখনোই একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে কাজ করেনি। শি জিনপিং বলেন, আমাদের একতরফা বিশ্ব-ব্যবস্থা প্রত্যাখ্যানে অটল থাকতে হবে। আর বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধও আমাদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত। কারণ এতে কেউ জিতবে না। একতরফা কোনো ব্যবস্থা কেউই মেনে নেবে না। আর চীন নিজের দরজা খোলা রেখেই নিজেকে আরো বেশি উন্নত করতে থাকবে।

উন্নয়নশীল দেশগুলো ও ক্রমবর্ধনশীল বাজারের যৌথ উত্থান কেউই আটকাতে পারবে না। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যবস্থায় ভারসাম্য ফিরে আসবে বলে মনে করেন শি।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি চীন থেকে আমদানি করা ৫০০ বিলিয়ন ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক বসাতে প্রস্তুত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বাস করেনÑ চীনের কাছে বাজার খুলে দিয়ে আমেরিকার মারাত্মক তি হয়েছে। তিনি এক হিসাব দেখিয়েছেন যে, ২০১৭ সালে আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি ৮০০ বিলিয়ন অর্থাৎ ৮০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। আর এই ঘাটতির প্রধান কারণ চীনের সাথে বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান ভারসাম্যহীনতা। ট্রাম্পের মতে, চীনের মূল ল্য হচ্ছে নানা কারসাজি করে শুধু জিনিস বিক্রি করা, যার পরিণতিতে আমেরিকার শত শত শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে ও লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। মার্চের শেষে ট্রাম্প অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতসহ শত শত চীনা আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ওই সব পণ্যের আমদানিমূল্য ছয় হাজার কোটি ডলার হতে পারে। এরপরে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীন মার্কিন পানীয়, শূকরের মাংস, ফল-সহ ৩০০ কোটি ডলারের মার্কিন পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক বসিয়েছে।

বিশ্বের এক নম্বর ও দুই নম্বর অর্থনীতির মধ্যে এই বাণিজ্যযুদ্ধের পরিণতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। আর এই বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব অন্য দেশের ওপরও পড়তে শুরু করেছে। দণি আফ্রিকা এই মূহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্কের কুফল ভোগ করছে। দেশটির এই দুই খাতের সাত হাজার কর্মীকে এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, তার দেশ একপীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরোধী। তিনি মনে করেন বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়মাবলির সাথেও বাণিজ্যযুদ্ধের ধারণা সাংঘর্ষিক।

আরো পড়ুন :

পুতিনের আমন্ত্রণে রাশিয়া সফরে সম্মত ট্রাম্প
বিবিসি

মস্কো সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন আমন্ত্রণ জানানোর পর রাশিয়া সফরে যেতে আগ্রহী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
পুতিন জানান, উপযুক্ত শর্তে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আগ্রহী। একই সঙ্গে তিনি দ্বিতীয় বৈঠকের জন্য ট্রাম্পকে মস্কো সফরের আমন্ত্রণ জানান। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে ট্রাম্প ও পুতিন রুদ্ধার বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। মস্কো সফরের এই আমন্ত্রণ এমন সময়ে এলো যখন হোয়াইট হাউজ পুতিনের যুক্তরাষ্ট্র সফর পরবর্তী বছরের শরৎ পর্যন্ত স্থগিত করেছে। হোয়াইট প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগামী বছরের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী।

শেয়ার করুন