পারভেজকে তুলে নিয়ে যাওয়া গাড়ির নম্বর ছিল ভুয়া

0
407
Print Friendly, PDF & Email

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান পারভেজ সরকারকে অপহরণ করে যে পাজেরো গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তার নম্বর প্লেটটি ছিল ভুয়া। ওই গাড়ির সঙ্গে নম্বর প্লেটটির কোনো মিল পাওয়া যায়নি। এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, পারভেজ সরকারকে যে পাজেরো গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়, তার নিবন্ধন নম্বরটি ছিল ভুয়া। অপহরণের বিষয়ে পারভেজ এখনো পুলিশকে কিছু জানাননি বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন। এমনকি পারভেজের পক্ষ থেকে কোনো মামলাও হয়নি। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকার মিনার মসজিদ থেকে জুমার নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় পারভেজ সরকারকে একটি পাজেরো গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। দুপুর পৌনে দুইটার দিকে লালমাটিয়ার সি ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কে নিজ বাসার দিকে যাচ্ছিলেন পারভেজ। ঘটনাস্থলের পাশে এক বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, পারভেজ সরকারের বাসার গেটের সামনে আসার পর প্যান্ট ও গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে করমর্দন করেন। এ সময় লম্বা চুলের আরেক ব্যক্তি পেছন থেকে এসে পারভেজ সরকারের মুখ চেপে ধরেন। ঠিক ওই সময় পেছন দিক থেকে কালো রঙের একটি পাজেরো সামনে আসে। টেনেহিঁচড়ে পারভেজকে গাড়ির ভেতর ঢুকিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এই অপহরণের সঙ্গে চারজন জড়িত। তাদের সবার হাতে পিস্তল ও ওয়াকিটকি ছিল। দুজন বাইরে ও দুজন গাড়ির ভেতর ছিল। অপহরণকারীরা দীর্ঘ সময় পারভেজ সরকারকে অনুসরণ করছিল। পারভেজকে যে পাজেরোতে তুলে নেওয়া হয়, সেটির নম্বর প্লেটে লেখা ছিল ঢাকা মেট্রো ঘ ১৪-২৫৭৭। তাঁর বাসার সামনে দায়িত্ব পালনরত নিরাপত্তাকর্মীরাও গাড়ির নম্বর প্লেটটি দেখেছেন।

এ ঘটনার আট ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত ১০টায় একটি মুঠোফোন থেকে পারভেজ সরকার তাঁর স্ত্রীকে জানান, তিনি ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। এরপর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১০ মিনিট পর আবার স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তিনি রাজধানীর ৩০০ ফুট এলাকায় আছেন। এখান থেকে তাঁকে নিয়ে যেতে বলেন। পরে পরিবারের সদস্যরা গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে বাসায় ফেরেন।

পারভেজ সরকারের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গাড়িতে তুলে নেওয়ার পর পারভেজ সরকারের মুখে কালো কাপড়ের মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। গাড়ির ভেতরে কারও মুখ দেখতে পাননি তিনি। প্রথম তিন ঘণ্টা পারভেজ সরকারের সঙ্গে অপহরণকারীরা খুব দুর্ব্যবহার করেছিল। এ সময় তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। তিনি ছাত্রলীগ করেছিলেন কি না, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। তবে বিকেলের পর থেকে অপহরণকারীদের আচরণ পুরো বদলে যায়। পরের চার ঘণ্টা ভালো আচরণই করা হয়। পরে রাতে মুখ ঢাকা অবস্থাতেই পারভেজ সরকারকে ৩০০ ফুট সড়কের নামিয়ে দিয়ে পাজেরো নিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা।

শেয়ার করুন