জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে মেরুকরণ শুরু হয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে পোলারাইজেশনটা স্বাভাবিক ব্যাপার। ইলেকশন যতই ঘনিয়ে আসবে, ততই দৃশ্যপটের মধ্যে কিছু কিছু পরিবর্তন আসবে। তবে, আমাদের এখানে পোলারাইজেশনটা কীভাবে হয়, তা দেখার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’ মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইলেকশনের শিডিউল অ্যানাউন্স হয়ে যাবে, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই এই ব্যাপারে পোলারাইজেশন স্বাভাবিক। আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িকতার একটা ব্যাপার আছে, এখানে ডিভাইসিক পলিটিক্স আছে, এখানে পোলারাইজেশনটা কার সঙ্গে কার হবে? কীভাবে ঘটবে? এসব বিষয়গুলোর সমীকরণটা একটা পর্যায়ে কোথায় দাঁড়াবে, সেটা এখানে বলা যাবে না।’
সিপিবির মোজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘জাস্ট এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। আমি বাসদের খালেকুজ্জামানের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছি। আমি ফোনে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি গতকাল (সোমবার) আমাকে কল করেছিলেন কিন্তু খেয়াল করতে পারিনি। আজ তাকে কল করেছি, কথা বলেছি। এটা একটা সৌজন্যবোধের ব্যাপার। একটা ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ রাজনীতিতে থাকা উচিত।’
এ সময় বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মায়ের মৃত্যুতে বিবৃতি ও ফোন করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতিতে সৌজন্যবোধটা দরকার আছে। কর্নেল অলিও আমাকে ফোন করেছেন। আ স ম আব্দুর রবও আমাকে ফোন করেছেন। মেজর মান্নানও করেছেন। এভাবে ফোনালাপটা থাকলে অনেক কিছুই সমাধান হয়ে যায়।’
আলোচনার বিষয়বস্তু বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতির অঙ্ক নিয়ে আলাপ করতে যাইনি। যদি কোনও আলাপ করতে যাই, তাহলে আমার পার্টির সভাপতির সঙ্গে কথা বলে যাবো। ওয়ার্কিং কমিটির সঙ্গে কথা বলে যাবো। রাজনীতির কোনও বিষয়ে আলোচনা করলে, কোনও ইকুয়েশন বা আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের ব্যাপার, অ্যালায়েন্সের ব্যাপারে আলাপ হলে, এটা দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়া আমি আলাপ করতে পারি না।’ তবে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
এরশাদের ভারত সফর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা এরশাদ সাহেবকেই জিজ্ঞেস করেন।’ ভারতপ্রীতি নিয়ে বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, ‘ভারতভীতিটা যাদের এত প্রবল, ইলেকশন এলে ভারতপ্রীতি কেন বেড়ে যায়? যারা সারাবছরই ভারতভীতিতে ভোগে, ইলেকশন এলেই তাদের ভারতপ্রীতি কেন? এত ঘনঘন যাচ্ছেন কেন? বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত কাউকে ক্ষমতায় বসাবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। এজন্য আমরা তোষামোদিও করি না।’
বিএনপির রাজনীতি ‘ছদ্মবেশী বিদ্বেষপ্রসূত’ দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই ছদ্মবেশী বিদ্বেষপ্রসূত নেতিবাচক রাজনীতির কারণে আগামী নির্বাচনে বিএনপির পরাজয় হবে। আগামী নির্বাচনে মাশুল দিতে হবে।’
ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুরনাহার লাইলী, কার্যনিবাহী সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওসার, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।