দিনকাল রিপোর্ট : শতভাগ বাণিজ্য সুবিধা দিতে সুশাসনের নিশ্চয়তা চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। চলমান বৈশ্বিক সংকট রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রশংসা করলেও অভ্যন্তরীণ মতপ্রকাশের বিষয়ে আরও মসৃণ উন্নয়ন চায় বৈশ্বিক এই ফোরামটি। ইইউ আশা করছে, সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবগুলো রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপে এবং বস্তুনিষ্ঠ হবে। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গানার উইগান্ড বলেন, আমরা আশা করছি বাংলাদেশের সব নির্বাচন স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইইউ’র রাষ্ট্রদূত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে ইইউ।রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন বৈঠকে গতকাল বৃহস্পতিবার এমন আশা প্রকাশ করেন ঢাকা সফররত ইইউর প্রতিনিধিরা। বৈঠকে ঢাকার পে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ঢাকার পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক; অন্যদিকে ইইউর পে নেতৃত্ব দেন এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গানার উইগান্ড। বৈঠকে ইইউর বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত রেনজি তেরিংকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। : কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সুশাসন, শ্রমিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আন্তর্জাতিক শ্রম আইনসহ দ্বিপাকি সব বিষয়েই আলোচনা করা হয়। ইইউ প্রতিনিধিরা বৈঠকে বলেন, বাণিজ্যের সব সুবিধা পেতে হলে শতভাগ সাসটেইনেবিলি কমপ্যাক্ট (পোশাক খাতের উন্নয়নে বেশকিছু শর্ত যেখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ একাধিক শর্ত রয়েছে) বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘ইইউ বাংলাদেশের উন্নয়নের বড় অংশীদার। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই গভীর। বৈঠকে সামাজিক উন্নয়ন, বাণিজ্য, টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন, দ্বিপাকি সম্পর্কের উন্নয়ন, অভিবাসী সংকট এবং চলমান আন্তর্জাতিক সংকট রোহিঙ্গা নিয়ে আলোচনা করেছি। বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে দ্বিপাকি সম্পর্কের সব ইস্যুর সঙ্গে একাধিক আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ইস্যু নিয়েও আলাপ হয়েছে।’ রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সব উদ্যোগের প্রতি ইইউর সমর্থন থাকবে, এ তথ্য জানিয়ে ইইউর এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচাললক গানার উইগান্ড বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশের একার সংকট নয়, এাঁ বৈশ্বিক সংকট। বাংলাদেশ নিপীড়িত এই জনগোষ্ঠীকে যেভাবে সহায়তা করছে, তা প্রশংসার দাবিদার। এই সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। এরই মধ্যে এশাধিক বৈশ্বিক ফোরাম থেকে এই সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এই সহায়তা চলমান থাকবে।’ : তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যের বড় অংশীদার ইইউ। ইইউ এরই মধ্যে বাংলাদেশকে অস্ত্র ছাড়া বাণিজ্যের সব শাখায় শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। ইইউর বাজারে রফতানি আরও বাড়াতে বাংলাদেশকে আরও কিছু শর্ত (পোশাক খাতের সাসটেইনেবিলি কমপ্যাক্ট) বাস্তবায়ন করতে হবে। সামনের ২০২৪ সাল থেকে বাংলাদেশ যদি ইইউর জিএসপি প্লাস (অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা) সুবিধা পেতে চায়, তবে এই শর্ত বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।’ : নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপ,ে শান্তিপূর্ণ, বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে। একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যাতে সবগুলো রাজনৈতিক দল অংশ নিতে পারে।’ :