জাতীয় নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার দাবি জানিয়েছে নতুন বামজোট। আটটি বাম রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জোটের আত্মপ্রকাশের দিন গতকাল বুধবার এই দাবি জানানো হয়েছে।
জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ,সকল দল ও সমাজের অপরাপর অংশের মানুষের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। তারা বলেন, দেশে এখন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং গোটা নির্বাচন ব্যবস্থার আমুল সংস্কার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
বুধবার পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নতুন জোটের নাম দেয়া হয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের আটটি শরিক দল হচ্ছে সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান। মুল বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
এতে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় যে, নির্বাচন সামনে রেখে বড় দুই দলের বিদেশি প্রভুদের কাছে ধর্ণা বাংলাদেশে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের সুযোগ বাড়িয়ে তুলেছে, বিপদগ্রস্ত করছে দেশের সার্বভৌমত্বকে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের ‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের’ মডেল নির্বাচন ও জনগণের ভোটাধিকারকে প্রহসনে পরিণত করেছে। গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কার্যত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এবং নির্বাচন পুরোপুরি টাকার খেলায় পর্যবেসিত হয়েছে।
ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ এসমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন ছাড়া গণতান্ত্রিক পরিবেশে অবাধ,নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে কোন অবাকাশ নেই। গত ক’বছরের অভিজ্ঞতাও সন্দোতীত ভাবে প্রমান করেছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ নেই। সরকার অনুগত নির্বাচন কমিশন দিয়েও সুষ্ঠু,নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। পাশাপাশি জনগণের ম্যান্ডেটহীন জাতীয় সংসদ বাহল রেখেও সকল দল ও জনগণের জন্য নির্বাচনের সমান সুযোগ তৈরি হবে না।