স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় ‘ক্ষতি’ করতে পারেন। সেই আশঙ্কায় ফের পুলিশের ‘শরণাপন্ন’ কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এ বারও তিনি বেহালার পর্ণশ্রী থানায় স্ত্রী বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত ১৭ এপ্রিল সেই অভিযোগ করা হয়।
মেয়রের পর্ণশ্রীর বাড়ি থেকে রত্না গুরুত্বপূর্ণ নথি ও সম্পত্তি পাচার করে দিতে পারেন। এমনটাই আশঙ্কা শোভনের। পুলিশের কাছে অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, পর্ণশ্রীর বাড়িতে তাঁর বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও সম্পত্তি রয়েছে। সেগুলি যাতে বেহাত না হয়ে যায়, সে জন্য গত ১৪ এপ্রিল একটি বেসরকারি সংস্থার দু’জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেন তিনি। সম্পত্তির উপর নজরদারির জন্য ওই নিরাপত্তাকর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ওই বাড়িতে যাতায়াতকারীদের নাম-ঠিকানাও নথিভুক্ত করে রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু, গত দু’দিন ধরে তাঁর স্ত্রী নিরাপত্তারক্ষীদের কোনও কাজ করতে দিচ্ছেন না বলে মেয়রের অভিযোগ। এমনকী, হুমকিও দেওয়া হচ্ছে ওই নিরাপত্তাকর্মীদের। মেয়রের বাড়িতে কারা যাতায়াত করছেন, লগ বুকে সেই সব নাম-ধাম লিখতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশকে লেখা অভিযোগপত্রে শোভন দাবি করেছেন যে, বেশ কিছু বাইরের লোকজন তাঁর স্ত্রী মদতে ওই বাড়িতে যাওয়া-আসা শুরু করেছে বলে তাঁর কাছে খবর রয়েছে। সেই জন্য তিনি তাঁর সম্পত্তি, নথিপত্র-সহ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। গোটা ঘটনা জানিয়ে ওই বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সিইও একটি চিঠিও দিয়েছেন মেয়রকে। বাইরের লোকজনের যাতায়াতের বিষয়টি জানিয়ে সংস্থার সিইও-কে আগেই চিঠিতে জানিয়েছিলেন মনোজিৎ ভৌমিক এবং রবিন রায় নামে ওই সংস্থার দুই নিরাপত্তারক্ষী। এর পর গোটা বিষয়টিই মেয়রকে জানান সিইও। নিজের অভিযোগপত্রের সঙ্গে ওই দু’টি চিঠির প্রতিলিপিও থানায় জমা দিয়েছেন মেয়র।
মেয়রের অভিযোগপত্র। —নিজস্ব চিত্র। সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।
শোভনের সঙ্গে রত্নার বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। গত নভেম্বরে রত্নার বিরুদ্ধেই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা রুজু করেছেন শোভন। কিছু দিন আগে আদালতে রত্নাদেবী জানিয়েছিলেন, পর্ণশ্রী থানাকে প্রভাবিত করে তাঁর বাড়ির উপর নজরদারি করছেন মেয়র। তাঁর ব্যক্তিস্বাধীনতা এতে বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও রত্না জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
বৈশাখী না থাকলে অস্তিত্ব বিলুপ্ত হত: মেয়র
সন্ধি চেয়ে কোর্টে রত্না, নারাজ মেয়র গরহাজির
তবে, রত্নার বিরুদ্ধে এই প্রথম থানায় গেলেন শোভন এমনটা নয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বেহালার পর্ণশ্রী থানায় এফআইআর করেন শোভন। তাঁর বেহালার বাড়ি থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে লিখিত ভাবে তিনি অভিযোগ করেছিলেন পর্ণশ্রী থানায়। এর পর ফের থানায় গিয়েছিলেন শোভন। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে গত ১২ মার্চ রবীন্দ্র সরোবর থানায় নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন তিনি। অভিযোগ ছিল, দক্ষিণ কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে তিনি এখন থাকেন। দুষ্কৃতী দিয়ে সেখান থেকে তাঁকে উৎখাত করতে চাইছেন রত্না।