ঘুষের ওপরেও ভ্যাট দিতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, ‘ভ্যাট নিয়ে ব্যবসায়ীরা হয়রানির মধ্যে রয়েছেন। ব্যবসায়ীদের দুই দিন পরপরই চিঠি দিয়ে দু-তিন বছর আগের ব্যালান্স শিট চাওয়া হয়। সেটি নিয়ে বিভিন্ন খরচের উৎসে কেন ভ্যাট দিলাম না, সেটি উল্লেখ করে বকেয়া ভ্যাট ও তার সুদ যোগ করে বিশাল অঙ্কের টাকা মালিকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেটি আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা কঠিন।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রাক্-বাজেট আলোচনায় আজ বুধবার ইএবি সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
ইএবি সহসভাপতি বলেন, ‘ভ্যাট কে দেবে? আমরা টাকা দিয়ে সেবা নিচ্ছি, আবার আমাদেরই ভ্যাটের অর্থ দিতে হচ্ছে। এটি থেকে আমাদের রেহাই দিন।’ তিনি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্প শতভাগ ভ্যাটমুক্ত। তবে রপ্তানি কার্যক্রম চালাতে বিভিন্ন জায়গা যে খরচ হচ্ছে, তার ওপরে ভ্যাট দিতে হয়। স্টেশনারি পণ্য ক্রয়, পণ্য পরিবহন কিংবা আপ্যায়নের ওপর ভ্যাট দিতে হচ্ছে। উপরন্তু মিসিলিনিয়াস কস্ট কি সেটি আপনারা জানেন? সহজ বাংলায়, ঘুষ। সেই ঘুষের ওপরেও ভ্যাট দিতে হয়। এই অত্যাচার থেকে আমাদের মুক্তি দেন।’
ভ্যাটের বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যাঁদের যে পরিমাণ ভ্যাট দেওয়ার কথা, তাঁরা সেটি দেন না। তাই নিরীক্ষা করা হয়। প্রত্যেক নিরীক্ষাতেই কিছু না কিছু অনাদায়ি ভ্যাট পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, সারা দেশের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভোক্তাদের কাছ থেকে ভ্যাট নিলেও সেটি সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছে না। সে জন্য নিরীক্ষা করলেই অনাদায়ি ভ্যাট পাওয়া যায়।’
আজকের আলোচনায় ইএবি ছাড়া বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আবদুল কাদের খান বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। তিনি তৈরি পোশাকশিল্পের সরঞ্জাম ও মোকড়ীকরণ খাতের প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর ৩৫ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করা, উৎসে কর দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে দশমিক ৫০ শতাংশ করার দাবি জানান।
মোহাম্মদ হাতেম কমপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য উৎসে করহার অপরিবর্তিত রাখার সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই উৎসে কর পরিবর্তন হয়। সে জন্য প্রত্যেক বাজেটের আগে আমরা ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে থাকি।’
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ ধরনের নীতি দীর্ঘ মেয়াদের জন্য হলে ভালো হয়। বিষয়টি আমরা চিন্তাভাবনা করব।’