এফবিআই কর্মকর্তার ইঙ্গিত চুরিতে উত্তর কোরিয়ার ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা’

0
241
Print Friendly, PDF & Email

নিউইয়র্কে ফেডারেল রিজার্ভে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির ঘটনায় ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র এক কর্মকর্তা। বুধবার ম্যানিলায় তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে মার্কিন কর্মকর্তারা রিজার্ভ চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেছিলেন। এতে করে রিজার্ভ চুরিতে জড়িতদের পরিচয়ের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই সাইবার চুরির জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেন। খবর রয়টার্স।

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় মার্কিন দূতাবাসের লিগ্যাল অ্যাটাশে ল্যামন্ট সিলার এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু না জানালেও চোরদের পরিচয়ের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলে তার বক্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ চুরির তদন্তের সঙ্গে এই এফবিআই কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন।

একটি সাইবার নিরাপত্তা ফোরামে এফবিআই কর্মকর্তা সিলার বলেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরির কথা জানি। ব্যাংকিং সেক্টরে রাষ্ট্র পরিচালিত হামলার মাত্র একটি উদাহরণ এটি।’

‘চুরির জন্য দায়ীরা কেউ যেন পার পেতে না পারে’ সেজন্য ফিলিপাইন সরকারের সঙ্গে এফবিআই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সিলার।

তার মতে, ‘আমাদের কাছে কখনই এটা অতীত নয়। আমরা এটা প্রমাণ করার জন্য ওই ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করব যে, তোমরা এ রকম হামলায় পারদর্শী হলেও শেষ পর্যন্ত পার পাবে না।’

চুরির তদন্ত সম্পর্কে জানেন এমন এক কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে গত সপ্তাহে রয়টার্সকে বলেন, এফবিআই বিশ্বাস করে চুরির জন্য উত্তর কোরিয়া দায়ী। তবে তিনি এর বেশি বিস্তারিত কিছু বলেননি।

অন্যদিকে ওয়াল স্ট্রিটের খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কৌঁসুলিরা চুরির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়া ও চীনা দালালদের অভিযুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুইফট ম্যাসেজিং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নিউইয়র্ক ফেড থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার সরানোর অনুরোধ জানায় হ্যাকাররা। নিউইয়র্ক ফেড বেশির ভাগ অনুরোধ অগ্রাহ্য করলেও ফিলিপাইনের একটি ব্যাংকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার প্রেরণ করে। পরে এই অর্থ তুলে দেশটির ক্যাসিনোগুলোর মাধ্যমে উধাও করে ফেলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এএফবিআই এই সাইবার চুরি নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত চালাচ্ছে।

ফিলিপাইনে এক চীনা ক্যাসিনো মালিক সিনেটের তদন্তের সময় দু’জন চীনা জুয়াড়ির কাছ থেকে অর্থ নেয়ার কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশের অর্থ চুরির জন্য ওই দুই চীনাকে দায়ী করেছিলেন তিনি।

চুরির সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও রেমিটেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে ফিলিপাইনের তদন্তকারীরা। তবে এর কোনোটিই এখনও আদালত পর্যন্ত গড়ায়নি।

উল্লেখ্য, এই ঘটনার প্রায় এক মাস পর ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি বাংলাদেশ জানতে পারে।

শেয়ার করুন