সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুঁতেরার কাছে আহ্বান জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদআউট বর্ডারর্স (আরএসএফ) ও কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। এ জন্য গুঁতেরার সঙ্গে শুক্রবার সাক্ষাত করেন আরএসএফের সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিস্টোফি দেলোইরে ও সিপিজে’র নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন। এ সময়ে তারা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক জাতিসংঘে একজন স্পেশাল প্রতিনিধিকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি আলোচনা করেন। আলোচনায় উঠে আসে হ্যাসট্যাগ প্রটেক্ট জার্নালিস্টস প্রচারণার বিষয়গুলোও। উল্লেখ্য, জাতিসংঘে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক স্পেশাল প্রতিনিধি হিসেবে আগেভাগেই সমর্থন দিয়েছে ওয়ার্ল্ড এডিটরস ফোরামে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত ডেভিড কলঅ্যাওয়ে’কে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এরএসএফের সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন, আরএসএফের পক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিবের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতিকে আমি স্বাগত জানাই। তিনি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, অবাধ ও মুক্ত মিডিয়ার কথা বলেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বিশ্বাস করেন এসব ইস্যুই গণতন্ত্র, মানবাধিকারের জন্য মৌলিক। এবং তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সাংবাদিকরা যাতে আরও সুরক্ষিত থাকেন সে জন্য জাতিসংঘকে আরো জোরালো পদক্ষেপ নিতে তার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ওদিকে জোয়েল সিমন বলেছেন, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা হয়তো শারীরিক না হয় মানসিক হামলার শিকার হচ্ছেন। এসব বিষয়ে আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে তুলে ধরেছি। প্রতিশ্রুতি যেন রাখা যায় সে জন্য তার সঙ্গে আমরা কাজ করতে চাই। উল্লেখ্য, প্রটেক্ট জার্নালিস্ট-এর উদ্দেশ্য হলো একটি মেকানিজম প্রতিষ্ঠা করা, যার ফলে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ করা হয় এবং চূড়ান্তভাবে প্রতি বছর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেসব সাংবাদিক নিহত হন তার সংখ্যা কমিয়ে আনা। গত ৫টি বছর সাংবাদিকদের জন্য ভয়াবহ সময় গেছে। এ সময়ে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কয়েক শত সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। আরও অনেকে হামলার শিকার হয়েছেন। আরএসএফের হিসাবে শুধু গত বছরে কমপক্ষে ৭৮ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দায়মুক্তি যেন আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয় তখন জনগণকে বিপুল তথ্য জানা থেকে বঞ্চিত করা হয়। পরিবেশ থেকে উগ্রবাদি সন্ত্রাস সহ বিশ্বের বড় বড় সমস্যা সমাধান করা যাবে না সাংবাদিকদের কাজ ছাড়া। সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেয়া বিষয়ক একজন জার্নালিস্ট প্রটেক্টর পদ সৃষ্টির জন্য আরএসএফের উদ্যোগে স্বাগত জানিয়েছে এনজিও, মিডিয়া, সাংবাদিক ও সরকারি বড় কিছু কর্মকর্তার একটি বিশ্বব্যাপী জোট। এ পর্যন্ত এ জোটে যোগ দিয়েছে ১২০টিরও বেশি সংগঠন। এর মধ্যে রয়েছে সিপিজে, এপি, ওয়ান-ইফরা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ব্যাংকক পোস্ট, ব্যাজিলিয়ান সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম। এ ছাড়া আরও আছে জেমস ডব্লিউ ফোলি ফাউন্ডেশন, দ্য সিরিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়া অ্যান্ড ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন, পাকিস্তান প্রেস ফাউন্ডেশন।