তারুণ্যের ‘এস্টাবলিশমেন্ট’বিরোধী মানসিকতা প্রবাদপ্রতিম। এ বয়সের আরো একটি বৈশিষ্ট্য— সমাজে প্রচলিত ধারার বিরুদ্ধে কোনো না কোনো আদর্শের প্রতি আকর্ষণ এবং সেজন্য যেকোনো প্রকার ত্যাগ স্বীকার বা আত্মদান। সেক্ষেত্রে শ্রেণী-স্বার্থের বিষয়টি সচেতনভাবে স্পষ্ট হয়ে ওঠে না, যা দেখা যায় রাজনীতিকদের মধ্যে, বিশেষভাবে যারা রাজনীতিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।
১৯৪৮ থেকে ১৯৫২-এর পূর্ববঙ্গে মাতৃভাষা-রাষ্ট্রভাষা নিয়ে যে সংগ্রাম, তা ভাষার লড়াই বা ভাষা আন্দোলন হিসেবে পরিচিত। ভাষা আন্দোলনের উপরে উদ্ধৃত বক্তব্যের মর্মবস্তু বা সারাত্সার প্রকাশ পেয়েছে অসামান্য উদাহরণ হিসেবে। এ আন্দোলন মূলত ছাত্রযুবাদের আন্দোলন, যেখানে রয়েছে প্রতিষ্ঠিত সরকারবিরোধী রাজনীতিকদের সমর্থন এবং বিশেষ স্তরে জনসাধারণের ব্যাপক অংশগ্রহণ। তাই দেখা যায়, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছাত্র আন্দোলন ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে গোটা পূর্ববঙ্গের গণআন্দোলনে পরিণত।
এ আন্দোলনের মূল স্লোগান বা দাবি যদিও ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, কিন্তু এর অন্তর্নিহিত তাত্পর্যে ছিল ভাষিক জাতীয়তার চেতনা, যা ষাটের দশকে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রকাশ ঘটায়, স্বশাসন তথা প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন তত্কালীন রাজনীতির প্রধান দাবি হয়ে ওঠে, বিশেষভাবে যার দলীয় প্রকাশ ঘটে ছয় দফায়।
মাতৃভাষা বিশেষ জনগোষ্ঠীর মুখের ভাষা এবং এর বিশেষ সামাজিক-রাজনৈতিক তাত্পর্যের কারণে মাতৃভাষার অধিকার-বিষয়ক দাবি সর্বজনীন চরিত্রের হয়ে থাকে। পূর্ববঙ্গে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি ওই একই ধরনের। আর সে কারণে পাকিস্তান আন্দোলনে ছাত্রযুবাদের আবেগধর্মী সমর্থন সত্ত্বেও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়ে যায় ছাত্রযুবাদের নেতৃত্বে ও অংশগ্রহণে। মুসলিম লীগ সরকারের জন্য এ ঘটনা ছিল অভাবিত ও বিস্ময়কর।
১৯৪৮ মার্চের ভাষা আন্দোলনে যে যুবারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নঈমুদ্দীন আহমদ, শেখ মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ, শামসুল আলম, আজিজ আহমদ, শওকত আলী, কাজী গোলাম মাহবুব এবং অপেক্ষাকৃত বয়সী শামসুল হক প্রমুখ এবং কনিষ্ঠ পর্যায়ের ছাত্র নেতৃত্ব। এরা ঢাকা শহরের প্রতিবাদী পিকেটিংয়ে সরাসরি নেতৃত্ব দেন।
তত্কালীন জেলা শহরগুলোতেও যথারীতি আন্দোলন পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন তরুণ ও যুবকরাই। যেমন রাজশাহীতে আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক একরামুল হক, আতাউর রহমান, মোহাম্মদ সুলতান, গোলাম রহমান, তোফাজ্জল হোসেন প্রধান, আবুল কাশেম চৌধুরী প্রমুখ। অধ্যাপকদের কেউ কেউ এতে সমর্থন জানিয়েছেন।
জেলা শহর বগুড়ায় ১৯৪৮-এর আন্দোলনে মূল নেতৃত্বে ছিলেন আতাউর রহমান (কবি), রাজনীতিক আতাউর রহমান, গোলাম রহমান, গোলাম মহিউদ্দিন, মোহাম্মদ আবদুল মতিন প্রমুখ ছাত্রযুবা। স্থানীয় কলেজের অধ্যাপকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আবুল খায়ের, গোলাম রসুল প্রমুখ।
১৯৪৮-এর আন্দোলনে পাবনা শহরও পিছিয়ে ছিল না। এখানেও যথারীতি গণতান্ত্রিক যুবলীগ, নঈমুদ্দীন ছাত্রলীগ, ছাত্র কংগ্রেস, ছাত্র ফেডারেশন ছিল আন্দোলনে বিশেষভাবে সক্রিয়। নেতৃত্বে প্রধান ভূমিকায় আমিনুল ইসলাম বাদশা, মাহবুবুর রহমান খান, লুত্ফর রহমান, প্রণতি কুমার রায় প্রমুখ। এছাড়া ছিলেন সৈয়দ ওয়ারেছ আলী, আনছার আলী, সেলিনা বানুসহ একাধিক ভাষাপ্রেমী। এ শহরে শ্রমজীবী মানুষও প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নেয়।
এ পর্বে যশোরের ভাষা আন্দোলন তীব্রতা ও ব্যাপকতার জন্য বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। এখানে পূর্বোক্ত জেলা শহরগুলোর মতো বামপন্থীদের প্রাধান্য ছিল লক্ষ করার মতো। উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন আলমগীর সিদ্দিকী, রণজিত্ মিত্র, হামিদা রহমান, সৈয়দ আফজল হোসেন, আফসার আহমদ সিদ্দিকী প্রমুখ ছাত্রছাত্রী। সমর্থক রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন জীবনরতন ধর, আবদুল খালেক, মসিউর রহমান প্রমুখ। একইভাবে বরিশাল শহরেও স্কুল-কলেজের রাজনীতিমনস্ক ছাত্রছাত্রীরা মিছিলে সমাবেশে অংশ নেয়। ১৯৪৮-এর আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা রাখেন কাজী বাহাউদ্দীন আহমেদ। তার সঙ্গে ছিলেন শামসুল হক চৌধুরী প্রমুখ নেতা। এ আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবিএম আবদুল লতিফ, মোহাম্মদ আর্শেদ, মোখলেসুর রহমান, আশরাফ আলী খান, হাসান ইমাম চৌধুরীর মতো একাধিক ব্যক্তি।
সিলেটে ১৯৪৮-এর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শরফউদ্দিন চৌধুরী, আখলাকুর রহমান, শাহেরা বানু, সৈয়দা লুত্ফুন্নেছা খাতুন, তোসাদ্দক আহমদ, আবদুস সামাদ আজাদ, দেওয়ান গোলাম মর্তুজা, শাহ মোহাম্মদ কিবরিয়া, ফারুক আহমদ চৌধুরী, কবি দিলওয়ার, বাহাউদ্দিন আহমদ প্রমুখ। সিলেটের ভাষা আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ছিল নারীদের বিশেষ অংশগ্রহণ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যোবেদা খাতুন চৌধুরী, রাবেয়া খাতুন, সৈয়দা নজিবুন্নেছা খাতুন প্রমুখ নেত্রী।
ঢাকার কাছাকাছি যে দুটি শহরে ভাষা আন্দোলন ব্যাপকতা অর্জন করে, তার মধ্যে জেলা শহর ময়মনসিংহ এবং মহকুমা শহর নারায়ণগঞ্জ বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। ময়মনসিংহ শহরে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে প্রধান ব্যক্তি রফিকউদ্দিন ভুঁইয়া, শামসুল হক, মনোরঞ্জন ধর, মোজাম্মেল হক, ফজলুল হক প্রমুখ ছাত্রনেতা ও রাজনীতিবিদ।
১৯৪৮-এর ভাষা আন্দোলন সব শহরে সমান তীব্রতা ও ব্যাপকতায় সংঘটিত হয়নি। এর কারণ পাকিস্তানের জন্মলগ্নে অবাঙালি প্রধান প্রশাসনের বাংলা-বিরোধিতা ও কঠোর দমননীতি। ১৯৫২ ফেব্রুয়ারিতে পরিস্থিতি ছিল অনেক পরিণত, অনেক বেশি রাজনীতি-সচেতন। তাই বায়ান্ন তথা একুশের আন্দোলন তুলনায় অনেক ব্যাপক এবং তা মহকুমা শহর হয়ে থানা এবং গ্রামগঞ্জের শিক্ষায়তনে ছড়িয়ে পড়েছিল। শুরু থেকেই ভাষা আন্দোলন ছিল শিক্ষায়তননির্ভর— স্কুল-কলেজভিত্তিক, একমাত্র উচ্চ শিক্ষায়তন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে একুশের কেন্দ্রবিন্দু। সেসঙ্গে বিশেষ ভূমিকা রাখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, এমনকি ঢাকার স্কুল। অন্যদিকে ১৯৪৮-এ দেখা গেছে আন্দোলনের মূল কেন্দ্র জেলাভিত্তিক কলেজগুলো।
দুই
১৯৪৮-এর মতোই ১৯৫২ ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনের সূচনাও ঢাকাকেন্দ্রিক। এ আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ২০ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত ১৪৪ ধারা অমান্য করা উপলক্ষে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠন এবং রাজনীতিকদের সঙ্গে সংগ্রামী ছাত্রসমাজের বিভেদ ও ভিন্নমত। ছাত্রসমাজ যেকোনো মূল্যে ১৪৪ ধারা ভেঙে একুশের নির্ধারিত কর্মসূচি পালনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, রাজনীতিকগণ ও তাদের অনুসারী ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভাঙার বিরুদ্ধে।
আমতলায় গাজীউল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ছাত্রসভায় একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে ছাত্রসমাজের জয়, সিদ্ধান্ত ১৪৪ ধারা ভাঙার এবং সে প্রক্রিয়ায় পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস বর্ষণ, শেষ পর্যন্ত বেলা ৩টা ২০ মিনিটে মেডিকেল হোস্টেল প্রাঙ্গণে এবং ফুলার রোডে জমায়েত ছাত্রজনতার ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণ। পুলিশের গুলিতে হতাহতদের মধ্যে শহীদ রফিকউদ্দীন আহমদ, আবদুল জব্বার, আবুল বরকত এবং আবদুস সালাম (মৃত্যু হাসপাতালে ৭ এপ্রিল, ১৯৫২) এবং জনাকয় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্র আন্দোলন গণআন্দোলনে পরিণত। ঢাকাই যুবাদের ক্ষুব্ধ পদচারণায় ঢাকা হয়ে ওঠে মিছিলের শহর। এদিন সশস্ত্র পুলিশ ও ইপিআর জওয়ানদের গুলিতে শহীদ সফিউর রহমান, আবদুল আওয়াল, কিশোর ওহিউল্লাহ ও সিরাজুদ্দিনসহ নাম না-জানা একাধিক ভাষা সংগ্রামী। পুলিশ গুলিবিদ্ধ কাউকে কাউকে তুলে নিয়ে যায়। স্লোগান ওঠে ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক’। এ স্লোগানের টানে পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল হোস্টেলের ছাত্রদের এক রাতের শ্রমে তৈরি হয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। পুলিশ তা ভেঙে ফেলে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে। ঢাকায় আন্দোলন চলে ফেব্রুয়ারিজুড়ে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন সরকারের প্রচণ্ড দমননীতির মুখে মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আন্দোলন স্তব্ধ হয়ে যায়। যদিও ঢাকার বাইরে শহরে শহরে আন্দোলন চলে আরো কিছুদিন। এ আন্দোলনের গভীর ও ব্যাপক প্রভাব পড়ে সাহিত্য-সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে। ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগবিরোধী যুক্তফ্রন্টের বিজয় ও সরকার গঠন একুশের অবদান। অবদান কুমিল্লা, ঢাকা ও কাগমারীর সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্মেলনের, যা চরিত্র বিচারে সেক্যুলার, জাতীয়তাবাদী ও প্রগতিবাদী।
তিন
একুশের ভাষা আন্দোলনে ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছাত্রযুবাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব আবদুল মতিন, অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, ইমাদুল্লাহ, মাহবুব জামাল জাহেদী, কাজী গোলাম মাহবুব, মোহাম্মদ সুলতান, গাজীউল হক, ইব্রাহিম তাহা এবং ছাত্রীদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে প্রধান ব্যক্তিত্ব শাফিয়া খাতুন।
আন্দোলন রক্তক্ষয়ী রূপ নিয়ে পূর্ণোদ্যমে শুরু হওয়ার পর রাজনীতিবিদদের সমর্থক ভূমিকায় এগিয়ে আসতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আতাউর রহমান খান, কামরুদ্দীন আহমদ, মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ, খয়রাত হোসেন, মনোরঞ্জন ধর, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, মওলানা ভাসানী, আবুল হাশিম, আনোয়ারা খাতুন প্রমুখ।
একইভাবে বায়ান্নর আন্দোলনে ঢাকার বাইরে ছাত্রযুবাদের পাশাপাশি রাজনীতিবিদ ও শ্রমিক নেতাদের অনেককেই আন্দোলনে সমর্থন জোগাতে দেখা যায়। নামের দীর্ঘ তালিকার পরিবর্তে দু-চারজনের নামোল্লেখই আন্দোলনের গুরুত্ব বুঝতে সহায়ক হবে। যেমন— রাজশাহীতে জননেতা মাদারবক্স, আতাউর রহমান, গোলাম আরিফ টিপু, মহসিন প্রামাণিক, সাইদউদ্দিন আহমদ, আবদুল গাফ্ফার, মমতাজ উদ্দিন আহমদ, প্রভাস লাহিড়ী প্রমুখ।
একই রকম চরিত্র বগুড়ার নেতৃত্বে— যেমন মজিরউদ্দিন আহমদ, গোলাম মহিউদ্দিন, হারুনুর রশীদ, জমির উদ্দিন মণ্ডলসহ বিড়ি শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক ও কৃষক নেতাদেরও সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। চট্টগ্রামে বিশেষ ভূমিকায় মাহবুব-উল আলম চৌধুরী, হারুনুর রশীদ, এমএ আজিজসহ শ্রমিক, পেশাজীবী ও রাজনৈতিক সংগঠনের বিশিষ্ট নেতাদের দেখা যায়। কুমিল্লায়ও একই দৃশ্য— নবীন-প্রবীণে মিলে একুশের কর্মসূচি সফল করতে তত্পর, যেমন স্কুল-কলেজের ছাত্রনেতৃত্বে, তেমনি আবদুর রহমান খাঁ, জহিরুল হক, হাসান ইমাম, আবুল খায়ের, শওকত আলী, আবদুল গণি, আবুল হোসেন প্রমুখ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
পাবনায় একুশের আন্দোলনও ছিল এডওয়ার্ড কলেজভিত্তিক ছাত্রনেতৃত্বে। উল্লেখযোগ্য নেতা আবদুল মোমিন তালুকদার, রণেশ মৈত্র, নঈমুল হাসান, আবদুল মতিন প্রমুখ। সিলেটে একুশের আন্দোলনে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন পীর হাবিবুর রহমান, মাহমুদ আলী, নুরুর রহমান, মতছির আলী, হাজেরা মাহমুদ প্রমুখ।
ভাষা আন্দোলনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল দলমত নির্বিশেষে ভাষার দাবিতে একাট্টা হওয়া, যা ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি বিস্ফোরক রূপ নিয়ে প্রদেশব্যাপী প্রকাশ পায়। এর প্রধান অর্জন শহীদ দিবস ও শহীদ মিনার, যা রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রতিবাদী প্রেরণার ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে। একুশ থেকে একাত্তরে স্বাধীন স্বদেশ অর্জন সত্ত্বেও দুর্ভাগ্য যে, একুশের দাবি এখনো পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। মাতৃভাষা বাংলা শিক্ষাঙ্গন ও উচ্চ আদালতে পরিত্যক্ত।
লেখক: ভাষাসৈনিক