মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া গ্রামে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩০ জন আহত এবং অন্তত ৬০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাউন্ড গুলি ও টিয়ার শেল ব্যবহার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বালিদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মফিজ মিনহা ও অপর আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস শিকদারের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালে উভয় পক্ষ নতুন করে দাঙ্গায় লিপ্ত হয়।
বালিদিয়া গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানায়, সকালে আওয়ামী লীগ নেতা মফিজ মিনহার ভাইয়ের মেয়ে সুমাইয়া প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার জন্য বাড়ি
থেকে বের হয়। পথে প্রতিপক্ষ অন্য আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস শিকদারের সমর্থক পিকুল ও রেবেকা তাকে মারধর করে। এ খবর মুহূর্তের মধ্যে জানাজানি হলে উভয় পক্ষের শত শত সমর্থক ঢাল-সড়কি, রামদা, ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। প্রতিপক্ষের হামলা এবং পুলিশের রাবার বুলেটে আহতদের মধ্যে আজগর (৩০), ফিরোজ মৃধা (৫০), ইতি (২৫), আতিয়ার মোল্লা (৩৫), উমর শিকদারকে (৩০) মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মকছেদুল মোমিন জানান, আহতদের মধ্যে গুরুতর চারজনকে ফরিদপুরে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষ ও প্রতিপক্ষের হামলায় আসির ফকিরের দুটি, মফিজ মিনহার দুটি, সাঈদ মিনহার চারটি, নবির মিনহার একটি, এনামুলের তিনটি, তোয়াক্কেল হোসেনের তিনটি, উসমান মিনহার দুটি, ইস্রাফিল মিনহার দুটি, আতর মিনহার একটি, হারুন মিনহার একটি, ইসহাক মিনহার একটি, আলিম মিনহার একটি, মাসুদ মিনহার দুটি, বাবু মিনহার একটি, দলিল উদ্দিন মিনহার একটি, হারন মিনহার পাঁচটি, কামাল মিনহার দুটি, জামাল মিয়ার দুটি, খায়রুল মিনহার একটি, আলমগীর সিনহার একটি, গোলাপ শেখের দুটি, চান্দু মোল্লার চারটি, নান্নু মিনহার চারটি, উজ্জল মিনহার একটি, ইউনুস সর্দারের দুটি, বাদশাহ মোল্লার দুটি ও এলেম মিয়ার একটি বাড়িসহ মোট ৬০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।
এ বিষয়ে মহম্মদপুর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০৮ রাউন্ড রাবার বুলেট এবং ছয়টি টিয়ার শেল ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত থাকলেও এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।