রূপরেখায় তিনটি বিকল্প প্রস্তাব রাখবে বিএনপি

0
194
Print Friendly, PDF & Email

বিএনপি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখায় তিনটি বিকল্প প্রস্তাব রাখবে। বিকল্প প্রস্তাবগুলো নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ও ২০-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করবেন। এরপর চূড়ান্ত রূপরেখা আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপিদলীয় একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র। অন্যদিকে বিএনপির থিঙ্কট্যাঙ্কখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের আলোকে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। এর আগে নির্বাচন হলে ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন হবে।
বিএনপির সহায়ক সরকারের রূপরেখার বিষয়ে জানতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গতকাল জানান, সহায়ক সরকারের রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে। সহায়ক সরকারের খসড়া রূপরেখা দাঁড় করানোর পর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি ২০-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করবেন। এরপর তা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, এর আগে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে ১৩ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন তার একটি কপি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এবার সহায়ক সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হবে না। রূপরেখা দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীকে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ জানানো হবে।
বিএনপিদলীয় একটি সূত্র জানায়, বিএনপির সহায়ক সরকারের তিনটি বিকল্পের মধ্যে থাকবে প্রথমত, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি সরকার গঠন করা হবে। দ্বিতীয়ত, থাকবে নির্বাচনী নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার। এ সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছুটিতে থাকতে হবে। তখন রাষ্ট্রপতি সংক্ষিপ্ত পরিসরে মন্ত্রিসভা গঠন করে সরকার ও নির্বাচন পরিচালনা করবেন। তৃতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে নিরপেক্ষ ব্যক্তির অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা।
বিএনপির থিঙ্কট্যাঙ্কখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে। তবে নির্বাচনের সময়ে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকলেও তিনি শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবেন। এর বাইরে অন্য কোনো নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না কিংবা অন্য কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না। নির্বাহী কর্তৃত্ব এই তিন মাস পালন করতে পারবেন না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে হবে। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। তাছাড়া সংবিধান কোরান, বাইবেল কিংবা গীতা নয় যে, সংশোধন করা যাবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গতকাল জানান, ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাই তিনি আওয়ামী লীগের জন্য সুবিধা হয় এমন কথা বলবেন। তারা জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে ৫ জানুয়ারি মার্কা আরেকটি নির্বাচন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে। কিন্তু বিএনপি তা হতে দেবে না। বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করবে|

শেয়ার করুন