রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ দলীয় কর্মীকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হল গেইটে তালা দিয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির শব্দও শোনা যায়।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে রাবির মাদারবখ্শ হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারি এক কর্মীকে মারধরের ঘটনায় রাবি শাখার সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারিদের মধ্যে এ উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মারধরের শিকার আব্দুস সালাম (লোক প্রশাসন, চতুর্থ বর্ষ) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারি।
আর মারধরকারী সাদ্দাম হোসাইন (অর্থনীতি বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ) রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারি।
রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি কিবরিয়ার অনুসারি সাদ্দাম হোসেন, হল শাখার সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানাসহ ১২/১৫ জন নেতাকর্মী রাত ১১টার দিকে মাদারবখ্শ হলে ‘পলিটিক্যাল ব্লক’ করার বিষয়ে অতিথি কক্ষে আলোচনায় বসেন।
এ সময় তারা ২১১ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুস সালামকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। রাবি শাখার সভাপতি ও সম্পাদকের মোবাইল নম্বর না থাকায় সভাপতির অনুসারি সাদ্দাম, এক পর্যায়ে বাকির অনুসারি সালামকে বেধড়ক মারধর করেন।
পরে ১১৯ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বিরকে ডেকে, তাকেও হুমকি-ধামকি দেয় সভাপতির অনুসারিরা। সাব্বিরও কেন্দ্রীয় নেতা বাকির অনুসারি।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হল গেইটে তালা ঝুলিয়ে ৩৫/৪০ জন নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান নেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাকিবুল হাসান বাকি। ফলে সভাপতি কিবরিয়ার অনুসারিরা হলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
বিষয়টি জানাজানি হলে অন্য আবাসিক হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১২টার দিকে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন।
তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা বাকি বিষয়টি মানতে নারাজ হন। এক পর্যায়ে বাকি মোবাইলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের আশ্বাসে শান্ত হয়। কিছুক্ষণ পর তৃতীয় ব্লক থেকে পরপর দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা।
এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মী হলে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সভাপতির অনুসারি সাদ্দাম হোসেন বলেন, সে (সালাম) যার সঙ্গে ছাত্রলীগ করুক, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নম্বর রাখা উচিত। সেটা তার কাছে নেই, এজন্য ‘খুব বকাঝকা’ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, হল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাকির একজন ছোট ভাইয়ের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। জানতে পেরে আমি ও সাধারণ সম্পাদক রুনুসহ অন্যরা গিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
তবে মীমাংসা হয়নি দাবি করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকি বলেন, শুধুমাত্র আমার সঙ্গে রাজনীতি করায় সালামকে মারধর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটনের আশ্বাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শান্ত হয়েছে, বিষয়টি মীমাংসা হয়নি।