‘দুবছরের জন্য রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখতে হবে’

0
141
Print Friendly, PDF & Email

একাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচনকালীন ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা (বি) চৌধুরী।

একইসঙ্গে বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে আনতে সব ‘রাজনৈতিক মামলা’ দুবছরের জন্য স্থগিত করারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এসব প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতীয় স্মরণ মঞ্চ’র উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীর ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

বি চৌধুরী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একমাত্র জাতীয় সরকার ছাড়া অন্য কোনো নিরপেক্ষ সরকার হতে পারে  না। ওই সহায়ক-টহায়ক এগুলো শব্দ নাই কোথাও। যদি সব ভালো ভালো লোক ও সব দল নিয়ে একটা (জাতীয়) সরকার গঠন করা যায়, তাহলেই একটা ভালো নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

এসময় একসঙ্গে সবক’টি বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনতে সব ধরনের ‘রাজনৈতিক মামলা’ দুই বছরের জন্য স্থগিত করার প্রস্তাব দেন তিনি।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে একটা লেভেল প্লেয়িং অবস্থা তো তৈরি করতে হবে। বিএনপির সাঙ্গ-পাঙ্গ, বাচ্চা-কাচ্চাসহ তাদের নামে কত হাজার মামলা যে আছে গড নোউজ (আল্লাহ জানে)। এতো হাজার হাজার মামলা থাকলে নির্বাচন করবে কিভাবে? এটা হয় না।’

‘আমি বলব, সমতল মাঠ করতে হলে সমস্ত মামলা আগামী দুই বছর বন্ধ, স্থগিত করে দেন। দুই বছরের পর আবার বিচার করুন কোনো অসুবিধা নাই। রাজনৈতিক সব মামলা অবিলম্বে স্থগিত করার ঘোষণা দেয়া হোক’ যোগ করেন তিনি।

বি চৌধুরী বলেন, ‘এজন্য সরকার সুপ্রিম কোর্ট-হাইকোর্ট এবং অন্যান্য যারা যারা যুক্ত আছেন, তারা সবাই ব্যবস্থা করুন। তাহলে আমরা মনে করি- মোর অর লেস লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (কমবেশী সমতল মাঠ) হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভোটে বিশ্বাস করি, অন্য কোনো মাধ্যমে বিশ্বাস করি না। ভোট আসবে, জনগণকে আমাদের পক্ষে আনতে হবে। আমরা সেই পক্ষ যারা ভোটের মাধ্যমে জিততে চাই।’

‘মনে রাখতে হবে- জনগণ যখন একত্রিত হয়ে যায়, সংঘবদ্ধ হয়ে যায়, তখন তাদের ঠেকিয়ে রাখতে পারে না কোনো ধরনের বেআইনি প্রশাসন’ যোগ করেন বিকল্পধারার সভাপতি।

এছাড়া তিনি আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনের নামই তুলছি না, কেন জানেন? যতগুলো নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে, ততগুলোতে নির্বাচন কমিশনে কে ছিল তাদের নাম কারো মনে নেই ভালো করে। ওই সময়ে সরকারটা নিরপেক্ষ ছিল- এটাই মূল কথা। সেজন্য একটা নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন আগামী নির্বাচনে।’

বঙ্গবীর এমএজি ওসমানীকে বড় মাপের দেশপ্রেমিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অভিহিত করে তার মৃত্যুদিবস সরকার ও বিরোধী দল স্মরণ না করায় সমালোচনা করেন বি চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের পরে একটা ব্যাপারে সবার শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছিলেন, যখন তিনি (ওসমানী) বাকশালের বিরোধিতা করেছিলেন। দুঃসাহসের ব্যাপার ছিল তখন বাকশালের বিরোধিতা করা। উনি বাকশালে যাননি।’

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এতো বিশাল সাহসী মানুষ আমি আর কখনো দেখিনি। উনি গণতন্ত্রের জন্য সাহস করে কথা বলতেন। আমি তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।’

সংগঠনের আহ্বায়ক আ হ ম মনিরুজ্জামান দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাকির হোসেনের পরিচালনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস  চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ।

শেয়ার করুন