পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ছোট পাথাইলহাট গ্রামের এক কিশোরীকে ভারতে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। তার নাম আসমানী খাতুন (১৩)। এক বোরকাপরা নারী বাসা থেকে ডেকে নিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাকে কৌশলে পাচার করে দেয়। পরিবারের অভিযোগ, পাচারকারীরা তার মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে দাবি করছে মুক্তিপণ। মুক্তিপণ দিতে রাজি হলেও নানা অজুহাতে কিশোরীকে ফেরত দিচ্ছে না ওই চক্রটি। গত ৪ মাস ধরে পাচার হওয়া মেয়ের নিরাপত্তা ও মান-সম্মানের কথা ভেবে থানায় জিডি করেনি স্বজনরা। তবে মেয়েকে ফিরে পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ছোট পাথাইলহাট গ্রামের হতদরিদ্র জোলেখা খাতুন। এক মেয়ে ও এক ছেলের জননী। জীবিকার তাগিদে ৬ মাস আগে চাকরি নেন আশুলিয়া বাইপাইলের জামগড়া এলাকার একটি গার্মেন্ট ফ্যাকটরিতে। ছেলেমেয়ে নিয়ে ভাড়া থাকতেন জামগড়া চৌরাস্তা এলাকায় বকুল মিয়ার বাসায়। জোলেখা ভোরে চলে যেতেন ডিউটিতে। বাসায় থাকতো কিশোরী মেয়ে আর শিশুছেলে একা। একদিন আসমানীর মা কর্মস্থল থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখেন বাসায় নেই তার কিশোরী মেয়ে। বাসার অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জানতে পারে বোরকাপরা এক মহিলা মেয়েকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে। তারপর বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়ের সন্ধান পাননি। এর মাসখানেক পর একদিন মোবাইলে আসমানি তার বাবা-মা ও মামাকে জানায়, লিপি নামের এক মহিলা দুবাইয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাকে নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি মেয়েটিকে দুবাই নিয়ে গেছে। গত ৪ মাস ধরে মেয়েটিকে চোখে দেখতে পারছি না। আসমানীর মামা রুহুল আমিন জানান, আমার এক চাচাতো ভাই আকমল দুবাই থাকে। আসমানি দুবাই আছে শুনে আমি পাচারকারী ওই লোকটির ফোন নম্বর আমার চাচাতো ভাইকে দিয়ে খোঁজ নিতে বলি। সে খোঁজ নিয়ে জানায়, নম্বরটি দুবাইয়ের নয়, সেটি ভারতের মুম্বইয়ের। পরে ওই নম্বরে পাচারকারী চক্রের সঙ্গে কথা বললে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে আমরা রাজি হলেও তারা বিভিন্ন রকম কথা বলে মেয়ের ক্ষতি হবে এমন হুমকি দেয়। আর মেয়েটির মান সম্মানের ভয়ে থানায় কোন জিডি বা মামলা করিনি আমরা। আসমানীর বাবা আলমগীর হোসেন জানান, একদিন ফোন করে আসমানী আমাকে জানায়, জেলা ফরিদপুরের লিপি নামের এক মহিলা তাকে দুবাই নিয়ে গেছে। সেখানে তার সাথে আরো ৫টি মেয়ে আছে। আমাকে প্রথমে ঢাকায় ইউনিক পার্কের পাশে এক মাদ্রাসা সংলগ্ন ছয়তলা ভবনে রাখে। পরে সেখান থেকে দুবাই নিয়ে গেছে। আমরা পরে জানতে পারি তাকে ভারতে নেয়া হয়েছে। ভারত থেকে সোহাগ নামে এক লোক ফোন করে জানায়, ১৫ হাজার টাকা পাঠান বিকাশে। আপনার মেয়েকে কোনো এক বর্ডার এলাকায় পাঠাবো, আপনারা সেখান থেকে নিয়ে যাবেন। বিকাশ নম্বর চাইলে নানা তালবাহানা করে।