ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো নওয়াজ শরিফের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ করেননি। কোনো দিন পাকিস্তান সফরও করেননি। তবুও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর মনে হয়েছে, তিনি এমন একজনের সঙ্গে কথা বলছেন, যাঁর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের পরিচয় রয়েছে।
গতকাল বুধবার ট্রাম্পকে নিজেই ফোন করেছিলেন নওয়াজ শরিফ। ঠিক কী কথা হয়েছে, ট্রাম্পের দপ্তর থেকে সে বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি, শুধু জানানো হয়েছে, অভিনন্দন জানাতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফোন করেছিলেন। নওয়াজ নিজে তাঁর ফেসবুক পাতায় সে কথোপকথনের পুরো বিবরণ তুলে দিয়েছেন। ট্রাম্প যা বলেছেন, বাংলা করলে তা দাঁড়ায় এ রকম:
‘আপনার খুব সুনাম রয়েছে। চমৎকার মানুষ আপনি। অসাধারণ কাজ করে চলেছেন আপনি, যা সবদিক দিয়েই স্পষ্ট। শিগগিরই আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে, আমি সেদিকে তাকিয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রী, আপনার সঙ্গে এই কথোপকথনের সময় মনে হচ্ছে, আপনি এমন একজন মানুষ, যাকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। আপনার দেশ অসাধারণ, তার সম্ভাবনাও বিপুল। পাকিস্তানিরা অত্যন্ত ধীমান হিসেবে পরিচিত। যেসব সমস্যার এখনো সমাধান হয়নি, তা সমাধানে আপনি আমাকে যে ভূমিকা নিতে বলেন, আমি তার জন্য প্রস্তুত। সেটা হবে অত্যন্ত গর্বের একটা ব্যাপার, আমি ব্যক্তিগতভাবে সে দায়িত্ব পালন করব। ২০ জানুয়ারির আগে, অর্থাৎ ক্ষমতা গ্রহণের আগে যেকোনো সময় আমাকে ফোন করতে দ্বিধা করবেন না।’
নওয়াজ শরিফ কী কথা বলেছেন, তা অবশ্য জানা যায়নি। ট্রাম্পের ভাষার সঙ্গে যাঁরা পরিচিত, তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, এসব কথাবার্তা নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের ইংরেজি ভাষাজ্ঞান একজন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রের বেশি নয়।
ইতিপূর্বে ট্রাম্প যেভাবে ও যে ভাষায় পাকিস্তানকে আক্রমণ করেছিলেন, তার সঙ্গে বুধবারের ট্রাম্প একদম ভিন্ন। ২০১২ সালে এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান আমেরিকার বন্ধু নয়। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিয়েছি, তার বদলে কী পেয়েছি? শুধু বিশ্বাসঘাতকতা ও অসম্মান—এবং আরও অনেক কিছু।’
ভারতের ব্যাপারে তাঁর আগ্রহ ট্রাম্প কখনো গোপন করেননি। পাকিস্তানে ট্রাম্পের নামাঙ্কিত কোনো ভবন না থাকলে ভারতে সে রকম পাঁচটি ভবন বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে। ভারতীয় আমেরিকানদের দলে ভেড়াতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প নিজেকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুকরণ করে হিন্দিতে বলেছিলেন, ‘আব কি বার, ট্রাম্প সরকার।’