মুশফিকুর রহিম সরাসরিই বললেন, ‘নিজেদের প্রমাণ করার অনেক কিছু ছিল।’ সেই প্রমাণ তারা করলেন। টানা ছয় ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে বরিশাল বুলস। রাজশাহী কিংসকে হারিয়েছে ১৭ রানে। এই জয়ে অবশেষে হয়তো বিতর্ককে একপাশে সরিয়ে রাখতে পারল বরিশাল।
মুশফিকদের জয়ে অবশ্য চিন্তা বেড়েছে রাজশাহীর। টানা দুই ম্যাচ হেরে প্লে-অফের হিসাবটা কঠিন হয়ে গেছে তাদের। যদিও ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় চারেই আছে রাজশাহী। তবে তাদের ম্যাচ বাকি আছে আর একটি। আর ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলা রংপুর রাইডার্সের এখনো ম্যাচ বাকি দুটি।
ঢাকায় ফেরার পর প্রায় প্রতিদিনই লো স্কোরিং ম্যাচ দেখেছে বিপিএল। বরিশালের দেওয়া ১৬১ রান তাই বিশাল বাধা হয়ে গেছে রাজশাহীর। সামিত প্যাটেলের ৫১ বলে ৬১ রান যা একটু আশা জুগিয়েছে তাদের।
১২ বলে ৩৩ রানের সমীকরণটা কঠিন হলেও অসম্ভব ছিল না রাজশাহীর। প্যাটেল তখনো উইকেটে। কিন্তু পেসার রায়াদ এমরিতের করা ১৯তম ওভারেই সব আশা শেষ হয়ে যায় রাজশাহীর। ৩ বলের মধ্যেই ফিরে যান প্যাটেল ও ফরহাদ রেজা। এর আগে এমরিতের শিকার হয়েছেন সাব্বির রহমানও। রাজশাহীর ‘আইকন’ খেলোয়াড় কাল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে আউট হয়েছেন ৮ রানে, কালও তাই। সাব্বিরের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সের প্রভাব যেন পড়েছে পুরো দলেই।
ফজলে মাহমুদ তাঁর ক্যারিয়ারের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেললেন। নিজের বিপিএল-অভিষেকে আউট হয়েছেন শূন্য রানে। কাল রাজশাহীর বিপক্ষেও ফজলের শুরুটা হয়েছে নড়বড়ে। তবে দ্রুত জড়তা কাটিয়ে ব্যাটিংয়ে স্বচ্ছন্দ হয়েছেন বরিশালের এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ডেভিড ম্যালানের সঙ্গে গড়েছেন দারুণ এক জুটি।
ম্যালান-ফজলের সুবাদেই রাজশাহী পেয়েছে ১৬২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর। দুজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৭১ বলে ১০০ রানই তাদের ইনিংসের উজ্জ্বলতম দিক। মেহেদী হাসান মিরাজের ষষ্ঠ ওভারে দুইবার ক্যাচ তুলে দিয়েও বেঁচে গেছেন ফজলে। ৬ ও ১২ রানে ‘জীবন’ পাওয়া বরিশালের ব্যাটসম্যান করেছেন ৪৩ বলে ৪৩ রানে। রাজশাহীর বোলারদের ওপর সবচেয়ে বেশি চড়াও হয়েছেন ম্যালান। ইংলিশ ওপেনার করেছেন ৩৩ বলে ৫৬ রান। তবে ম্যালান যেভাবে রান আউট হয়েছেন, সেটি ছিল বেশ দৃষ্টিকটু।
কুমিল্লার মতোই এখন মুশফিকদের জয় মানে বরিশাল-সমর্থকদের আফসোস। জিততে থাকা দলটা মাঝে খেই না হারিয়ে ফেললে টুর্নামেন্টে তাদের গল্পটা অন্যরকম হতেই পারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল বুলস: ২০ ওভারে ১৬১/৪ (মেন্ডিস ৬, ম্যালান ৫৬, ফজলে ৪৩, মুশফিক ৮, পেরেরা ২৯*, শাহরিয়ার ১৬*; সামি ১/১৬, মিরাজ ১/৩৪, ফরহাদ ১/৩২, স্যামি ০/২৮, ফ্র্যাঙ্কলিন ০/২১, নাজমুল ০/২১, প্যাটেল ০/৭)।
রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১৪৪/৭ (মুমিনুল ১৬, নুরুল ১২, সাব্বির ৮, প্যাটেল ৬২, রকিবুল ৯, ফ্র্যাঙ্কলিন ১৮, স্যামি ১১*, ফরহাদ ৪, মিরাজ ০*; তাইজুল ০/২৯, কামরুল ১/২৭, মনির ১/১৭, এমরিত ৩/২৭, এনামুল ১/৬, পেরেরা ১/৩৫)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রায়াদ এমরিত।
ফল: বরিশাল বুলস ১৭ রানে জয়ী।