রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মুখে পালাতে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টার খবর সত্য নয় বলে দাবি করেছে মিয়ানমার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদপত্র গ্লোবাল নিউ লাইট শনিবার এ দাবি করেছে। তারা বলছে, সদ্য গঠিত একটি টাস্কফোর্স এ খবরের সত্যতা পায়নি।
“মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রায় ২০০ মানুষ গতকাল বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের হাতে আটক হওয়ার পর ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে রয়টার্সের খবর মিথ্যা বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।”
গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে শুরু হয় সেনা অভিযান।
এরপর সহিংসতায় ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে ৬৯ জনকে সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী বলেছে তারা।
দমন অভিযানের মুখে পালাতে থাকা রোহিঙ্গাদের অনেকে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টার প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি সীমান্তে বাড়তি বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকারী অনেককে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা জানিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।
রয়টার্স বলছে, সপ্তাহখানেক আগে সহিংসতা তীব্র হলে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উদ্দেশে পাড়ি জমায় বলে সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
এর আগে ২০১২ সালে রাখাইনে বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে ভয়াবহ দাঙ্গার পরও অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে।
ওই দাঙ্গার পর এবারই রাখাইন রাজ্যে সবচেয়ে মারাত্মক রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটছে বলে রয়টার্সের ভাষ্য। পলায়নরত রোহিঙ্গাদের গুলি করা হচ্ছে বলেও তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা রয়টার্সকে বলেন, “স্থানীয়রা আমাকে বলেছে, নদীর পাড়ে প্রায় ৭২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সেনাবাহিনী নদীর পাড়ে অপেক্ষারতদের ভিড়ের মধ্যে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।”
এ প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খোলা রাখতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
সংস্থাটির মুখপাত্র আড্রিয়ান এডওয়ার্ডস শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও আবেদন জানাচ্ছি মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের সীমান্ত খোলা রাখা এবং সেখানে সংহিসতার মুখে পালিয়ে আসা বেসামরিক মানুষদের নিরাপদে ঢুকতে দেওয়ার জন্য।”