নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাচ্ছেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। প্রথম দিকে নির্বাচনে আগ্রহী না হলেও তাকেই মেয়র প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে দলের হাইকমান্ড। দু-এক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন ঘোষণা করা হতে পারে বলে দলের একাধিক সূত্র জানায়।
এদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করার পরও বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বিলম্ব হওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা। এ নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। সূত্র জানায়, প্রথম দিকে তৈমূর আলম নির্বাচনে আগ্রহী না হলেও বর্তমানে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তাই মনোনয়নের বিষয়ে বিএনপি হাইকমান্ড নতুন করে ভাবছে।
বিএনপির এক নেতা জানান, তৈমূর আলম খন্দকারকে নিয়ে দলের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলের পর তৈমূর আলম বলেছিলেন, তাকে যেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতিই রাখা হয়। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকতে চান না। তবে দলের হাইকমান্ড এবার তাকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা করেছে। এর কিছুদিন পর তিনি নারায়ণগঞ্জ এলাকায় বলেছেন, উপদেষ্টা থেকে পদত্যাগ করেছেন। আবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন যেখানে রাখবেন সেখানেই থাকবেন। এ ছাড়া গত মেয়র নির্বাচনের শেষ সময় বিএনপি বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় তিনি মনোক্ষুণ্ন হন।
শুক্রবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর, থানা পর্যায়ের নেতা ও সাবেক এমপিসহ ৯ জনের সঙ্গে তার গুলশান কার্যালয়ে কথা বলেছেন। তারা নির্বাচন প্রসঙ্গে বিস্তারিত খালেদা জিয়াকে জানিয়েছেন।
দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় একাধিক নেতার নাম থাকলেও ঘুরেফিরে তৈমূর আলম খন্দকারের নাম আসছে। মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে এ ছাড়া সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ও নারায়ণগঞ্জ বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের নাম শোনা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমকালকে বলেন, নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি কী তা শুক্রবার নেত্রীকে জানিয়ে এসেছি। নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। তাহলে নির্বাচন করে লাভ কী?
নির্বাচন তো লোক দেখানো বা পত্রিকার শিরোনাম হওয়ার জন্য নয়। লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে নির্বাচনে অংশ নিয়ে লাভ নেই। তবে দলীয় চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্ত শিরোধার্য। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তা সবাইকে মানতে হবে।
কী করলে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তৈমূর বলেন, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকলেই হবে। গত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে একই অপরাধে আমাকে শোকজ করা হলেও অন্য দুই মেয়র প্রার্থীকে কিছুই করা হয়নি।’ তিনি বলেন, আমরা আজ (গতকাল) রাতে স্থানীয়ভাবে নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রকে জানাব। আশা করা যায়, রোববার (আজ) প্রার্থী ঘোষণা হতে পারে।
এদিকে বিএনপি থেকে মেয়র পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, দল এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। রোববার প্রার্থী ঘোষণা হতে পারে।