সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, রাজনৈতিক দলর ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠন ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে আগামীতে সুষ্ঠু একটি নির্বাচন হওয়া জরুরি। নির্বাচন কমিশন, বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ওপর রাজনৈতিক দলসমূহের যে আস্থার অভাব রয়েছে তা দূর করা প্রয়োজন। আমাদের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ভারতের নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বেশি হলেও আমরা ভারতের মতো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারছি না। আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য ভাল একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হলে এখনই কার্যক্রম শুরু করতে হবে। শনিবার সকালে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টে বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
এসময় তিনি আরো বলেন, লোক দেখানো সার্চ কমিটি গঠন না করে, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও উপযুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য অনেক যোগ্য ও দক্ষ লোক রয়েছে; তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন , নেপাল ও পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনও আমাদের চাইতে ভালো নির্বাচন আয়োজন করে আসছে। সাংবিধানিক নির্দেশনার আলোকে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইনী-কাঠামো থাকা খুবই জরুরি। তাহলে কমিশন গঠন নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক কমে আসবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সবদলের অংশগ্রহণে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হোক, যে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন না উঠুক যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সকল দল ও জনগণের প্রত্যাশা। আগামী জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে এলেও নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে তার সুষ্ঠু সমাধান এখনও হয়নি। সেই লক্ষ্যে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন পুন:গঠন করে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করা আওয়ামীলীগ সরকারের জন্য এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, একা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন। প্রার্থী, ভোটার, গণমাধ্যমসহ সুশীল সমাজকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করতে হয়। প্রশাসনকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের পথ তৈরি করতে হয়। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন একতরফাভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়ায় যে বিরোধী দল আমরা সংসদে দেখতে পাচ্ছি সেই দল দেশে-বিদেশে সর্বোত্র গুরুত্বহীন হয়ে উঠছে। তার সর্বশেষ প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ন্ত্রী জন কেরি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে সংসদে বিরোধী দলের সাথে কোনো স্বাক্ষাত না দেয়া।
সুষ্ঠু নির্বাচন শীর্ষক উক্ত মক পার্লামেন্টে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজিকে পরাজিত করে প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রণকারীদের মধ্যে ক্রেষ্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, ড. এ এস এম সোলায়মান ও মেহেদী হাসান তামিম।