জেলার ভূরুঙ্গামারী কলেজের ১৯ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণের টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রমাণিত হওয়ায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার মো. ওয়াহেদুন্নবী সাগর ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাকিব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কমিটি বিলুপ্তের ঘোষণা দেয়া হয়।
ভূরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আবু তাহের নাঈম, আবু শাহীন, হাফিজুর রহমান, মাসুদ রানা, আরিফুল ইসলামসহ ১৯ জন লিখিত অভিযোগে জানান, তারা সবাই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে জন প্রতি দুই হাজার ২শ টাকা দিতে হয়। ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান (খলিল) অল্প টাকায় ফরমপূরণ করে দেয়ার নাম করে তাদের কাছে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর ফরমপূরণ না করে তালবাহানা করা হয়। পরে আমরা কলেজে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমাদের ফরম পূরণ হয়নি এবং আর সময়ও নেই।
আমরা ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক হওয়ার পরও উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাদের প্রতারণার কারণে জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
রোববার কমিটি বিলুপ্তের পত্র হাতে পাওয়ার কথা স্বীকার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম।
খলিলুর রহমান শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাতের কথা অস্বীকার করে বলেন, ১৯ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীর এইচএসসি ফরম পূরণের টাকা নেয়া হয়। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে সময়মতো ফরম পূরণের কাজ করা সম্ভব হয়নি।
ভূরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মুকুল চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বোর্ড কন্ট্রোলারের কাছ থেকে অতিরিক্ত সাতদিন সময় নেয়ার পরও অভিযুক্ত খলিল শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র ও টাকা জমা না দেয়ায় ১৯ জনের ফরম পূরণ হয়নি। ফরম পূরণের শেষ সময়সীমা ৩ জানুয়ারি হলেও বিশেষ অনুমতি নিয়ে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করি। শুধুমাত্র বোর্ডের খরচ ২০ হাজার টাকা দিলে তাদের ফরম পূরণ করা যেত। দুঃখের বিষয় এসব শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে ঝরে গেল একটি বছর।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাকিব বলেন, সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ড, অনিয়ম-দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অধিকাংশ নেতা জড়িত মর্মে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। এছাড়া ১২ সালে গঠিত এ কমিটি অনেক আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। খুব শীঘ্রই ভুরুঙ্গামারীতে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।